‘লাট্টু, গুলতি বিজ্ঞান শেখায়’, খেলনা মেলায় স্মৃতিমেদুর প্রধানমন্ত্রী

মহেঞ্জোদারো ও সিন্ধু সভ্যতার উপর গবেষণা করেও খেলনা তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi)। তিনি জানান, বর্তমানে গোটা বিশ্বে সমাদৃত দাবা ভারতেই আবিষ্কার করা হয়েছিল। সেই সময় এটি "চতুরঙ্গ" (Chaturanga) নামে পরিচিত ছিল। সেই সময় দেশে লুডো খেলা হত "পচিসি" (Pachisi) নামে।

'লাট্টু, গুলতি বিজ্ঞান শেখায়', খেলনা মেলায় স্মৃতিমেদুর প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Follow Us:
| Updated on: Feb 27, 2021 | 2:06 PM

নয়া দিল্লি: বিদেশী খেলনা দিয়ে নয়, আর পাঁচটা সাধারণ শিশুর মতোই তাঁর ছোটবেলাও কেটেছে লাট্টু, লুডোর মতো নানা দেশীয় খেলনা নিয়েই। শনিবার “ভারত খেলনা মেলা ২০২১” (India Toy Fair 2021) অনুষ্ঠানের ভার্চুয়াল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)-র মনে পড়ে গেল তাঁর ছোটবেলার কথা। একইসঙ্গে জানালেন দেশীয় খেলনার মাধ্যমে দেশকে আত্মনির্ভর বানানোর ইচ্ছে।

শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেশের প্রথম খেলনা মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই মেলায় অংশ নিয়েছেন এক হাজারেরও বেশি খেলনা প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ী। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতীয় খেলনা কেবল শিশুদের মনোরঞ্জনই করে না, একইসঙ্গে বিজ্ঞানের দুনিয়ায় প্রবেশ করতেও সাহায্য করে। একদিকে লাট্টু যেমন আমাদের মধ্যাকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে শেখায়। তেমনই গুলেল বা গুলতি আমাদের গতি সম্পর্কে শেখায়। সদ্যোজাতদের শক্তি সম্পর্কে শেখায় ঝুনঝুনা। যেই খেলনাগুলিতে ধাঁধা থাকে, তা শিশুদের সুচিন্তিতভাবে সমস্যা সমাধান সম্পর্কে ভাবতে সাহায্য করে।”

দেশকে আত্মনির্ভর বানানোর শপথ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই পথে এগোতে সাহায্য করবে ভারতীয় খেলনা মেলা, এমনটাই মত প্রধানমন্ত্রীর। তিনি জানান, দেশের যে খেলনাগুলি তৈরি হয়, তার অধিকাংশই সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়েই তৈরি হয়। এমনকি খেলনাগুলিতে যে রং ব্যবহার হয়, তাও শিশুদের জন্য নিরাপদ। ভারতীয় খেলনা প্রস্তুতকারকদের আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের বলছি, এমন খেলনা তৈরি করুন যা পরিবেশ ও মনস্তত্ব-উভয়ের পক্ষেই উপকারী। প্ল্যাস্টিকের খেলনার ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে এর পরিবর্তে পুনঃনবীকরণযোগ্য খেলনা কি বানানো সম্ভব?”

আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকায় ছোট মেয়েকে বেচে দিয়ে বড় মেয়ের চিকিৎসা!

খেলনা মেলার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি জানান, এই মেলা কেবল ব্যবসা বা অর্থনীতিকেই সাহায্য করবে না, একইসঙ্গে দেশের বহু দশক পুরনো খেলাধুলোর ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রাখবে। মহেঞ্জোদারো ও সিন্ধু সভ্যতার উপর গবেষণা করেও খেলনা তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বর্তমানে গোটা বিশ্বে সমাদৃত দাবা ভারতেই আবিষ্কার করা হয়েছিল। সেই সময় এটি চতুরঙ্গ নামে পরিচিত ছিল। সেই সময় দেশে লুডো খেলা হত পচিসি নামে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “দেশীয় খেলনাগুলি শিশুদের মধ্যে একতার চেতনাকে বাড়ায়। আমি মা-বাবাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি যে শিশুদের শিক্ষার পথকে আরও মসৃণ করতে তাঁরা যেন নিজেদের সন্তানদের সঙ্গে খেলেন। ভারতের খেলনা শিল্পের বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। আত্মনির্ভর ভারত ক্যাম্পেনের মাধ্যমে সেই ক্ষেত্রটিকেই তুলে ধরা হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের খেলনা প্রস্তুতকারকদের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। কর্নাটকের এক খেলনা ব্যবসায়ীদের, যাঁরা ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের অনলাইন মার্কেটে নিজেদের পণ্য বিক্রি করে বিশ্বের বাজারে তুলে ধরার উপদেশ দেন। একইসঙ্গে বারাণসীর খেলনা প্রস্তুতকারকদের শিশুদের সঙ্গে সম্পর্কিত খেলনা তৈরি করার উপদেশ দেন। জয়পুরের খেলনা ব্যবসায়ী, যাঁরা মূলত কাঠপুতলি তৈরি করেন, তাঁদের নতুন খেলনার মাধ্যমে শিশুদের মাস্ক পরা, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে উদ্বুধ্ব করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: বেসরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে কত খরচ? জানাল কেন্দ্র