‘পেনটাও দেওয়া হল না!’ বিপ্লবের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া সুশান্ত গেলেন না ‘গুরু’ সুদীপের কাছে

বিপ্লব দেবের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছেন সুশান্ত চৌধুরী। ফোনে কথা হলেও তিনি দেখা করেননি সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে।

'পেনটাও দেওয়া হল না!' বিপ্লবের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া সুশান্ত গেলেন না 'গুরু' সুদীপের কাছে
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 01, 2021 | 5:25 PM

প্রদীপ্ত কান্তি ঘোষ: ফোনে কথা হয়েছে। আশীর্বাদও দিয়েছেন। তবুও দিন শেষে সুশান্তের জন্য মন খারাপ সুদীপের। সুশান্তকে দেওয়া হল না উপহার।

বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর সদ্য অন্তর্ভুক্তি হয়েছে বিপ্লব দেব মন্ত্রিসভায়। মজলিশপুরের বছর আটত্রিশের সুশান্ত বিপ্লব দেবের মন্ত্রিসভায় তথ্য ও সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ এবং পূর্ত (ডিডব্লিউএস) দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন। আর সুশান্তের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরাট স্থান জুড়ে রয়েছেন সুদীপ। মঙ্গলবার সুশান্ত দয়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর রাজনৈতিক ‘গুরু’র কাছে একবারও যাননি। তাতেই মন খারাপ আগরতলার বিধায়কের। এমনকি, সে কথা বলতে গিয়ে চোখ চিকচিক করে উঠল তাঁর।

সুশান্তকে উপহারও দেওয়া হল না সুদীপের। রাজনৈতিক লড়াইয়ের অ-আ-ক-খ সুশান্তকে হাত ধরে শিখিয়েছিলেন বর্তমানে ত্রিপুরা রাজনীতির অন্যতম চর্চিত বিধায়ক সুদীপ। তিনি ভেবেছিলেন রাজনীতির ঘনিষ্ট বৃত্ত থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেলেও বিশেষ দিনে নিশ্চয় একবার দেখা করতে আসবেন সুশান্ত। তাই রাজনৈতিক শিষ্যের জন্য দামী পেনও কিনেছিলেন সুদীপ। কিন্তু সুশান্ত শপথ নেওয়ার আগে বা পরে একবারও আসেননি।

সুদীপের কথায়, ‘ভেবেছিলাম সুশান্ত আজকের দিনে আসবে। ওর জন্য পেন কিনেছিলাম। সেই পেন দিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত সই করবেন। কিন্তু ও এল না। পেনটা রয়ে গেল।’ তবে শপথ নেওয়ার আগে ফোনে কথা হয়েছে দু’জনের। স্বাভাবিক ভাবেই আশীর্বাদ চান সুশান্ত। আর আশীর্বাদও করেন সুদীপ। সুশান্ত না এলেও সূর্য্যমণিনগরের রামপ্রসাদ পাল অবশ্য শপথের পরে সুদীপের বাড়িতে যান। দেখা করেন তাঁর সঙ্গে।

সম্প্রতি মন্ত্রিসভা সম্প্রসারিত হয়েছে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের। তাতেই জায়গায় পেয়েছেন সুশান্ত। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ছিলেন না সুদীপ, বিধায়ক আশিষ সাহা, আশিষ দাস, দিবা চন্দ্র রাংখল, বুর্ব মোহন, সুরজিৎ দত্ত, পরিমল দেব বর্মা-সহ আর বেশ কয়েকজন বিধায়ক। মন্ত্রিসভা সম্প্রসারনে অনুপস্থিত বিধায়কদের অনেকেই সুদীপ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ত্রিপুরায়। বেশিরভাগ বিধায়ক ব্যক্তিগত কাজ আছে বলে এড়িয়ে যান বলে খবর। যদিও রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, দলীয় নেতৃত্বের উপর এই বিধায়করা অনেকেই অখুশি, তা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিল। আর এ দিনের অনুষ্ঠানে গরহাজিরার মাধ্যমে বিপ্লবের প্রতি অনাস্থাকে আরও বেশি করে স্পষ্ট করল বিধায়কদের এই একাংশ। গত সোমবার থেকে ত্রিপুরায় রয়েছেন বিজেপির চার কেন্দ্রীয় নেতা, সেই সময়ে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্টই চাপ বাড়াচ্ছে পদ্ম শিবিরের। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের অনেকের।

উল্লেখ্য, বিজেপিকে মোটেও স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছেন না বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। বিগত কয়েকদিন ধরেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগে রয়েছেন বলে খবর। এরই মধ্যে আবার দল পরিচালনার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এই অবস্থায় সোমবার ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চেয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু সেই বৈঠক ছেড়েও বেরিয়ে যান সুদীপ। আরও পড়ুন: হোটেল সমস্যার চিরতরে সমাধান, বিপ্লব দেবের নাকের ডগায় তৈরি হচ্ছে তৃণমূল ভবন