‘কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমাদের আগ্রহ নেই’, তালিবানের কথায় স্বস্তি কেন্দ্রের
অতীতে তালিবানরা পাকিস্তান ও তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলিকেই সহায়তা করায় আরও উদ্বেগ বেড়েছে। লস্কর-ই-তৈবা ও লস্কর-ই-জাঙ্গভির মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল তালিবানিরা।
নয়া দিল্লি: তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা চলে যাওয়ার পরই উদ্বেগে নয়া দিল্লি। ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার তরফে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে তালিবানদের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, “কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ও অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে তাদের কোনও আগ্রহ নেই।”
রবিবার ঘানি সরকারের পতনের পরই উদ্বেগে রয়েছে ভারত। তালিবানদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর সন্ত্রাসবাদীদের ভূস্বর্গ হয়ে উঠতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা ভারতের। জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনিক সূত্রে বলা হয়েছে, “আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিকই রয়েছে, তবে জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা ব্য়বস্থা আরও কঠোর করতে হবে। আফগানিস্তানে অবস্থিত পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিও বিশেষ কোনও সুবিধা করতে পারবে না।”
মূলত আফগানিস্তানে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবা ও লস্কর-ই-জাঙ্গভি গোষ্ঠীর উপস্থিতি থাকার কারণেই কিছুটা উদ্বেগে ভারত। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিবানদের সাহায্যে কাবুলের বেশ কিছু অংশে ও গ্রামে চেক পোস্টও তৈরি করেছে তারা।
অতীতে তালিবানরা পাকিস্তান ও তাদের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলিকেই সহায়তা করায় আরও উদ্বেগ বেড়েছে। লস্কর-ই-তৈবা ও লস্কর-ই-জাঙ্গভির মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল তালিবানিরা। বর্তমানে আফগানিস্তান দখলের পর আফগান ও মার্কিন সেনার বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তালিবানদের হাতে চলে এসেছে। এরফলে বাকি জঙ্গি সংগঠনগুলিও তালিবানের সাহায্যে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে বলে সন্দেহ। সেনার গোয়েন্দাবাহিনীর রিপোর্টেও জানানো হয়, জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়তে পারে আগামিদিনে।
একইসঙ্গে বাড়তে পারে অনুপ্রবেশের সংখ্যাও। সূত্রের খবর, সীমান্তের ও পারে লঞ্চ প্য়াডগুলিতে ইতিমধ্যেই জঙ্গি উপস্থিতি বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ও আটকে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধারকার্যের দিকেই সম্পূর্ণ নজর থাকায়, সেই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চাইছে তারা।
এরপরই সোমবার সেনার নর্দান কম্যান্ডের তরফে জানানো হয়, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করার কথা। সেই নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার ভোর থেকে অতি স্পর্শকাতর সীমান্ত এবং সংলগ্ন অংশগুলিতে নজরদারিতে বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হয়। সেনা সূত্রের খবর, মঙ্গলবারও ফের নর্দান কম্যান্ড বৈঠকে বসে। সীমান্ত পরিস্থিতি এবং নজরদারিতে কোথাও ফাঁকফোকর রয়েছে কিনা, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
তবে তালিবানের তরফে শান্তির বার্তা দেওয়ার পিছনেও অন্য কারণ। কূটনীতিবিদদের দাবি, সন্ত্রাাসবাদী সংগঠন হিসাবে নিজেদের পুরনো পরিচিতিকে মুছে ফেলতে চায় তালিবান। সমগ্র বিশ্বের নজরই আপাতত আফগানিস্তানের উপর থাকায় তারা ভাল ভাবমূর্তি গঠন করে, আন্তর্জাতিক মহলে নতুন সরকারের স্বীকৃতি লাভ করতে চায় তালিবানরা। আরও পড়ুন: অভিষেকের বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়ে চার্জশিট দিতে পারবে না পুলিশ, নির্দেশ ত্রিপুরা হাইকোর্টের