ধনখড়ের সফরনামা: প্রথম দিন ৩ সাক্ষাৎ, দ্বিতীয়ায় কী অপেক্ষা করছে? দিল্লিতে নজর তৃণমূলের

মঙ্গলবার রাতেই দিল্লি পৌঁছনর পর এ দিন প্রথমে কেন্দ্রের কয়লা বিষয়ক সংসদীয় মন্ত্রী, পরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি-পর্যটন মন্ত্রী, এবং শেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

ধনখড়ের সফরনামা: প্রথম দিন ৩ সাক্ষাৎ, দ্বিতীয়ায় কী অপেক্ষা করছে? দিল্লিতে নজর তৃণমূলের
ছবি-টুইটার
Follow Us:
| Updated on: Jun 16, 2021 | 10:07 PM

নয়া দিল্লি: রাজ্যে নির্বাচন মেটার পর থেকেই ‘ভোট পরবর্তী হিংসার’ কথা লেগে রয়েছে রাজ্যপালের ঠোঁটে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে একটি বিস্ফোরক চিঠি দিয়েই দিল্লি উড়ে গিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। কেন গিয়েছেন, উদ্দেশ্য বা বিধেয় কী, তা জানানো হয়নি। তবে এতে যে রাজ্য-রাজ্যভবন তরজা আরেকধাপ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা দৃশ্যতই স্পষ্ট। তাঁর সফরকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। মঙ্গলবার রাতেই দিল্লি পৌঁছনর পর এ দিন প্রথমে কেন্দ্রের কয়লা বিষয়ক সংসদীয় মন্ত্রী, পরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি-পর্যটন মন্ত্রী, এবং শেষে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ প্রথমে কয়লা বিষয়ক সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। কিছু সময় পর ফিরে আসেন বঙ্গ ভবনে। সেখানেই থাকছেন তিনি। এরপর দুপুর সাড়ে ১২ টায় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে বঙ্গ ভবনে এসে হাজির হন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল। ধনখড় টুইটে লেখেন, কলকাতার যাদুঘর এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর দুপুর ২ টো ৪০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন অরুণ মিশ্রের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল। টুইটারে লেখেন, ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’।

শোনা যাচ্ছে, এই সফরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন রাজ্যপাল। কিন্তু কেন? এই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান যেভাবে নানাবিধ সময় সুর চড়িয়েছেন, তাতে এই বিষয়ে যে তিনি ‘নালিশ’ জানাতে পারেন, এমন অনুমান সহজেই করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

কারণ, দিল্লিতে পা রেখেই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার রাজ্যের নিষ্ক্রিয়তার দিকে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। রাজ্যপালকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, “মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য বা স্বরাষ্ট্র দফতরের কেউ অথবা মুখ্যসচিব; কেউ কি হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়েছেন? না। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? না। কোনও অভিযোগ শোনা হয়েছে বা পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে? না। এর থেকে কি অনেক বিষয় স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে না! আমি প্রত্যেকটি বিষয়ে নজর রেখেছি এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরও পড়ুন: জামাই গুলকিট নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছে: সায়নী, রাজ্যপাল খায় না গায়ে মাখে উনি জানেন না: বিজেপি

এই নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় পালটা দিয়ে বলেছেন, “রাজ্যের শাসকদল ২০০-র বেশি আসন পাওয়ার কারণেই রাজ্যপাল এহেন আচরণ করছেন। দিল্লিতে যেভাবে তিনি মন্ত্রীদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন, এমন কাজ রাজ্যপাল শোভা দেয় না”, বক্তব্য সুখেন্দুর।

সরকারিভাবে রাজভবনের তরফে রাজ্যপালের সফর সম্পর্কে কিছু না জানানো হলেও তাঁর আচমকা দিল্লি যাওয়ার উদ্দেশ্যটা ঠিক কী, সেই ইঙ্গিত অবশ্য জগদীপ ধনখড়ের বক্তব্যেই স্পষ্ট। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও দিল্লিতে ঘটে চলা ঘটনাপ্রবাহের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

আরও পড়ুন: রাজভবনের ‘বারান্দায় রোদ্দুর দেখছেন রাজ্যপাল’, শুভেন্দু-ধনখড় বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ তৃণমূলের