Odisha Train Accident: বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব মুখে নয় কাজে দিচ্ছেন রেলমন্ত্রী, ময়দানে নমোর বিভিন্ন মন্ত্রকও
দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলের নিরাপত্তা নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধীরা। রেলের নিরাপত্তা কবচ প্রযুক্তি নিয়েও কটাক্ষ শোনা গিয়েছিল। এই সময় রাজনৈতিক বাদানুবাদ যে কাম্য নয়, উদ্ধারকাজের উপর জোর দিয়ে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক।
নয়াদিল্লি: ওড়িশার বালেশ্বরে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যে দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৮৮ জন। ঘটনার আহত সাতশোর বেশি। দুর্ঘটনার পর থেকেই উদ্ধারকাজে তৎপরতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। রেলের বিভিন্ন বিভাগের কর্মী, এনডিআরএফ, ওড়িশার উদ্ধারকারী দল, দমকল হাতে হাত মিলিয়ে উদ্ধার কাজ চালিয়েছে। শনিবার সকালেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজের পরিদর্শনও করেছেন। দুর্ঘটনার পরই সব রকম ভাবে মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য এমইস ভুবনেশ্বরে আহতদের চিকিৎসার বিষয়টি নজর রেখেছেন। দুর্ঘটনায় আহতদের বাড়ি ফেরানোর সমস্ত ব্যবস্থাও করা হয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। আহতদের পরিজনরা যাতে তাঁদের কাছে পৌঁছতে পারেন সে জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিশেষ ট্রেনও চালিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। সেই সঙ্গে মৃতদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে রেল। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনার তদন্তও তৎপরতার সঙ্গে করেছে রেলের সুরক্ষা কমিশন। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে মোদীর সরকার যে ভাবে আশ্বস্ত করেছে, তা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।
বালেশ্বরের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় ঘটতেই শুক্রবার রাতেই উদ্বেগ ফুটে উঠেছিল রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের চোখেমুখে। শনিবার সকালেই তিনি পৌঁছে যান দুর্ঘটনাস্থলে। শনিবার সকালে থেকেই নাগাড়ে দুর্ঘটনাস্থলে রয়েছেন তিনি। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে খতিয়ে দেখেছেন উদ্ধারকাজ। রেলের বিভিন্ন কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি উদ্ধারকারী দলের পাশে ছিলেন সব সময়। বিরোধীদের আক্রমণ, তাঁর পদত্যাগ কৌশলী চালকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সামলেছেন রেলমন্ত্রী। ঠান্ডা ঘরে বসে রাজনৈতিক বাদানুবাদে জড়াননি। প্রবল গরম অগ্রাহ্য করে দুর্ঘটনাস্থলে রয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পাশে থেকেছেন। নিজেকেও যুক্ত রেখেছেন উদ্ধারকাজের সঙ্গে। তাঁর এই নিরসল সেবা নজর কেড়েছে দেশবাসীর। সে জন্য বিভিন্ন মহল থেকে প্রশংসাও এসেছে রেলমন্ত্রীর এই উদ্যোমের জন্য। ভারতে অতীতেও প্রচুর ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অতীতের কোনও রেলমন্ত্রী এ ভাবে মাঠে নেমে কাজ করেছেন কি না, তা মনে করতে পারছেন না দেশবাসী। দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তদন্ত সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
দুর্ঘটনার পর থেকেই রেলের নিরাপত্তা নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধীরা। রেলের নিরাপত্তা কবচ প্রযুক্তি নিয়েও কটাক্ষ শোনা গিয়েছিল। এই সময় রাজনৈতিক বাদানুবাদ যে কাম্য নয়, উদ্ধারকাজের উপর জোর দিয়ে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক। সবার আগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। তাঁদেরকে নিরাপদ ভাবে পরিজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। এই জরুরি কাজগুলি চালিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রক। রেল মন্ত্রক তো বটেই, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, স্বাস্থ্য মন্ত্রক এনডিআরএফ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে দুর্ঘটনার পর থেকেই। আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের দল পৌঁছেছিল দুর্ঘটনাস্থলে। হাসপাতালেও একটানা কাজ করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজে সে দিকে লক্ষ্য রাখছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বালেশ্বের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনায় কোনও রেলকর্মীর গাফিলতি থাকলে সরকার ছেড়ে কথা বলবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মোদী।
দুর্ঘটনার পর রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রেলের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। কিন্তু রেলের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে ধোপে টিকবে না বিরোধীদের অভিযোগ। পরিকাঠামো উন্নয়ন তো বটেই, রেলের দুর্ঘটনাও গত ৮-৯ বছরে অনেকটাই কম হয়েছে ইউপিএ সরকারের শেষ ৮ বছরে রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১ হাজার ২৮৩ জন। সেখানে মোদী সরকারের শেষ ৮ বছরে রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪০৬ জন। ২০১৩-১৪ সালে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল ৫২টি। সেখানে ২০২১-২২ সালে সেই দুর্ঘটনা ঘটে ২৬টি। লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘনাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। এমনকি প্রতি ১০ লক্ষ কিলোমিটারে দুর্ঘটনার হারও কমেছে গত কয়েক বছরে।