Monkey fever: আতঙ্কের নয়া নাম ‘মাঙ্কি ফিভার’! কর্নাটকে প্রাণ কাড়ল ২ জনের

Monkey fever: কায়াসানুর ফরেস্ট ডিজিজ, এক ভাইরাস ঘটিত রোগ। এই ভাইরাস 'ফ্লাভিভিরিডা' ভাইরাস পরিবারের এক সদস্য। পিত জ্বর এবং ডেঙ্গির ভাইরাসও এই একই ভাইরাল পরিবারের। ১৯৫৭ সালে সালে কর্নাটকের কায়সানুরের ঘন জঙ্গল থেকেই এই রোগের উদ্ভব ঘটেছিল। তারপর থেকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে এই রোগ মহামারি ডেকে এনেছে।

Monkey fever: আতঙ্কের নয়া নাম 'মাঙ্কি ফিভার'! কর্নাটকে প্রাণ কাড়ল ২ জনের
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Feb 06, 2024 | 11:38 PM

বেঙ্গালুরু: কর্নাটকে নয়া আতঙ্ক, ‘মাঙ্কি ফিভার’ বা ‘বানর জ্বর’। যার পোশাকি নাম, কায়াসানুর ফরেস্ট ডিজিজ বা কেএফডি (KFT) মারাত্মক এই রোগে দক্ষিণী এই রাজ্যে ইতিমধ্যেই দুই ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। রাজ্য জুড়ে আরও ৫০ জন ‘বানর জ্বরে’ সংক্রামিত হয়েছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। ‘বানর জ্বরে’ মস্তিষ্কের ক্ষতি, বমি এবং নাক থেকে রক্তপাত হয়ে থাকে। রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতির অত্যন্ত গুরুতর। বানর জ্বরের ক্রমবর্ধমান রোগীর মধ্যে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এক বিশেষ বৈঠক করেছে। রোগের বিস্তার কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তার প্রস্তুতির মূল্যায়ন করা হয়েছে সেই সভায়।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, কর্নাটকে প্রথম এই রোগে মৃত্যু হয়েছে এক ১৮ বছরের তরুণীর। দ্বিতীয় প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটেছে উদুপি জেলায়। চিক্কামাগালুরুর শৃঙ্গেরি মহকুমায় এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৭৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তির। বানর জ্বরের যে ৫০টি পজিটিভ কেস শনাক্ত করা গিয়েছে, সেগুলির বেশিরভাগই উত্তরা কানাড়া জেলার। ৩৪ জন সংক্রামিতের রিপোর্ট করা হয়েছে শুধুমাত্র এই জেলা থেকেই। এছাড়া, শিবমোগা (১২) এবং চিক্কামাগালুরু (৪) জেলা থেকেও বেশ কিছু সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে।

কায়াসানুর ফরেস্ট ডিজিজ, এক ভাইরাস ঘটিত রোগ। এই ভাইরাস ‘ফ্লাভিভিরিডা’ ভাইরাস পরিবারের এক সদস্য। পিত জ্বর এবং ডেঙ্গির ভাইরাসও এই একই ভাইরাল পরিবারের। ১৯৫৭ সালে সালে কর্নাটকের কায়সানুরের ঘন জঙ্গল থেকেই এই রোগের উদ্ভব ঘটেছিল। তারপর থেকে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অংশে এই রোগ মহামারি ডেকে এনেছে। প্রাথমিকভাবে এই রোগ ‘টিক’ বা এক ধরনের পোকার কামড় থেকে ছড়ায়। এই পোকা যখন সংক্রামিত প্রাণীদের রক্ত খায়, তখন তাদের দেহের মাধ্যমে প্রধানত বানরের মতো প্রাণীদের থেকে তা মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। কাজেই, বনাঞ্চলে যেখানে এই পোকার সংখ্যা বেশি, সেই সব এলাকায় যে সকল মানুষ কাজ করেন, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

সেন্ট্রাল কোস্টাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুসারে, সাধারণত টিক কামড়ানোর ৩ থেকে ৮ দিন পরে মাঙ্কি ফিভারের লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়। কী কী লক্ষণ দেখা যায়? রয়েছে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, নাক থেকে রক্তপাত, পেশীতে ব্যথা, দুর্বলতা এবং বমি বমি ভাব, বমি এবং ডায়রিয়ার মতো পেটের রোগ। রোগীদের রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। পাশাপাশি কমতে পারে লোহিত এবং শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা। সংক্রমণের মাত্রা গুরুতর হলে, এর থেকে এনসেফালাইটিস, হেপাটাইটিস এবং মাল্টি-অর্গান ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে।

১৯৫৭ সালের পর থেকে প্রতি বছরই গড়ে ৫০০ জন এই রোগে আক্রান্ত হন। তাঁদের অধিকাংশই বনাঞ্চলে কাজ করেন। তবে, এইবারের মতো দ্রুত হারে এই রোগ ছড়াতে আগে দেখা যায়নি। বন-জঙ্গল কেটে সাফ করার ফলেই, এই রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উত্তরা কন্নড় জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আপাতত সেখানকার বাসিন্দাদের বনাঞ্চলে প্রবেশ না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। একান্তই জঙ্গলে যেতে হলে, দেহের উন্মুক্ত অংশে পোকা প্রতিরোধকারী তেল মাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফিরে এসে, সেই অংশগুলি ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এর পাশাপাশি, গ্রামে গ্রামে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে।

আমেরিকার সিডিসির মতে, অনেক রোগীই এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে কোনও জটিলতা ছাড়াই সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু, ১০ থেকে ২০ শতাংশ রোগীর শরীরে ফের লক্ষণগুলি ফিরে আসে। আক্রান্তদের দশজনের মধ্যে একজনের মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।