Lakhimpur Case Update: ‘আশানুরূপ গতিতে এগোচ্ছে না তদন্ত’, ফরেন্সিক রিপোর্ট না পেয়ে ফের অসন্তুষ্ট শীর্ষ আদালত
SUpreme Court on Lakhimpur Case: লখিমপুর কাণ্ডে কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে গণপিটুনিতে এক সাংবাদিক সহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এক হয়ে যাচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে।
নয়া দিল্লি: লখিমপুর কাণ্ডের (Lakhimpur Violence) তদন্ত নিয়ে ফের অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এই নিয়ে তৃতীয়বার গোটা ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে উত্তর প্রদেশ পুলিশ(Uttar Pradesh Police)-র উপর অসন্তোষ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে এ দিনের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হল, গোটা মামলার নিত্যদিনের তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখতে তারা কোনও হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়োগ করতে চান।
সোমবার মামলার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ (NV Ramana), বিচারপতি সূর্যকান্ত (Surya Kant) ও বিচারপতি হিমা কোহলি(Hima Kohli)-র বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “আমরা যা আশা করেছিলাম, সেই গতিতে এগোচ্ছে না তদন্ত।” লখিমপুর কাণ্ডে কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার যে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল, তার ফরেন্সিক রিপোর্ট এখনও জমা না পড়ায় এবং অভিযুক্তদের মোবাইল এখনও বাজেয়াপ্ত না করা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
এ দিনের শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, তদন্তের গতিপ্রকৃতির উপর নিয়মিত নজর রাখার জন্য কোনও একটি হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়োগ করতে আগ্রহী তারা। এই বিষয়ে উত্তর প্রদেশ সরকারের কী মতামত, তা আগামী শুক্রবার পরবর্তী শুনানির সময় জানাতে বলা হয়েছে। লখিমপুর কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানোয়, শীর্ষ আদালতের তরফে কড়া ভাষায় জানানো হয়, সিবিআই তদন্তই সব মামলার সমাধান নয়।
লখিমপুর কাণ্ডে কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে গণপিটুনিতে এক সাংবাদিক সহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত এক হয়ে যাচ্ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। যদিও উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে হাজির আইনজীবী হরিশ সালভে জানান, দুটি মামলার তদন্ত আলাদাভাবে হচ্ছে, একটি অপরটির সঙ্গে কোনওভাবে মিশে যাচ্ছে না। জবাবে শীর্, আদালতের তরফে জানানো হয়, তদন্তে নিরপেরক্ষা ও স্বচ্ছতা আনার প্রয়োজন রয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর লখিমপুর কাণ্ডের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এতজন প্রত্যক্ষদর্শী থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৩কে কেন সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়েছে। জবাবে উত্তর প্রদেশ সরকার পক্ষের আইনজীবী হরিশ সালভে বলেছিলেন, “৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে এবং ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে দাবি করেছেন।”
এদিন মামলার রিপোর্ট যাচাই করে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “আমরা স্টেটাস রিপোর্ট দেখেছি, এতে নতুন কিছুই নেই। শেষ শুনানির সময় আমরা ১০ দিনের সময় দিয়েছিলাম, তারপরও ল্যাবের রিপোর্ট আসেনি। আমরা যেরকম আশা করেছিলাম, সেই গতিতে এগোচ্ছে না মামলা।”
উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে হাজির আইনজীবী হরিশ সালভে জানান, আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ফরেন্সিক ল্যাব থেকে রিপোর্ট এসে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ” বাকি বিষয়গুলির কী হবে?” । বিচারপতি হিমা কোহলিও প্রশ্ন তোলেন, “একমাত্র একজন অভিযুক্তের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, বাকিদের ফোনের কী হল? একমাত্র একজনের কাছেই কি মোবাইল ফোন ছিল?”
জবাবে আইনজীবী হরিশ সালভে জানান, একাধিক অভিযুক্ত জানিয়েছেন যে তাদের কাছে মোবাইল ফোন ছিল না, তবে তাদের কল রেকর্ড উদ্ধার করা হয়েছে এবং ফোনের লোকেশনও ট্রেস করা হয়েছে। বিচারপতি হিমা কোহলি প্রশ্ন করেন, “স্টেটাস রিপোর্টে আপনারা কোথায় বলেছেন যে অভিযুক্তরা তাদের মোবাইল ফোন ফেলে দিয়েছিল এবং তাদের কল রেকর্ড বের করা হয়েছে?” । বিচারপতি সূর্যকান্তও জানতে চান, আন্দোলনকারী কৃষকদের গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা এবং গণপিটুনিতে চারজনের মৃত্যুর মামলাকে একযোগ করে নির্দিষ্ট কোনও অভিযুক্তকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে কিনা?
জবাবে হরিশ সালভে জানান, দুটি মামলারই তদন্ত আলাদাভাবে করা হচ্ছে। কয়েকজন সাক্ষী বয়ানে একটি গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনার সঙ্গেই পরবর্তী ঘটনারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: ধর্মান্তকরণ মামলায় ১৬ জনকে গ্রেফতার করল উত্তর প্রদেশ পুলিশের জঙ্গি দমন শাখা