দেশে ভ্যাকসিন আসার জন্যই বাড়ল সংক্রমণ, দাবি বিজ্ঞানীদের

পরিসংখ্যান বলছে মার্চ মাসের শেষ ও এপ্রিলের শুরু, তখনই চড়চড়িয়ে ওপরে উঠতে শুরু করল করোনার গ্রাফ। কিন্তু কেন?

দেশে ভ্যাকসিন আসার জন্যই বাড়ল সংক্রমণ, দাবি বিজ্ঞানীদের
ছবি- পিটিআই
Follow Us:
| Updated on: Apr 27, 2021 | 12:04 AM

নয়া দিল্লি: মহা বিপদ! ভারতের করোনা (COVID) পরিস্থিতি যে অত্যন্ত সঙ্গীন তা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। যে হারে দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে সেকেন্ডে সেকেন্ডে ভাইরাসের মারণ থাবার স্বীকার হচ্ছেন এক একজন। রোজই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাচ্ছে। দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো মেট্রো শহরের অবস্থা শোচনীয়। সেখানে সৎকার করারও জায়গার অভাব হচ্ছে। রাজধানীতে বাড়তি অসুবিধা প্রাণবায়ু। চিকিৎসকদের চোখের সামনে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হচ্ছে করোনা আক্রান্তর। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। পরিসংখ্যান বলছে মার্চ মাসের শেষ ও এপ্রিলের শুরু, তখনই চড়চড়িয়ে ওপরে উঠতে শুরু করল করোনার গ্রাফ। কিন্তু কেন?

চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা একাধিক কারণকে দায়ী করছেন ভাইরাসের এই ক্রমবর্ধ্বমান শিকারের নেপথ্যে। তার মধ্যে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ উদাসীনতা। এ ছাড়া স্ট্রেন ও সাধারণ মানুষের অবাধ বিচরণ এই সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা।

মিউট্যান্ট স্ট্রেন: দেশে করোনার এই বাড়বাড়ন্তের কারণ কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যাবে বারবার করোনা নিজের রূপ বদলে ফিরে এসেছে। অভিযোজিত হয়ে কখনও ব্রাজিলের রূপ, কখনও দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা কখনও ব্রিটেনের রূপ নিয়েছে সে। তবে ভারতে ছড়িয়েছে করোনার আরও একটি রূপ। সেটি হল ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন। যা দুটি স্ট্রেনের মিশ্রণ। ই৪৮৪কিউ (E484Q) ও এল ৪২৪আর (L424R) এই দুই স্ট্রেন মিলে তৃতীয় স্ট্রেন বি.১.৬১৭ তৈরি হয়েছে। যা আগের থেকে বেশি ক্ষতিকারক। এই নতুন স্ট্রেনের ফলেই করোনা সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।

অবাধ বিচরণ: প্রথম সংক্রমণের ঢেউ কোনওভাবে রুখে দেওয়ার পর আসতে আসতে উঠে গিয়েছিল লকডাউন। আনলক পর্বে খুলেছে কারখানা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। গণপরিবহণে শিকেয় সামাজিক দূরত্ব। ঠাসাঠাসি ভিড়, মিছিল, মিটি, মেলা, সবেতেই অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। আর এই কারণেই অনুকূল পরিস্থিতিতে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। নয়া দিল্লির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শ্রীনাথ রেড্ডি বলেন, “করোনা ছড়াচ্ছে এমন একটা পরিস্থিতিতে যেখানে অবাধ বিচরণ করছেন সাধারণ মানুষ।” প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্য়ালয়ের বিশেষজ্ঞ রামানন লক্ষীনারায়ণেরও একই মত। রাজনৈতিক সমাবেশ-সহ একাধিক জমায়েতেই বেড়েছে করোনা।

ভ্যাকসিনের আগমন: করোনা সংক্রমণের জেরে আতঙ্কে যখন সকলের গলা শুকিয়ে আসছিল, তখনই দেশে আসে জোড়া প্রতিষেধক। যা কার্যত ‘রিল্যাক্স’ মোডে নিয়ে যায় আম আদমীকে। উদাসীনতায় মাস্ক ঝুলল থুতনিতে আর করোনাবিধি একেবারে ভুলে মেরে দিল একটা বড় অংশের সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি একেবারে উপযোগী পেয়ে লাফিয়ে বাড়ল সংক্রমণ। যা রুখতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞদের একাংশের। লক্ষীনারায়ণ বলেন, “ভ্যাকসিন আসায় রিল্যাক্স মোডে চলে গিয়েছেন সকলে।” যা সাহায্য করেছে ভাইরাসকে।

আরও পড়ুন: দূরত্ববিধি না মানলে এক আক্রান্ত ভোগাতে পারেন ৪০৬ জনকে, বলছে আইসিএমআর