WITT 2025: প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ২১% রপ্তানি বাড়িয়েছে ভারত! WITT-এর মঞ্চে এসে মোদী জানালেন…
WITT 2025: মোদী জানান, প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের অর্জন ঐতিহাসিক। একসময় ভারত অন্যান্য দেশ থেকে অস্ত্র কিনত, এখন তারা প্রতিরক্ষা রপ্তানি ২১ গুণ বৃদ্ধি করে ইতিহাস তৈরি করছে। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে কতগুলি দেশে অস্ত্র রপ্তানি করছে?

গত ১০ বছরে প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল উন্নতি করেছে ভারত। আগের থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আগে যেখানে ভারত সবার সঙ্গে ‘সমান দূরত্ব’ রেখে চলার নীতিতে এগিয়ে যেত। সেখানে আজ ভারতে নীতিতে এসেছে ব্যপক পরিবর্তন, সকলের সঙ্গে ‘সমান বন্ধুত্বে’র নীতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে ভারত। অনান্য ক্ষেত্রের মতো বর্তমানে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও গোটা বিশ্ব ভারত একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের রপ্তানি ২১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার ভারত মণ্ডপমে, দেশের বৃহত্তম সংবাদ নেটওয়ার্ক TV9-এর ‘হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে’ (WITT) এর তৃতীয় সংস্করণে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কন্ঠে শোনা গেল সেই কথাই। ভারত কীভাবে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠছে তাও ব্যাখ্যা করেন তিনি।
মোদী জানান, প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের অর্জন ঐতিহাসিক। একসময় ভারত অন্যান্য দেশ থেকে অস্ত্র কিনত, এখন তারা প্রতিরক্ষা রপ্তানি ২১ গুণ বৃদ্ধি করে ইতিহাস তৈরি করছে। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে কতগুলি দেশে অস্ত্র রপ্তানি করছে? কাকে কী সরবরাহ করছে জানেন?
ভারত কতটি দেশকে অস্ত্র সরবরাহ করছে?
বর্তমানে, ভারত বিশ্বের ৮০টিরও বেশি দেশে অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা খাত সম্পর্কিত সরঞ্জাম রপ্তানি করছে। রাশিয়া, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, মলদ্বীপ, পোল্যান্ড, মিশর, ইজরায়েল, স্পেন এবং চিলি সহ অনেক বড় দেশ রয়েছে এই তালিকায়। ভারতের হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস রপ্তানির জন্য বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছে। এর মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, ফিলিপাইন এবং নাইজেরিয়ার মতো দেশও।
ভারত যেসব অস্ত্র রপ্তানি করছে
ভারতের প্রতিরক্ষা রপ্তানি কেবল ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং আর্টিলারি বন্দুকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বকে অস্ত্র থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সবকিছুই সরবরাহ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ডর্নিয়ার-২২৮ বিমান, লাইট ওয়েট টর্পেডো, রাডার, সাঁজোয়া গাড়ি, রকেট, রকেট লঞ্চার, অগ্নি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, অ্যালার্ম পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং নাইট ভিশন মনোকুলারের মতো সরঞ্জাম। ভারত প্রতিরক্ষা খাতে উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও, উপকূলীয় নজরদারি রাডার সহ অনেক সরঞ্জাম বিশ্বে রপ্তানি করছে।
৩৪টি দেশকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট সরবরাহ করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। একটি রিপোর্ট অনুসারে ভারত জাপান, ইজরায়েল, অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রাজিলের মতো বিশ্বের ৩৪টি দেশে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট রপ্তানি করছে। ভারত সংযুক্ত আরব আমিরাশাহি, ইন্দোনেশিয়া, মিশর এবং থাইল্যান্ড সহ বিশ্বের ১০টি দেশে গোলাবারুদ সরবরাহ করছে। মোদী বলেন, “প্রতিরক্ষা খাতে, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স আমাদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম কিনছে। মরিশাস ইতিমধ্যেই ইন্টারসেপ্টর নৌকা কিনছে।”
ভারতের রেকর্ড –
গত বছরের এপ্রিলে প্রতিরক্ষা রপ্তানির পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছিল। প্রতিরক্ষা খাতে ভারত প্রথমবারের মতো এই সংখ্যা স্পর্শ করল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন যে, গত বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রতিরক্ষা রপ্তানি ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের উৎপাদন অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “WITT-এর প্ল্যাটফর্ম থেকে বিশ্ব ভারতকে একটি উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে দেখছে। এর উদাহরণ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। ২০১৪ সালে, মোবাইল উৎপাদনে আমাদের রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারও ছিল না। কিন্তু এক দশকে আমরা ২০ বিলিয়ন ডলারের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছি। আজ ভারত বিশ্বব্যাপী টেলিকম এবং নেটওয়ার্কিংয়ের শক্তি কেন্দ্র হয়ে উঠছে।”
তিনি বলেন, “মোটরগাড়ি খাতের সাফল্য সম্পর্কেও সকলেই অবগত। ভারত এর সঙ্গে সম্পর্কিত উপাদান রপ্তানি করে একটি নতুন পরিচয় তৈরি করছে। আগে আমরা প্রচুর পরিমাণে মোটরসাইকেলের যন্ত্রাংশ আমদানি করতাম, কিন্তু আজ ভারতে তৈরি যন্ত্রাংশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং জার্মানির মতো দেশে পৌঁছে যাচ্ছে। সৌরশক্তি খাতেও সাফল্যের মাত্রা তৈরি হয়েছে। সৌর কোষ এবং সৌর মডিউলের রপ্তানি ২৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে, প্রতিরক্ষা রপ্তানি ২১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সমস্ত অর্জন দেশের উৎপাদন অর্থনীতির শক্তি প্রদর্শন করে।”





