নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যে নতুন মাত্রা দিয়ে প্রয়াত মুখার্জি কমিশনের প্রধান

মুখার্জি কমিশনের পর্যবেক্ষণকে মান্যতা দেয়নি তৎকালীন মনমোহন সরকার।

নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যে নতুন মাত্রা দিয়ে প্রয়াত মুখার্জি কমিশনের প্রধান
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 18, 2021 | 5:54 PM

কলকাতা: নেতাজি ঠিক দেশে ফিরে আসবেন, স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে অনেকেই এই ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন। বাংলা তো বটেই সুভাষচন্দ্র বোসের জনপ্রিয়তা সারা দেশজুড়ে। নেতাজি নামের আবেগ স্বাধীনতার সাত দশক পরেও অমলিন। বাংলার ঘরে ঘরে নেতাজিই স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, লড়াই করে ভারতের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছেন সুভাষচন্দ্র বোসই। কিন্তু এতকিছুর পরেও তাঁর অন্তর্ধান এখনও রহস্য। দেশ-বিদেশে একাধিক কমিশন তৈরি হলেও অকাট্য যুক্তি খাড়া করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও অধরা। নেতাজি সংক্রান্ত একাধিক ফাইল আজও অপ্রকাশিত। নেতাজিই তো সব সময় প্রাসঙ্গিক, কিন্তু তাঁর অন্তর্ধান রহস্য এই সময় আরও বেশি প্রাসঙ্গিক কারণ প্রয়াত হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনোজ কুমার মুখোপাধ্যায়। তাঁরই নেতৃত্বের নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যের তদন্ত করেছিল মুখার্জি কমিশন।

নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য় নিয়ে দেশে একাধিক তদন্তকারী কমিশন গঠিত হয়েছে। তার মধ্যে কার্যত শেষ তদন্তকারী কমিশন ছিল মুখার্জি কমিশন। আগের খোসলা কমিশন ও শাহনওয়াজ কমিশন জানিয়েছিল তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস। কিন্তু সেই দাবি নস্যাৎ করে দেয় মুখার্জি কমিশন। মনোজ কুমার মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কমিশন দাবি করে, রেনকোজি মন্দিরের যে চিতাভস্ম সুভাষ চন্দ্র বসের বলে প্রচার করা হয় তা আসলে এক জাপানি সৈনিকের। পাশাপাশি তদন্তে জানা যায়, যে তারিখে তাইপেইতে বিমান দুর্ঘটনার কথা বলা হয়েছে, সে দিন কোনও বিমান দুর্ঘটনা হয়নি বলেই জানিয়েছে তাইপেই সরকার।

১৯৯৯ সালে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যের তদন্তে মুখার্জি কমিশন বিভিন্ন দেশের শতাধিক ফাইল পর্যালোচনা করেছিল এবং জাপান, রাশিয়া ও তাইওয়ান সফর করেছিল। যদিও মুখার্জি কমিশনের পর্যবেক্ষণকে মান্যতা দেয়নি তৎকালীন মনমোহন সরকার। ২০০৫ সালে ৮ নভেম্বর মুখার্জি কমিশন এই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করে। সংসদে ২০০৬ সালের ১৭ মে আলোচনা হওয়ার পর তা খারিজ হয়ে যায়।

তবে এটা ঠিক যে নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য একটা অন্যভাবে ভাবতে দেখিয়েছিল মুখার্জি কমিশন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনোজ কুমার মুখোপাধ্যায় ব্যক্তিগত পরিসরে একাধিকবার এই বিষয়ে মুখ খুললেও সংসদে খারিজ হয়ে যাওয়া রিপোর্টের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিশেষ কিছু জানাননি। তবে ব্যক্তিগত পরিসরে তিনি জানিয়েছিলেন, আলোচিত ‘গুমনামি বাবা’কেই নেতাজি বলে বিশ্বাস করেন তিনি। এমনটাই শোনা যায় বিশেষজ্ঞদের মারফত। তাঁর মৃত্যুতে নেতাজি সম্পর্কে একাধিক পর্যবেক্ষণ মুছে গেল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। বম্বে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হয়েছেন ও পরবর্তীকালে তাঁর নাম প্রধান বিচারপতির জন্যও প্রস্তাবিত হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার বাতিল রাহুলের, কী বললেন বাকি নেতাদের?