তিকরি সীমান্তে গাছে ঝুলছে অন্নদাতার দেহ, চিঠিতে লেখা…

গতকাল সকালেই করমবীর সিং নামক এক কৃষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয় তিকরি সীমান্ত লাগোয়া একটি পার্ক থেকে।

তিকরি সীমান্তে গাছে ঝুলছে অন্নদাতার দেহ, চিঠিতে লেখা...
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Feb 08, 2021 | 1:33 PM

নয়া দিল্লি: কৃষি আইন প্রত্যাহার না হওয়ার ক্ষোভে ফের আত্মহত্যা করলেন এক অন্নদাতা। রবিবার দিল্লির তিকরি সীমান্তে (Tikri Border) তাঁবুর বাইরেই একটি গাছ থেকে এক কৃষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের কাছ থেকে একটি চিঠিও উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে সরকারকেই দোষারোপ করেছেন তিনি।

কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিগত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দিল্লি সীমান্তে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। গতকাল সকালেই করমবীর সিং নামক এক কৃষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয় তিকরি সীমান্ত লাগোয়া একটি পার্ক থেকে। হরিয়ানা (Haryana)-র জিন্দের বাসিন্দা ওই কৃষক আরও আটজনের সঙ্গে তাঁবু ভাগ করে থাকছিলেন। তিনি বিগত দু-তিনদিন ধরে চিন্তিত থাকলেও সতীর্থরা কেউই বুঝতে পারেননি এই পদক্ষেপ করবেন তিনি।

আত্মহত্যার করার আগে ওই কৃষক যে চিঠি লিখে গিয়েছেন, সেখানে তিনি প্রথমেই লেখেন, “ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন জিন্দাবাদ।” এরপর তিনি বলেন, “প্রিয় কৃষকভাইয়েরা, মোদী সরকার একের পর এক দিন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কবে এই কালা আইন প্রত্যাহার করা হবে, সেই বিষয়ে বলা হচ্ছে না। এই আইন প্রত্যাহার না করা হলে আমরাও এখান থেকে যাব না।”

আরও পড়ুন: দেবভূমিতে ধ্বংসলীলা! জোশীমঠে এখনও অবধি উদ্ধার ১৪ মৃতদেহ, নিখোঁজ ১৭০

করমবীরের মৃত্যুতে কার্যত স্তম্ভিত তাঁর সঙ্গে একই তাঁবুতে থাকা অন্যান্য আন্দোলনকারী কৃষকরা। তাঁরা জানান, বিগত দুই তিনদিন ধরেই চিন্তিত ছিলেন তিনি। মাঝেমধ্যেই বলতেন যে কেন্দ্র আইন প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছুই করছে না। করমবীর যেহেতু আমাদের মধ্যে বয়সে সবথেকে বড় ছিলেন, তাই ওনাকে আমরা নিজেদের নেতা তথা অভিভাবক হিসাবেই ভাবতাম।

আরেক কৃষক বলেন, “শনিবার রাত ১১টা নাগাদ শেষবারের মতো করমবীরকে দেখা যায়। আমরা সবাই একসঙ্গে বসে তাস খেলছিলাম। তারপর উনি শৌচালয়ে যান এবং এসে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি কেউ একজন আত্মহত্যা করেছেন। তখনও ভোরের আলো না ফোটায় মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে দেখি করমবীর গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে।”

আন্দোলনকারীরা জানান, করমবীরের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়েই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তাঁরা সকাল সাতটা নাগাদ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বাহাদুরগঢ়ে ময়নাতদন্ত করা হবে।

নভেম্বর মাসে দিল্লির তিন সীমান্তে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও অবধি প্রায় ১২০ জনেরও বেশি কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। কেউ গলায় দড়ি দিয়ে, কেউ আবার ঘুমের ওষুধ কিংবা বিষ খেয়ে। সরকারের তরফে আইন সংশোধন ও আগামী দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিলেও তা মানতে নারাজ কৃষকরা। তাঁদের দাবি, সংশোধন নয়, আইন প্রত্যাহারই করতে হবে সরকারকে।

আরও পড়ুন: নিশ্চিহ্ন তপোবনের বাঁধ, রাত থেকেই ফের বাড়ছে ধৌলিগঙ্গার জলস্তর