AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Earthquake: পরের ভূমিকম্পটি হতে পারে ভয়ঙ্কর, হিমালয় নিয়ে ‘হিমশীতল’ খবর শোনালেন বিজ্ঞানীরা

Earthquake in Himalaya: সিনিয়র জিওগ্রাফিসিস্ট অজয় পাল জানান, যেহেতু ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আগে থেকে নিজেদের প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। এতে বড় ক্ষয়ক্ষতি যেমন এড়ানো যায়, তেমনই ভূমিকম্পও দক্ষ হাতে মোকাবিলা করা যাবে।

Earthquake: পরের ভূমিকম্পটি হতে পারে ভয়ঙ্কর, হিমালয় নিয়ে ‘হিমশীতল’ খবর শোনালেন বিজ্ঞানীরা
নেপালে ভূমিকম্পের পরবর্তী পরিস্থিতি। ফাইল চিত্র
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2022 | 12:40 PM
Share

দেহরাদুন: ২০১৫ সালে নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের (Nepal Earthquake) কথা নিশ্চয়ই মনে রয়েছে? ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে প্রায় ধ্বংসই হয়ে গিয়েছিল নেপাল। ভারতেও প্রভাব পড়েছিল সেই ভূমিকম্পের (Earthquake)। সেই স্মৃতি উসকেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে ফের ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে নেপাল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩। এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে ভারতেও। দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার-সহ একাধিক রাজ্য রাত দুটো নাগাদ পরপর দুইবার কেঁপে ওঠে। বুধবার মধ্য রাতেও ভূমিকম্প হয় আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে। একের পর এক ভূমিকম্প হওয়ার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। হিমালয় অঞ্চলে বড়সড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। নেপালের মতো পরিস্থিতি যাতে ভারতেও না হয়, তার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হল।

মঙ্গলবার মধ্য রাতে নেপালে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার পরই কম্পন অনুভূত হয় দিল্লি, বিহার, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডেও। এত দূর অবধি কম্পন অনুভূত হওয়ার কারণ নিয়ে ওয়াদিয়া ইন্সটিটিউট অব হিমালয়ান জিওলজির সিনিয়র জিওগ্রাফিসিস্ট অজয় পাল বলেন, “ভারতীয় ও ইউরেশীয়ান প্লেটের সংঘর্ষের ফলেই হিমালয়ের উৎপত্তি হয়েছিল। ভূপৃষ্টের নীচে থাকা ভারতীয় প্লেটের উপরে ক্রমাগত ইউরেশীয়ান প্লেটের চাপের কারণেই ভূমিকম্প হয়। হিমালয়ের নীচে দুই পাতের সংঘর্ষে এই ভূমিকম্প অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। গোটা হিমালয় অঞ্চলটিই ভূমিকম্প প্রবণ। ওই অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনাও সর্বদাই থাকে।”

পরবর্তী সময়ে যদি হিমালয় অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়, তবে তা অত্যন্ত শক্তিশালী হবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানী। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ৭ বা তারও বেশি হতে পারে। কবে এই ভূমিকম্প হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়াও সম্ভব নয় বলেই তিনি জানান। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “কেউ জানে না কবে এই ভূমিকম্প হবে। পরের মুহূর্তেও হতে পারে, আগামী মাস বা ১০০ বছর পরেও এই ভূমিকম্প হতে পারে।”

উল্লেখ্য, বিগত ১৫০ বছরে মোট চারটি বড় ভূমিকম্প হয়েছে হিমালয়ে। ১৮৯৭ সালে শিলংয়ে ব্যাপক কম্পন অনুভূত হয়েছিল। এরপরে ১৯০৫ সালে কাঙ্গরায়, ১৯৩৪ সালে বিহার-নেপাল সীমান্তে ও ১৯৫০ সালে অসমে কম্পন অনুভূত হয়। এছাড়া ১৯৯১ সালে উত্তরকাশীতে, ১৯৯৯ সালে চামোলি ও ২০১৫ সালে নেপালেও ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়।

সিনিয়র জিওগ্রাফিসিস্ট অজয় পাল জানান, যেহেতু ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আগে থেকে নিজেদের প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন। এতে বড় ক্ষয়ক্ষতি যেমন এড়ানো যায়, তেমনই ভূমিকম্পও দক্ষ হাতে মোকাবিলা করা যাবে। পরামর্শ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে বাড়ি এমনভাবে বানানো উচিত, যা ভূমিকম্পেও বিশেষ প্রভাবিত হবে না। জাপানেও এই পদ্ধতিতেই বাড়ি বানানো হয়। এছাড়া প্রত্যেক বছরই অন্তত একবার মক ড্রিল করা উচিত। যদি এই কাজগুলি করা যায়, তবে ভূমিকম্পের প্রভাব ৯৯.৯৯ শতাংশ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

জাপানেরই উদাহরণ টেনে ডঃ পাল বলেন, “জাপান ভূমিকম্পপ্রবণ হওয়ায়, সে দেশে আগে থেকেই বিভিন্ন প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়। সেই কারণেই বারবার ছোট-বড় ভূমিকম্প হলেও, জাপানে প্রাণহানি বা সম্পত্তির বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয় না”। তিনি জানান, ওয়াদিয়া ইন্সটিটিউটের তরফে প্রায় সময়ই হিমালয়ের কোলে অবস্থিত গ্রাম ও স্কুলগুলিতে বিশেষ দল পাঠানো হয় সচেতনতা তৈরির জন্য।

ওই ইন্সটিটিউটেরই অপর জিও-ফিজিস্টিট নরেশ কুমার জানান, উত্তরাখণ্ড সেসমিক জ়োন চার ও পাঁচের মাঝে অবস্থিত। সেই কারণে এই অঞ্চলটি অত্যন্ত ভূমিকম্প প্রবণ। হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে প্রায় ৬০টি ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে সেসমিক প্লেটগুলির গতিবিধির উপরে নজর রাখার জন্য।