প্রয়াত বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা সইদ আলি গিলানি, অশান্তির আশঙ্কায় নিরাপত্তার চাদরে মোড়া হল উপত্যকা

বিচ্ছিন্নতাবাদী নানাকার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় দীর্ঘ সময় ধরেই গৃহবন্দি ছিলেন তিনি।

প্রয়াত বিচ্ছিন্নতাকামী নেতা সইদ আলি গিলানি, অশান্তির আশঙ্কায় নিরাপত্তার চাদরে মোড়া হল উপত্যকা
সইদ আলি গিলানি। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 6:53 AM

শ্রীনগর: প্রয়াত হলেন বিচ্ছিন্নতাকামী কাশ্মীরী নেতা সইদ আলি গিলানি (Syed Ali Geelani )। বুধবার বিকেলে শ্রীনগরে নিজের বাসভবনেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। এ দিকে, তাঁর মৃত্যুর পরই অশান্তি র আশঙ্কায় নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা উপত্যকা।

পাকিস্তানের সপক্ষে কথা বলা জম্মু-কাশ্মীরের এই নেতা দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু আচমকাই গত বছর তিনি হুরিয়তের শীর্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন। অভিযোগ করেন যে, দলের বাকি নেতারা কাশ্মীরবাসীর উন্নয়নের কথা ভুলে আর্থিক তছরুপের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। কাশ্মীরে পুলিশ প্রধান দিলবাগ সিংও জানান, শেষ চিঠিতে গিলানি স্বীীকার করে নিয়েছিলেন যে তিনি ভুল পথে চলেছিলেন এবং স্বার্থের খাতিরে কাশ্মীরকে ব্যবহার করা হয়েছিল। বিচ্ছিন্নতাবাদী নানাকার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকায় দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি গৃহবন্দি ছিলেন।

সইদ আলি গিলানির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পিপিলস ডেমোক্রাটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা মুফতি। পিডিপি নেত্রী টুইটে লেখেন, “গিলানি সাহেবের মৃত্যুর খবরে অত্যন্ত দুঃখিত। আমরা হয়তো অনেক বিষয়েই সহমত ছিলাম না, কিন্তু ওনার দৃঢ়প্রতৃজ্ঞ মনোভাব ও নিজের বিশ্বাসে স্থির থাকার কারণে ওনাকে সম্মান করতাম। আল্লাহ যেন ওনাকে জন্নতে জায়গা দেন এবং ওনার পরিবার ও শুভাকাক্ষীদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”

১৯২৯ সালে জ্ম্মু-কাশ্মীরের বারামুলায় জন্ম  হয় গিলানির। সেই সময় দেশ ভাগ না হওয়ায় লাহোরের ওরিয়েন্টাল কলেজ থেকে তিনি পড়াশোনা করেন। এর পরই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে তিনি যুক্ত হন। ১৯৭২, ১৯৭৭ ও ১৯৮৭ সালে তিনি সোপর বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে হুরিয়ত গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত থাকার পর গতবছর তিনি আচমকাই ইস্তফা ঘোষণা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছিল, তাঁকে পাকিস্তান ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ধীরে ধীরে একঘরে করে দিয়েছিল।

পদত্যাগ করার সময় তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে ২০১৯ সালে কেন্দ্রের তরফে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পরও বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে ফের জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থতাকেও তুলে ধরেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে তিনি হৃৎরোগে আক্রান্ত হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।

গিলানির মৃত্যুর পরই গোটা উপত্যকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করে দেওয়া হয়েছে অশান্তির আশঙ্কায়। কাশ্মীরের এক পুলিশ আধিকারিক বিজয় কু্মার জানান, ইন্টারনেট পরিষেবাও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। হাইদারপোরায় তাঁর বাড়ির বাইরেও কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। অশান্তির সম্ভাবনায় বেশ কয়েকজন হুরিয়ত নেতাকেও আটক করা হয়েছে। হুরিয়ত নেতা মুখতার আহমেদ ওয়াজাকে গতকালই দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও পড়ুন: 125 Rupee Coin: ১২৫ টাকার মুদ্রা প্রকাশ করলেন মোদী