Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kargil War: সেদিনও আকাশে দুর্দান্ত খেল দেখিয়েছিল ভারত, লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল পাকিস্তান, বিজয় দিবসের আগে ফিরে দেখা কার্গিল জয়ের ইতিহাস

Kargil War: অনেকের মনে থাকতে পারে, সেই সময় কার্গিলের পাহাড় চূড়ায় অপারেশন চালাতে গিয়ে প্রতি পদে হোঁচট খেতে হচ্ছিল ভারতীয় বায়ুসেনাকে। ভারতের হাতে সেরা যুদ্ধবিমান বলতে তখন মিরাজ টু-থাউজেন্ট। কিন্তু, ৩২ হাজার ফুট উচ্চতায় ওই অপারেশন চালানোর ক্ষমতা মিরাজেরও ছিল না।

Kargil War: সেদিনও আকাশে দুর্দান্ত খেল দেখিয়েছিল ভারত, লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিল পাকিস্তান, বিজয় দিবসের আগে ফিরে দেখা কার্গিল জয়ের ইতিহাস
প্রতীকী ছবি Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Updated on: Jul 12, 2024 | 9:52 PM

কলকাতা: আর তো কয়েকদিন। তারপরেই ২৬ জুলাই। কার্গিল বিজয় দিবস। এই কার্গিল যুদ্ধ ইতিহাসের এমন একটা অধ্যায় যাকে বোধহয় কখনই পুরোপুরি জেনে ওঠা সম্ভব নয়। ১৯৯৯ সাল, তখন কার্গিলের পাহাড়ে চলছে ভারতীয় সেনার অপারেশন বিজয়। তেমনই একটা সময়ে ভারত-পাক আকাশযুদ্ধ শুরুর উপক্রম হয়েছিল। ভারতের মিরাজ টু-থাউজেন্ডের মুখোমুখি চলে এসেছিল পাকিস্তানে এফ-ফিক্সটিন। ভারতের মিরাজ মিসাইল ফায়ার করতেও তৈরি ছিল। মিসাইল ফায়ার হলে পুরোদস্তুর আকাশযুদ্ধ এড়ানো না। সেনার টপ অফিসিয়ালরা ছাড়া কেউই এতদিন সেকথা জানতেন না। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই সেসব কার্পেটের তলায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কার্গিল যুদ্ধের ২৫ বছর পর সেই রোমহর্ষক ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এল। প্রকাশ্যে আনলেন বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল রঘু নাম্বিয়ার। সেদিন মিরাজের পাইলটের আসনে ছিলেন নাম্বিয়ার। 

অনেকের মনে থাকতে পারে, সেই সময় কার্গিলের পাহাড় চূড়ায় অপারেশন চালাতে গিয়ে প্রতি পদে হোঁচট খেতে হচ্ছিল ভারতীয় বায়ুসেনাকে। ভারতের হাতে সেরা যুদ্ধবিমান বলতে তখন মিরাজ টু-থাউজেন্ট। কিন্তু, ৩২ হাজার ফুট উচ্চতায় ওই অপারেশন চালানোর ক্ষমতা মিরাজেরও ছিল না। এত উচ্চতায় পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূল হয় যে, প্রশিক্ষিত পাইলটেরও বিমানের ভিতর দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বায়ুসেনার পাইলটরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ত, সেই সময় ভারতের কাছে লেজার গাইডেড বোমা ছিল না। অথচ অত উঁচু থেকে পাক ঘাঁটিগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হলেও ভারত তক্ষুনি সেটা করতে পারেনি। অনেক দেশকেই অনুরোধ করেছিল অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার। কিন্তু, কেউ এগিয়ে আসেনি। সেই সময় ভারতকে সাহায্য করতে এগিয়ে এল কে? একমাত্র ইসরায়েল। ভারতের অনুরোধে মাত্র ৭দিনে লেজার গাইডেড বোমা সরবরাহ করেছিল ইজরায়েল। সেই বোমা দিয়ে একদিনে ১৯টি পাক ঘাঁটি ও পঞ্চাশের বেশি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দেয় বায়ুসেনা। 

কার্গিলের পাক ঘাঁটিতে প্রথম লেজার বোমা নিয়ে হামলা চালান রঘু নাম্বিয়ার। তখন বায়ুসেনার উইং কমান্ডার। তার ঠিক আগেই নাম্বিয়ারের সামনে চলে আসে পাক বায়ুসেনার এফ-সিক্সটিন। মিরাজে ছিল রাডার ওয়ার্নিং রিসিভার। ওই প্রযুক্তিই পাকিস্তানি এফ সিক্সটিনের অবস্থানের আঁচ দিয়েছিল। এক সময় দু’টি বিমানের মধ্যে দূরত্ব কমে দাঁড়ায় ৩৫ কিলোমিটার। নাম্বিয়ার বলছেন, “পাকিস্তানের এফ-১৬’কে প্রায় ৩৩ সেকেন্ডের জন্য লক করে দিয়েছিলাম। অর্থাত্‍ তুলনায় অনেক উন্নত এফ-১৬-র নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতের মিরাজ। ভারত লক করার পরপরই এফ-১৬’র মুখ ঘুরিয়ে নেন পাক বায়ুসেনার পাইলট।” না হলে? নাম্বিয়ার বলছেন, “আমি আরমাস মিসাইল ফায়ার করতে তৈরি ছিলাম। সেক্ষেত্রে মুখোমুখি দুই বিমানের সংঘর্ষ শুরু হয়ে যেত। এফ-১৬’কে সিগন্যাল পাঠিয়ে সেটা বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো যাবে, এমনটা ভাবতেও পারিনি।” সেনা সূত্রে খবর, সেইদিনের পর কার্গিলে আর যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঝুঁকি নেয়নি পাকিস্তান। নাম্বিয়ার বলছেন, বায়ুসেনার কাছে নির্দেশ খুব স্পষ্ট ছিল। পাকিস্তানের তরফে যে কোনও প্ররোচনা বা হামলা হলে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা সেনাকে দেওয়া হয়েছিল। উনি বলছেন, আমাদের বলাই ছিল, জলে গা না ভিজিয়ে সাঁতার কাটা যায় না। যুদ্ধের ক্ষেত্রেও আমরা সেটাই মেনে চলব। পুরোদস্তুর যুদ্ধ হলে হবে। নো ইস্যু। তবে পাকিস্তান ভারতের আকাশসীমা না পেরলে ভারতও পাক আকাশসীমা লঙ্ঘন করবে না – সেই নির্দেশও বায়ুসেনাকে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে প্রথম লেজার গাইডেড বোমা দিয়ে পাক ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন নাম্বিয়ার, সেই জায়গায় নাম এখন নাম্বিয়ার পয়েন্ট। কার্গিল যুদ্ধের আনাচে – কানাচে, কার্গিলের খাড়াই পাহাড়ে, বরফের চাদরে এরকম আরও বহু রোমাঞ্চকর ঘটনা ছড়িয়ে রয়েছে। তবে ১৯৯৯ সালে যেভাবে সবার অজান্তে পাক সেনা কার্গিলে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল, সেই ঘটনা কী আবারও ঘটতে পারে? সেনাকর্তারা বলছেন, সে দিন আর ফিরবে না। কার্গিলের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্ক রয়েছে সেনা।