Madhya Pradesh dinosaur eggs: কয়েক শতাব্দী ধরে ডাইনোসরের ডিমের পুজো হত ভারতের এই গ্রামে!
Madhya Pradesh dinosaur eggs: নর্মদা উপত্যকা অঞ্চলে, ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবারের মতো অনেক পরিবারেই একই ধরনের গোলাকার পাথরের মতো বস্তু রয়েছে। সকলেই গোলাকার বস্তুগুলিকে পারিবারিক দেবতা বা গ্রামের কূলদেবতা হিসাবে পুজো করে। দিন পনেরো আগে, এই অঞ্চলে লখনউ থেকে বিজ্ঞানীদের একটি দল এসেছিলেন। ওই গোলাকার পাথরের মতো বস্তুগুলি তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন।
ভোপাল: কয়েক শতাব্দী ধরে মধ্য প্রদেশের ধার জেলার পাদলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবার হাতের তালুর মাপের কয়েকটি গোলাকার ‘পাথর’ পুজো করত। চাষের জমি কুঁড়তে গিয়ে ওই পাথরের মতো বস্তুগুলি পেয়েছিলেন ভেস্তা মন্ডলোই-এর পূর্বপুরুষরা। সেই থেকে কয়েক শতাব্দী ধরে ওই গোলাকার বস্তুগুলিকে ‘কাঁকর ভৈরব’ বা মাটির দেবতা হিসেবে পুজো করত তার বাপ-ঠাকুর্দারা। সেই সময় তাঁদের বাড়িতে এই প্রথা চলে আসছে। শুধু ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবারই নয়, আশপাশের বহু মানুষই মনে প্রাণে বিশ্বাস করত, ওই ‘দেবতা’রা তাঁদের চাষাবাদ এবং গবাদি পশুর রক্ষা করে, প্রতিটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করে। কিন্তু, লখনউয়ের কয়েকজন বিজ্ঞানী সেখানে আসার পরই শতাব্দী প্রাচীন এই ধারণা ভেঙে গেল। জানা গেল, এত বছর ধরে যে পাথরের মতো বস্তুগুলিকে তারা দেবতাজ্ঞানে পুজো করে আসছেন, সেগুলি আসলে ডাইনোসরের ডিম!
নর্মদা উপত্যকা অঞ্চলে, ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবারের মতো অনেক পরিবারেই একই ধরনের গোলাকার পাথরের মতো বস্তু রয়েছে। সকলেই গোলাকার বস্তুগুলিকে পারিবারিক দেবতা বা গ্রামের কূলদেবতা হিসাবে পুজো করে। দিন পনেরো আগে, এই অঞ্চলে লখনউয়ের ‘বীরবল সাহানি ইনস্টিটিউট অব প্যালিওসায়েন্স’ থেকে বিজ্ঞানীদের একটি দল এসেছিলেন। ওই গোলাকার পাথরের মতো বস্তুগুলি তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন। আর সেই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাতেই প্রমাণ হয়েছে, সেগুলি আসলে ডাইনোসরের ডিম। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে টাইটানোসরাসের ডিম। লক্ষ লক্ষ বছর আগে সেগুলি পাথরের মতো জীবাশ্মে পরিণত হয়েছিল। সেগুলিই মাটি খুঁড়ে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।
বস্তুত, শুধু পদালিয়া গ্রাম নয়, গোটা ধার জেলাই ডাইনোসরের ডিম পাওয়ার জন্য পরিচিত। অতীতেও এখান থেকে অন্তত ২৫৬টি ডাইনোসরের ডিম পাওয়া গিয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে অনুসন্ধান চালান বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে জুরাসিক যুগে, মধ্য প্রদেশের নর্মদা উপত্যকা এলাকা ছিল টাইটানোসরাসের ডিম পাড়ার জায়গা। প্রায় ৬৫ কোটি বছর আগে এই অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত বিশালাকৃতির টাইটানোসরাসরা।
এই এলাকায় এমন অনেক ডাইনোসরের ডিম এদিক-ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। গ্রামবাসীরা মাঝেমধ্যেই চাষ করতে গিয়ে, সেই সব ডিমের সন্ধান পান। তবে, সেগুলি সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এলাকাটি সংরক্ষণে এখনও পর্যন্ত কোনও দৃঢ় পদক্ষেপ করা হয়নি। অথচ, ২০১১ সালেই এলাকাটিকে একটি জীবাশ্ম পার্ক হিসেবে শংসায়িত করা হয়েছিল। তবে, কাঁকড় বৈরব আসলে ডাইনোসরের ডিম বলে জানার পর, বন বিভাগের পক্ষ থেকে এলাকাটি ঘেরা হয়েছে।