যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রথম মুখোমুখি জেলেনস্কি-প্রধানমন্ত্রী মোদী, অপেক্ষায় হিরোশিমা
PM Modi to Meet President Zelensky: জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই প্রথম দুই রাষ্ট্রনেতা সশরীরে মুখোমুখি হচ্ছেন।
নয়া দিল্লি: শুক্রবারই (১৯ মে) জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানের হিরোশিমার উদ্দেশ্যে উড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মোদী যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এই প্রথম দুই নেতা সশরীরে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হবেন। এর আগেই বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জি৭ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী অন্ততপক্ষে ডজন খানেক রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলি আয়োজনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছিল মন্ত্রক। এর মধ্যে, জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি পাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, জি৭ বৈঠকে যোগ দিতে শনিবারই হিরোশিমায় আসবেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। কাজেই ওই দিনই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি হতে পারে।
এর আগে ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ফোন করেছিলেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তাঁর ‘দশ দফা শান্তি পরিকল্পনা’ প্রয়োগে ভারতের সমর্থন চেয়েছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গত বছর জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে এক ভার্চুয়াল বক্তৃতায় এই শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন জেলেনস্কি। ভারতের সমর্থন চাওয়ার পাশাপাশি জেলেনস্কি ভারতের জি২০ সভাপতিত্বের সাফল্য কামনা করেছিলেন। একইসঙ্গে বলেছিলেন যে, এই প্ল্যাটফর্মেই তিনি এই শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন। তাই সভাপতি হিসেবে তা প্রয়োগ করার দায়িত্ব ভারতেরই। জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি চান অবিলম্বে এই যুদ্ধ শেষ হোক। দুই পক্ষেরই আলোচনা এবং কুটনীতির মাধ্যমে যাবতীয় দ্বন্দ্বের টেকসই সমাধান করা উচিত। তার আগে ওই বছরের অক্টোবর মাসেও দুই রাষ্ট্রনেতার এক টেলিফোনিক কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছিলেন, যে কোনও শান্তি প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে তৈরি ভারত।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ইউক্রেন বা রাশিয়ার পক্ষ বেছে নিলেও, ভারত বরাবর নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে ভারত। একই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন, “এটা যুদ্ধের যুগ নয়।” সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত আলোচনার মাধ্যমে সকল মতানৈক্যের সমাধানের পক্ষে। এমনকি, রুশ প্রেসিডেন্টকে সরাসরি ফোন করেও এই কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার শিকার হওয়া ঐতিহাসিক হিরোশিমা শহরে ভারত ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক হতে চলেছে। এই বৈঠক থেকে কী সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসে, সেই দিকে নজর থাকবে গোটা বিশ্বের।