Bombay High Court: মধ্যরাতে অনুমতি ছাড়া মহিলার শরীরের যে কোনও অংশে স্পর্শ করার অর্থ শ্লীলতাহানি: হাইকোর্ট

Bombay High Court: ৩৬ বছরের এক ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করার আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন খারিজ করে দেয় বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ।

Bombay High Court: মধ্যরাতে অনুমতি ছাড়া মহিলার শরীরের যে কোনও অংশে স্পর্শ করার অর্থ শ্লীলতাহানি: হাইকোর্ট
আবেদনকারীর আর্জি খারিজ করল আদালত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 25, 2021 | 5:07 PM

মুম্বই : মধ্যরাতে অনুমতি ছাড়া কোনও মহিলার শরীরের যে কোনও অংশে স্পর্শ করাই শ্লীলতাহানীর সমান। এক মামলার শুনানিতে এমনটাই পর্যবেক্ষণ বম্বে হাইকোর্টের। মহারাষ্ট্রের জালনা জেলার এক ব্যক্তি আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু ঘটনার বর্ণনা শুনে বিচারপতি জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছে সেটাই বহাল থাকবে।

বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চে চলছিল ওই মামলার শুনানি। বিচারপতি মুকুন্দ জি শিউলিকর জানিয়েছেন, যে ঘটনা ঘটেছে তাতে মহিলার শ্লীলতাহানি হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালত যে রায় দিয়েছিল সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বছর ৩৬-এর ওই ব্যক্তি। নিম্ন আদালতের রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৫১ ও ৩৫৪ এ ধারায় শাস্তি ধার্য করা হয়েছিল। উচ্চ আদালত সেই নির্দেশই বহাল রেখেছে।

ঠিক কী ঘটেছিল

২০১৪ সালের ৪ জুলাই একটি এফআইআর হয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই এই মামলা। জানা গিয়েছে এক মহিলা ও তাঁর দিদি শাশুড়ি বাড়িতে ছিলেন। মহিলার স্বামী গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সময় এই ঘটনা ঘটে। ওই মহিলা অভিযোগে জানান, রাত ৮ টা নাগাদ এক ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে এসে জিজ্ঞেস করেন তাঁর স্বামী কখন ফিরবেন। মহিলা জানান, তাঁর স্বামী রাতে ফিরবেন না।

এরপর রাত ১১ টা নাগাদ ফের অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই বাড়িতে আসেন। মহিলা জানিয়েছেন তাঁর দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল না। রাতে হঠাৎই তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর পায়ে কেউ হাত দিচ্ছে। এরপর ঘুম ভেঙে উঠে তিনি দেখেন, তাঁর পায়ের কাছে বসে আছে ওই ব্যক্তি। এরপর তিনি ও তাঁর দিদিশাশুড়ি দৌড়ে পালিয়ে যান। স্বামীকে ফোন করে ওই মহিলা এসব কথা জানান সেই রাতেই। পরের দিন গ্রামের বাড়ি থেকে ফিরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলার স্বামী।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জানান মধ্যরাতে কোনও মহিলার অনুমতি ছাড়া তাঁর যে কোন অঙ্গ স্পর্শ করা শ্লীলতাহানি সমান। অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনও অনুমতি ছাড়াই মাঝরাতে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন। অভিযোগকারিণীর বিছানায় বসেও ছিলেন। তা থেকে স্পষ্ট হয় যে ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্য ভালো ছিল না। তাই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে সঠিক রায় দিয়েছে নিম্ন আদালত।

বম্বে হাইকোর্টের বিতর্কিত ‘স্কিন-টু-স্কিন’ পর্যবেক্ষণ

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি এক নাবালিকার যৌন হেনস্থা সম্পর্কিত মামলায় বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালার পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিতর্ক হয়। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ না হলে তাকে পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। তারপর নিম্ন আদালতের রায় সংশোধন করে অভিযুক্তের সাজা কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। সেই পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল জানিয়েছিলেন, হাইকোর্টের এই নির্দেশ বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করতে পারে। তার পর ২৭ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট ওই সংশ্লিষ্ট রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। অ্যাটর্নি জেনারেলকে সেই রায়ের প্রেক্ষিতে আবেদনের অনুমতি দেয় দেশের শীর্ষ আদালত।

সম্প্রতি বম্বে হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। জানুয়ারি মাসে বম্বে হাইকোর্টের ওই রায়কে ‘আইনের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা’ বলে মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, শুধু ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ নয়, নাবালিকার সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করতে যে কোনও ধরনের স্পর্শই পকসো আইনের আওতায় পড়বে।

আরও পড়ুন : PM Modi Donates party: দলীয় তহবিলে চাঁদা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! টাকার অঙ্ক শুনলে…..