TV9-এর WITT সামিট, গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর হিসাবে ভারতের উত্থানের উদযাপন

TV9’s WITT Summit: ২০৪৭ সালের মধ্যে এক শক্তিশালী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত গঠন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই সম্মেলনের এবারের থিম রাখা হয়েছে, 'ভারত: পরবর্তী বড় লাফের জন্য প্রস্তুত'। এবারের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্বকে তুলে ধরা হবে। দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন এই সময়ের সবথেকে বড় চিন্তাবিদ এবং প্রভাবশালীরা।

TV9-এর WITT সামিট, গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বর হিসাবে ভারতের উত্থানের উদযাপন
জি২০ সভাপতিত্ব ছিল ভারতের নেতৃত্বের সবথেকে বড় প্রমাণImage Credit source: PTI
Follow Us:
| Updated on: Feb 20, 2024 | 10:07 PM

ফারোজান আখতার, নয়া দিল্লি: ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে TV9 নেটওয়ার্কের বার্ষিক কনক্লেভ, ‘হোয়াট ইন্ডিয়া থিঙ্কস টুডে’ গ্লোবাল সামিটের দ্বিতীয় সংস্করণ। ২০৪৭ সালের মধ্যে এক শক্তিশালী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত গঠন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন। সেই স্বপ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই সম্মেলনের এবারের থিম রাখা হয়েছে, ‘ভারত: পরবর্তী বড় লাফের জন্য প্রস্তুত’। এবারের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের নেতৃত্বকে তুলে ধরা হবে। দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন এই সময়ের সবথেকে বড় চিন্তাবিদ এবং প্রভাবশালীরা।

ভারতের বৃদ্ধির কাহিনি

যুদ্ধ, মহামারি এবং আর্থিক অনিশ্চয়তায় বিধ্বস্ত বিশ্বে, স্থিতিশীলতা এবং বৃদ্ধির পতাকা বহন করছে ভারতই। বর্তমানে আমাদের দেশ বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। আশা করা হচ্ছে, চলতি দশকের শেষেই এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে ভারত। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের এই বৃদ্ধি, চিনকে কড়া লড়াই ছুড়ে দিয়েছে। ‘গ্লোবাল সাউথ’, অর্থাৎ, আফ্রিকা, এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশগুলির নেতৃত্ব কে দেবে, তাই নিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে এশিয়ার এই দুই বৃহৎ শক্তির মধ্যে।

জি২০-তে ভারত দিয়েছে নেতৃত্বের পরিচয়

বর্তমানে, গ্লোবাল সাউথের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ভারত। বিভিন্ন বহুপাক্ষিক ফোরামে গ্লোবাল সাউথের স্বার্থ এবং এই দেশগুলির সামন থাকা চ্যালেঞ্জগুলি তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত বছর ভারত সফলভাবে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করেছে। আর এই সাফল্যই গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে দিয়েছে ভারতকে। জি২০-র সভাপতি থাকাকালীন, গ্লোবাল সাউথের সমস্যাগুলি বারংবার তুলে ধরা হয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়নকে জি২০-র পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমের হাজার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল আমদানি করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্ত, অস্থির সময়ে তেল ও গ্যাসের বাজারে স্থিতিশীলতা এনেছে। বিশ্বব্যাপী মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হয়েছে।

দরিদ্র দেশগুলির অগ্রাধিকারের বিষয়গুলিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে ভারত। আসলে, আজ তারা যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হচ্ছে, গত শতাব্দীর ছয় ও সাতের দশকে ভারতও সেই ঘটনার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। গ্লোবাল সাউথের নেতা হিসাবে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলাকেও অগ্রাধিকার দিয়েছে ভারত। মহামারির সময়ে, ভারত ১০০টি দেশে ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে। এই ঘটনাও ভারত সম্পর্কে বাকি বিশ্বের শ্রদ্ধা বাড়িয়ে দিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধ নিয়ে গোটা বিশ্ব দ্বিধাবিভক্ত। কিন্তু, ভারত কোনও পক্ষেই যোগ দেয়নি। বরং বারবার যুদ্ধ ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির উপর জোর দিয়েছে।

কীসের জোরে গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সবার আগে রয়েছে ভারত?

বিশ্বগুরুর আসন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে স্থানচ্যুত করার জন্য উত্তরের দিকে তাকাচ্ছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্যোগী অন্যান্য দেশের প্রয়োজন মেটাতে। তাই তিনি তাকাচ্ছেন দক্ষিণে। এর থেকেই স্পষ্ট কোন দেশ কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আসলে প্রধানমন্ত্রী মোদী বারবারই জানিয়েছেন, তাঁর সরকার ভারতের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর দর্শনে বিশ্বাসী। অর্থাৎ, গোটা বিশ্বই আত্মীয়। এই বিশ্বাস নিয়ে যারা চলে, তাদের কাছ থেকে সহযোগিতামূলক নেতৃত্ব পাওয়াই স্বাভাবিক। অন্যদিকে, চিন মনে করে, বিশ্বের কল্যাণ কীসে হবে, তা তারাই সবথেকে ভাল বোঝে। তাই তারা এই বিষয়ে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। কূটনৈতিক ফাঁদ, পরিকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা ছোট দেশগুলিতে তাদের সম্প্রসারণবাদী নীতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

গ্লোবাল সাউথে চ্যালেঞ্জ অনেক রয়েছে। শক্তিশালী অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জোরে এই গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদীর গোটা বিশ্বের সঙ্গে সংযোগের ক্ষমতা রয়েছে। বিদেশী বেশ কিছু বিষয়ে দেশিয় রাজনীতিতে ঐকমত্য থাকাটাও ভারতের পক্ষে গিয়েছে। ভারতকে যে নেতা হিসেবে দেখছে বিশ্ব, তার সবথেকে বড় প্রমাণ ভারতের নীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ অন্যান্য দেশগুলির আস্থা দেখিয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের বিরুদ্ধে পাল্টা শক্তি হিসেবে ভারতকেই বেছে নিয়েছে বিশ্ব।