Bhopal Hospital Fire: ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাণ্ডজ্ঞানহীনতার জন্যই মৃত্যু ৪ শিশুর’, ক্ষোভে ফুটছেন পরিজনরা
Negligence of Hospital : আগুনে ঝলসে চার শিশুর মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন মৃত শিশুদের মা-বাবারা।
ভোপাল: গতরাতে এক ভয়ঙ্কর বীভীষিকার সাক্ষী থেকে দেশ। মধ্যপ্রেদেশের ভোপালে এক হাসপাতালে আগুন লাগে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে। আগুন চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। আর এরই মধ্যে আরও এক অভিযোগ উঠে আসছে। অভিযোগ উঠছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির। আগুনে ঝলসে চার শিশুর মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন মৃত শিশুদের মা-বাবারা।
বিক্রম নামে এক অভিভাবক সরাসরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, “আমার আট বছরের মেয়ে হাসপাতালে ভরতি। অপারেশন হয়েছিল। প্রথমে আমাকে বলা হল মেয়ে মারা গিয়েছে। তারপর বলল বেঁচে আছে। কিন্তু গতরাত থেকে এখনও পর্যন্ত মেয়ের সঙ্গে আমাকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালের ভিতরে সব জায়গায় ধোঁয়া ছিল।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যশোদা দেবীও। তাঁর বক্তব্য, “আমাদের ছেলেকে এক নম্বর ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের কর্মীরা বলছে, এক নম্বর ওয়ার্ডে যে ভরতি রয়েছে, সে আমাদের ছেলে না। আমাদের কাছে আমাদের ছেলের ছবি আছে। আমাদের ছেলে আমাদের থেকে ভাল করে কেউ চিনতে পারবে না। কিন্তু আমাদের বলা হচ্ছে সময়মতো ছেলের দেহ পেয়ে যাব। আমরা কেন অন্য কারও সন্তানের দেহ নিয়ে যাব?”
আমিন নামে অন্য এক অভিভাবক জানিয়েছেন, রাতে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফোন করে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। অন্তত দুই ঘণ্টা তাঁকে হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। তারপর তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সন্তান মারা গিয়েছে। আমিন প্রশ্ন তুলেছেন, “এই শিশুদের মৃত্যুর জন্য কি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অকর্মন্য়তা দায়ী নয়? চার জন শিশু মারা গিয়েছে। বাকিদের অবস্থা কী, কিচ্ছু জানানো হয়নি।”
মূলত হাসপাতালের যে পাশে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে, সেখানে পেডিয়াট্রিক আইসিইউ ছিল। কী ভাবে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটল তা এখনও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সে সময় শিশুদের আইসিইউয়ে কমপক্ষে ৪০ শিশু চিকিৎসাধীন ছিল। ৩৬ জনকে উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলেও চার শিশুকে বাঁচানো যায়নি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয় দমকলের ১২টির বেশি ইঞ্জিন। দীর্ঘ চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তারা। এই মর্মন্তুদ ঘটনায় টুইটারে শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। শিবরাজ সিং চৌহান লেখেন, ‘হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে আগুন লাগার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। খুবই দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকার্য সম্পন্ন করা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণেও আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় গুরুতর অসুস্থ তিন শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ঈশ্বর ওদের আত্মাকে শান্তি দিন। এই শিশুদের প্রিয়জনের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইল। যারা এই ঘটনায় আহত হয়েছে, তারাও খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক আমার কামনা রইল।’