‘বিয়ে করুন না হলে জেলে যান’ পকসো আইনে অভিযুক্তকে ‘বেনজির’ পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের
মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিক প্রোডাকশান কোম্পানির কর্মী মোহিত সুভাষ চবন, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণের মামলায় জামিনের আবেদন করেন।
নয়া দিল্লি: ধর্ষণের এক মামলার পর্যবেক্ষণে ‘বেনজির’ মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। যা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিক প্রোডাকশান কোম্পানির কর্মী মোহিত সুভাষ চবন, তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণের মামলায় জামিনের আবেদন করেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে এই মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্তকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি ওকে বিয়ে করবেন?” স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে সুভাষ চবনের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় আগাম জামিন চেয়েছিলেন সুভাষ।
জামিনে আবেদনকারীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে বলেন, “আপনি যদি ওকে বিয়ে করেন, তাহলে আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পারি। যদি তা না হয় আপনি চাকরি হারাবেন এবং জেলেও যাবেন।” তখন আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, মক্কেলের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে জানাবেন তিনি। এরপর প্রধান বিচারপতির আরও বলেন,”আপনি একজন সরকারি চাকুরিজীবী, আপনার এই কাণ্ড ঘটানোর আগে ভাবা উচিত ছিল। তবে, আমরা বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছি না। আপনার ইচ্ছে আমাদের জানান।”
এ প্রসঙ্গে আবেদনকারীর দাবি, প্রথমে ওই তরুণীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু এখন বিবাহিত হওয়ায় তাঁকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। আবেদনকারী বলেন,”আমি একজন সরকারি চাকুরিজীবী, গ্রেফতার হলে এমনিই আমায় সাসপেন্ড হতে হবে।” অভিযুক্তের এই আশঙ্কায় প্রধান বিচারপতির আশ্বাস, সেই কারণেই তাঁকে বিয়ে করার বিষয়ে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য ৪ সপ্তাহের জন্য তাঁর গ্রেফতারি স্থগিত রাখার কথা বলেন তিনি। আদালতের যুক্তি, তাহলে সাধারণ জামিনের আবেদন করতে পারবেন অভিযুক্ত। এরপরই ওই ব্যক্তির গ্রেফতারি ৪ সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত সুভাষ চবনকে এর আগে আগাম জামিন দিয়েছিল ট্রায়াল কোর্ট। কিন্তু তরুণীর পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে বোম্বে কোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ খারিজ করে দেয় চবনের আগাম জামিন। এরপর সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হন সুভাষ চবন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়, ওই তরুণীকে প্রতিদিন বাড়ি থেকে স্কুল পর্যন্ত নজর রাখতেন সুভাষ। এরপর ওই তরুণীকে বাড়িতে ঢুকে সুভাষ চবন ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। অ্যাসিড হামলা ও ভাইকে খুন করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। এরপর চবনের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে সম্মতি জানান ওই তরুণী। বিষয়টি জানাজানি হতে অভিযুক্তর মায়ের মধ্যস্ততায় সিদ্ধান্ত হয়, তরুণী ১৮ বছর বয়স হলে বিয়ে করবেন সুভাষ। এরপরও তাঁদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয় বলে দাবি তরুণীর। অভিযোগ, তরুণীর ১৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হননি সুভাষ।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগেই রাজ্যে উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ, সামাল দিতে মেয়াদ বাড়ল ‘লকডাউন’ বিধির