Swara Bhaskar Marriage: ‘ইসলামে বৈধ নয়’, স্বরা ভাস্করের বিয়ে নিয়ে কী বলছেন বিশিষ্টরা?

Swara Bhaskar Marriage: স্বরা ভাস্করের বিয়ে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। এক ইসলাম গবেষক এই বিয়েকে অবৈধ বলেছেন।

Swara Bhaskar Marriage: 'ইসলামে বৈধ নয়', স্বরা ভাস্করের বিয়ে নিয়ে কী বলছেন বিশিষ্টরা?
ছবি সৌজন্যে: টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 20, 2023 | 9:02 PM

নয়া দিল্লি: বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর (Swara Bhaskar)। পাত্র সমাজবাদী পার্টির মহারাষ্ট্র ও মুম্বইয়ের যুব সংগঠনের সভাপতি ফাহাদ আহমেদ (Fahad Ahmed)। গত মাসের ৬ তারিখই আইনগত ভাবে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি টুইটারে এই খবর জানিয়েছেন স্বরা। ধর্ম ভিন্ন, কিন্তু মন এক। দুই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর আইনগতভাবে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার জন্য দেশের ‘বিশেষ বিবাহ আইনের’ প্রশংসাও করেছেন তিনি। তবে স্বরা ভাস্করের বিয়েকে অবৈধ বলে আখ্যা দিচ্ছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ। সে সব সমালোচকদের আবার পাল্টা আক্রমণ করেছেন নাগরিকদের একাংশ। যাঁরা স্বরা ভাস্করের বিয়ের সমালোচনা করেছেন এবং অবৈধ আখ্যা দিয়েছেন তাঁদের নারী বিদ্বেষী এবং লিঙ্গবৈষম্যকারী বলে অনেকেই তোপ দেগেছেন।

শিকাগোর ইসলাম বিষয়ক গবেষক ইয়াসির নাদিম আল ওয়াজিদি টুইটারে স্বরা ভাস্করের বিয়ে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি লিখেছেন, “যদি স্বরা ভাস্কর মুসলিম না হন এবং তাঁর স্বামী মুসলিম হন তবে এই বিয়ে ইসলামের দিকে থেকে বৈধ নয়। আল্লাহ বলেন, বহু ঈশ্বরবাদী নারীদের বিয়ে না করতে। যদি সে শুধুমাত্র বিয়ের জন্য ইসলাম গ্রহণ করে তবে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।” এই মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। কিন্তু এই বিয়ের বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করছেন একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। স্বরা ভাস্করের বিবাহ সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে মতামত জানতে টিভি৯ বাংলা যোগাযোগ করেছিল সমাজকর্মী তথা শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞাপনের অধ্যাপক আব্দুল মোতিন। তাঁদের সবারই মত এই বিয়ে আইনগতভাবে বৈধ।

মীরতুন নাহার জানিয়েছেন, যেখানে বিশেষ বিবাহ আইনে তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন সেখানে কোনও ধর্মীয় আইনে তা বৈধ না অবৈধ সেই প্রশ্ন থাকেই না। তিনি বলেছেন, “ইসলাম ধর্ম মতে যদি কারোর বিয়ে করতে অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য ভারতে বিশেষ বিবাহ আইন রয়েছে। পাত্র-পাত্রী বিয়ে করতে চাইছেন। যদি ধর্ম মতে বা সমাজ সম্মত মতে তাঁরা বিয়ে করতে না পারেন, তাঁদের ইচ্ছেমতো বিয়ের করার সুযোগ দেওয়ার জন্যই তো এই বিশেষ বিবাহ আইন তৈরি হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমি মনে করি আর এই আইনের অধীনে বিয়ে করলে যে সব বাধা ধর্ম বা জাতপাতের দিক থেকে আসে সেগুলি বাধা হিসেবেই গণ্য হয় না।” এদিকে এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞাপনের অধ্যাপক আব্দুল মোতিন বলেছেন, ” ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর পাত্র পাত্রীদের বিয়ের জন্য ভারতে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। যেখানে বিশেষ বিবাহ আইনে দু’জন বিয়ে করেছেন সেখানে তৃতীয় ব্যক্তির কোনও মন্তব্যই প্রযোজ্য নয়।”

ইয়াসিরের এহেন মন্তব্যকে বিশিষ্ট জনদের কেউই মান্যতা দেয়নি। নাগরিক সমাজের অনেকেই ইয়াসিরের এই ধরনের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন। স্বরা ও ফাহাদের বিয়ের সমর্থন জানিয়ে জনপ্রিয় আরজে সায়েমা গবেষক ওয়াজিদির চিন্তাভাবনার তীব্র নিন্দা করেছেন। সায়েমা লিখেছেন, “আপনার কোরানের উদ্ধৃতি সঠিক ছিল কিন্তু আপনি একটি অবাঞ্ছিত উপদেশ দিয়েছিলেন। স্বরা বা ফাহাদ কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিল? আমাদের চাপিয়ে দেওয়া বন্ধ করতে হবে। আল্লাহ কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছে? আপনার এই এগিয়ে এসে উত্থাপন করাই ইসলামের জন্য ক্ষতিকর। আমি আশা করি আপনি বুঝবেন।”

সায়েমের টুইটের জবাবে আরও একটি টুইট করেন গবেষক ইয়াসি। তিনি লেখেন, “আমার টুইটগুলো ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় ছিল না। আপনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে আমার কোরানের উদ্ধৃতি ঠিক ছিল। তাই প্রকাশ্যে এই বিয়ে করাটা পাপ ছিল।” এখানেই শেষ হয়নি। টুইটে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থেকেছে। সায়েমা ফের লেখেন, “আর আপনি কে? অন্যদের বিচার করার জন্য আল্লাহ কাউকে মনোনীত করেছেন? আমরা আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য,শুধু আল্লাহর কাছেই। যতক্ষণ না কেউ আপনার মতামত জিজ্ঞাসা করে, ততক্ষণ নিজের কাছে রাখুন। আর একজন ভালো মুসলিম হন।”

ইয়াসির ফের লিখেছেন, “আমি এমন একজন মানুষ যাকে আপনার মতো উদারপন্থীরা সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে। আমি এমন একজন ব্যক্তি যিনি প্রায়শই আপনার মতো ইসলামের মিথ্যা ব্যাখ্যা উন্মোচন করেন। আমি এমন একজন ব্যক্তি যে যখন আরজেরা ইসলামের ব্যাখ্যা শুরু করবে তখন কথা বলবে। আপনি নিজে বিনোদন ব্যবসায় থাকুন এবং বিশেষজ্ঞদের জন্য ইসলাম ছেড়ে দিন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “স্বরা ভাস্করের বৈধ, কিন্তু অইসলামিক বিয়ে আমাদের মুসলিমদের স্মরণ করিয়ে দেওয়ার একটি সুযোগ। যা তিনি নিষিদ্ধ করেছেন তা স্বাভাবিক করা বন্ধ করা হোক। কোরানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, একজন মুসলিম পুরুষ মূর্তিপূজারী মহিলাকে বিয়ে করতে পারেন না। ‘ফ্রি চয়েস’ এত মুক্ত নয়।”