AEPS Block: টিভি৯ বাংলার খবরের জের, আঙুলের ছাপে টাকা তোলা বন্ধ করল NPCI
Online Fraud: গ্রাম-গঞ্জের মানুষদের অ্যাকাউন্ট হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে যেতে শুরু করেছিল। তাদের দাবি ছিল, কোনও প্রতারণামূলক লিঙ্কে তো তারা ক্লিক করেননি। তাহলে প্রতারকরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কী করে? তদন্তে নেমে টিভি৯ বাংলাই প্রথম জানিয়েছিল যে প্রতারকরা আধার কার্ডে দেওয়া বায়োমেট্রিকের তথ্য চুরি করে এইপিএস-র মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে।
কলকাতা: কোনও ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক বা অ্যাপ ডাউনলোড নয়, আপনা-আপনিই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সর্বস্বাস্ত হয়ে যাচ্ছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ। টিভি৯ বাংলাই প্রথম এই প্রতারণার হদিস দিয়েছিল। জানিয়েছিল, কীভাবে আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে নিয়ে জালিয়াতি করছে প্রতারকরা। আঙুলের ছাপ চুরি করে এই বিরাট প্রতারণা চক্রের পর্দাফাসের পরই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। এবার টিভি৯ বাংলার খবরের প্রভাব। দেশজুড়ে আধার কার্ডের তথ্য হাতিয়ে জালিয়াতি রুখতে এইপিএস (AEPS) ব্যবস্থা বন্ধের নির্দেশ দিল ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (National Payments Corporation of India)।
চলতি বছরের পুজোর আগেই খোঁজ মিলেছিল বিরাট বড় এক প্রতারণা চক্রের। গ্রাম-গঞ্জের মানুষদের অ্যাকাউন্ট হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে যেতে শুরু করেছিল। তাদের দাবি ছিল, কোনও প্রতারণামূলক লিঙ্কে তো তারা ক্লিক করেননি। তাহলে প্রতারকরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কী করে? তদন্তে নেমে টিভি৯ বাংলাই প্রথম জানিয়েছিল যে প্রতারকরা আধার কার্ডে দেওয়া বায়োমেট্রিকের তথ্য চুরি করে এইপিএস-র মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এই খবর সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয়।
অবশেষে টিভি৯ বাংলার খবরের জেরেই টনক নড়ল। ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার তরফে প্রতারণা রুখতে এইপিএস ব্যবস্থাই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। এনপিসিআই-র নির্দেশের পরই এইপিএস ব্যবস্থা বন্ধ করার কাজ শুরু করে দিয়েছে ব্যাঙ্ক। এইপিএস ব্লক করার কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক। এতদিন সব গ্রাহকদেরই এইপিএস ব্যবস্থা চালু থাকত, কিন্তু এবার থেকে সেই সুবিধা আর থাকবে না। ফলে আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে প্রতারকরা আর টাকা তুলে নিতে পারবে না। তবে কোনও গ্রাহক চাইলে ব্যাঙ্কের এইপিএস ব্যবস্থা চালু রাখার আবেদন জানাতে পারেন।
প্রসঙ্গত, এইপিএস (AEPS) হল আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার ব্যবস্থা বা আধার এনেবেলড পেমেন্ট সিস্টেম। আধার কার্ডে থাকা বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে, এআইপিএসের মাধ্যমে একদফায় ১০ হাজার টাকা অবধি তোলা যায়। প্রতারকরা এভাবেই দিনে দফায় দফায় ১০ হাজার টাকা করে তুলে নিয়ে অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিচ্ছিল। মূলত জমির নথি বা দলিলের ক্ষেত্রে যখন কোনও ব্যক্তি নিজের আঙুলের ছাপ দিচ্ছিলেন, তখন প্রতারকরা ওই তথ্য হাতিয়ে নিয়েই প্রতারণা করছিল।
এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও মঞ্চের প্রতিনিধি সৌম্য দত্ত বলেন, “এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। আগ্নেয়গিরির উপরে গ্রাহকরা বসেছিলেন। প্রায়সময়ই এই ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। আমরা দেখছিলাম, আঙুলের ছাপ দিয়ে প্রতারণার ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে। এরপরই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নরের কাছে চিঠি লিখি। আধার কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্টের বাধ্যতামূলক লিঙ্কিং বন্ধ করার আবেদন জানাই। গত ২৬ অক্টোবর ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার তরফে বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে চিঠি পাঠিয়ে এইপিএস ব্যবস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”