মরদেহের সঙ্গে সঙ্গম! কীসের স্বাদ নিতে পাগলের মতো মরদেহের সন্ধানে থাকে ন্যাক্রোফিলিকরা?

Necrophilia: মরদেহের সঙ্গে যৌনতা, সঙ্গমের প্রবণতা রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে। এশিয়া - ইউরোপ থেকে আফ্রিকা - সর্বত্র মরদেহকে বিকৃত করার প্রবণতা। এসব ঘটনা কোথায় হচ্ছে? এককথায় বলতে গেলে - সবজায়গায়। কখনও যুদ্ধক্ষেত্রে, কখনও গোষ্ঠী সংঘর্ষে এমনকি পরিবারের মধ্যে।

মরদেহের সঙ্গে সঙ্গম! কীসের স্বাদ নিতে পাগলের মতো মরদেহের সন্ধানে থাকে ন্যাক্রোফিলিকরা?
প্রতীকী চিত্র।Image Credit source: RichLegg/E+/Getty Images
Follow Us:
| Updated on: Jan 09, 2025 | 7:47 PM

দুনিয়ার সব দেশের রাষ্ট্রনেতাকে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। দাবি হিলার বডি নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার। কোন কৃতকর্ম? কীসের ক্ষমা? হিলার বডি’র বক্তব্য মৃতদেহের প্রাপ্য সম্মান ও সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ দুনিয়ার অধিকাংশ দেশ। এর দায় নিয়েই মৃত ব্যক্তিদের কাছে, তাঁদের পরিবারের কাছে ক্ষমা রাষ্ট্রপ্রধানদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।

বিভিন্ন দেশে মৃতদেহের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে কাজকর্ম করে এই হিলার বডি। গত পাঁচ দশক ধরে ওরা এই কাজ করছে। সদর দফতর ভিয়েনায়।  হিলার বডির বক্তব্য, গত দুই দশকে যে মরদেহের উপর ঘৃণ্য অপরাধ হয়েছে। অবমাননা, অপমান হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি। কী রকম অপমান? হিলার বডির দাবি, মরদেহের সঙ্গে যৌনতা, সঙ্গমের প্রবণতা রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে। এশিয়া – ইউরোপ থেকে আফ্রিকা – সর্বত্র মরদেহকে বিকৃত করার প্রবণতা। এসব ঘটনা কোথায় হচ্ছে? এককথায় বলতে গেলে – সবজায়গায়। কখনও যুদ্ধক্ষেত্রে, কখনও গোষ্ঠী সংঘর্ষে এমনকি পরিবারের মধ্যে।

শবকাম বা নেক্রোফিলিয়া নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু হিলার বডি প্রতিবেদনে যে দাবি করা হচ্ছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। প্রথমত, গত দুই দশকে মরদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ঘটনা বহু গুণ বেড়েছে। ১০ বছরে প্রায় ৯০০ শতাংশ বৃদ্ধি। কবর থেকে দেহ তুলে, মর্গে ঢুকে এমনকী মৃত্যুর পর দেহ বাড়িতে রেখেই যৌন ক্ষিদে মেটাচ্ছেন কিছু মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা, দেশ, জাতি, ধর্মে নির্বিশেষে এই প্রবণতা স্পষ্ট।

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধক্ষেত্রে শক্রর মরদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, মরদেহকে বিকৃত করার ঘটনাও অনেকটা বেড়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, লিবিয়া, পাক-বালুচ সংঘর্ষ, মেক্সিকান ড্রাগ কনফ্লিক্ট – সর্বত্রই একই জিনিস। এখন মরদেহের সঙ্গে যৌনতার অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবি উঠছে। ২০১২ সালে এনিয়ে আইন পাশ করেছিল মিশর। তারপর থেকে আরও ৬টি মুসলিম প্রধান দেশে এই দাবি উঠেছে এবং ওইসব সরকারের উপর চাপ বাড়ছে।

আর ভারতে? কলকাতায় হেতাল পারেখ থেকে নিঠারি হয়ে আরজিকর হাসপাতালে খুন – ধর্ষণ। এসব ঘটনার পিছনেও কমন লিঙ্ক বলতে কি নেক্রোফেলিয়া? বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ এনিয়ে একমত। তাঁদের বক্তব্য, মৃতদেহ তো যৌন উত্তেজনায় সাড়া দেয় না। আবার বাধাও দেয় না। তাই মরদেহের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ, ইচ্ছেমত যৌন সংসর্গে বাধা নেই। একে বলা হয় কোল্ড অ্যাবনর্মাল স্টেজ। এই কোল্ড অ্যাবনর্মাল স্টেজের স্বাদ নিতেই পাগলের মতো মরদেহের সন্ধানে থাকেন ন্যাক্রোফিলিকরা।

মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতা ভারতে অপরাধ হলেও তা ধর্ষণ বলে ধরা হয় না। গত মাসে ছত্তীসগঢ় আদালতে এই সংক্রান্ত একটা মামলা উঠেছিল। এক মৃত নাবালকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারা ও পকসো চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করে একটি এনজিও। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে বলে, মরদেহের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ঘৃণ্য অপরাধ হলেও ধর্ষণ নয়। এমনকি একে যৌন নির্যাতনও বলা যায় না। এনিয়ে আইন সংশোধনের পক্ষেও সওয়াল করে ডিভিশন বেঞ্চ। বহু বছর ধরে এই আইন বদলের দাবি তুলছেন সমাজকর্মী ও আইনজীবীদের একটি অংশ। রাজ্যসভা ও লোকসভাতেও বারবার এনিয়ে আলোচনা হয়েছে। কাজের কাজ কিছু হয়নি। নতুন আইন তৈরি বা আইন সংশোধনের সম্ভাবনাও দেখা যায়নি।