Supreme Court Of India on Pegasus Issue : ‘পাঁচটি ফোনে স্পাইওয়্যার মিলেছে, নেই পেগাসাসের উপস্থিতির প্রমাণ’, সুপ্রিম পর্যবেক্ষণে আপাত স্বস্তি কেন্দ্রের
Supreme Court Of India on Pegasus Issue : পেগাসাস বিতর্কে আপাত স্বস্তি পেল কেন্দ্রীয় সরকার। এই মামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মাত্র পাঁচটি ফোনে ম্যালওয়্যার পাওয়া গিয়েছে। তবে তা পেগাসাস কি না সেই বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
নয়া দিল্লি : দীর্ঘ এক বছর ধরে চলা বিতর্কে কিছুটা ইতি টানল শীর্ষ আদালত। পেগাসাস ইস্যুতে লোকসভা থেকে রাজ্যসভা-সহ একাধিক জায়গায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণে কিছুটা স্বস্তি কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের মনোনীত কমিটি জানিয়েছে, জমা দেওয়া ২৯টি মোবাইল ফোন পরীক্ষা করা হয়েছিল। মাত্র পাঁচটি ফোনেই ম্যালওয়ার পাওয়া গিয়েছে। তবে তা আদৌ পেগাসাস কি না তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণ নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।
পেগাসাস ইস্যু নিয়ে তদন্তের জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই কমিটির দেওয়া রিপোর্ট খতিয়ে দেখছে শীর্ষ আদালত। এদিকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি এন ভি রমণ জানিয়েছেন, কমিটির দাবি অনুযায়ী এই তদন্তে কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা করেনি। এই কমিটি পেগাসাস ইস্যুতে তদন্তের পর একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। সেই রিপোর্ট যাচাই করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। তিনটি ভাগে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। দুটি রিপোর্ট টেকনিক্যাল কমিটির। বাকি একটি রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রণের তদারকি কমিটির। এই তৃতীয় রিপোর্টটি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে বলেও জানিয়েছেন রমণ। তবে কিছু আবেদনকারী বাকি দুটি রিপোর্ট প্রকাশের কথা বলেন। সেই বিষয়ে ভেবে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আপাতত চার সপ্তাহের জন্য এই মামলার মুলতুবি ঘোষণা করা হয়েছে।
পেগাসাস বিতর্ক : সংসদের বাজেট অধিবেশনে পেগাসাস ইস্যু নিয়ে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধীরা। বাজেট অধিবেশনের আগেই নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ২০১৭ সালে ইজরায়েল ও ভারতের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র ও গোয়ান্দা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। যার অর্থমূল্য ছিল দু’হাজার কোটি মার্কিন ডলার। পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে এই চুক্তি হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছিল সেই রিপোর্টে।
তারপর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য ওয়্যার’ দাবি করেছিল, ১৪২ জনের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে এই পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব সেইসব ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষা করে জানিয়েছিল যে নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। ১৪২ এর জনের তালিকায় নাম ছিল কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর, দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, ৪০ জন সাংবাদিক, প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের দুই রেজিস্ট্রার সহ অনেকের। এই রিপোর্টকে সামনে রেখে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় গলায় জোর বাড়িয়েছেন বিরোধীরা।
সরকারের অবস্থান : সংসদে সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, কোনও আড়ি পাতা হয়নি। ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র জানিয়েছিল, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে পেগাসাস সম্পর্কিত কোনও তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে চায় না সরকার। তবে, এদিন সুপ্রিম কোর্টের কমিটি স্পষ্ট জানিয়ে দেয় মাত্র পাঁচটি ফোনে ম্যালওয়্যার পাওয়া গিয়েছে। তবে তা পেগাসাস কি না সেই বিষয়টি নিশ্চিত নয়।