ভারতের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার, চিনি রপ্তানিতে দেওয়া ভর্তুকি নিয়মবিরুদ্ধ
বিশ্ব বানিণিজ্যিক সংগঠনের এই কমিটি জানিয়েছে, 'আমরা দেখতে পেয়েছি যে ভারত কৃষির সমঝোতার অনুচ্ছেদ ৭.২ (বি)এর অধীনে নিজেদের দায়িত্বের অনুরূপ কাজ করছে না।' এই ব্যাপারে ভারত নিজেদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, চিনি শিল্পের জন্য জারি করা ভারতের বর্তমান কোনও নীতির উপর বিশ্ব বাণিজ্যিক সংগঠন কমিটির সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব পড়বে না।
নয়া দিল্লি: ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ আনল বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা (WTO)। তাদের সমস্যা সমাধান কমিটি মঙ্গলবার জানিয়েছে, ভারত যে ভাবে দেশীয় চিনি শিল্পকে সমর্থন করছে, তা নিয়ম বিরুদ্ধ। তবে ভারত এই অভিযোগকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। ২০১৯-এ ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া এবং গুয়েতেমালার মতো দেশ বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার সমস্যা সমাধান কমিটির কাছে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল ভারত যেভাবে দেশের চিনি রপ্তানিতে ভর্তুকি দেয় তা বিশ্ব বাণিজ্যের নিয়মকে উলঙ্ঘন করে। প্রসঙ্গত ব্রাজিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিনি উৎপাদনকারী এবং রপ্তানিকারক দেশ।
দেশের চিনি শিল্পে পড়বে না কমিটির সিদ্ধান্তের প্রভাব
ডব্লিউটিও নিজেদের বয়ানে বলেছে, এই ব্যাপারে কমিটির রিপোর্ট জারি করা হয়েছে। তিনটি দেশেরই অভিযোগের উপর আলাদা আলাদাভাবে বিচার করে বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা জানিয়েছে, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে ভারত কৃষির সমঝোতার অনুচ্ছেদ ৭.২ (বি)এর অধীনে নিজেদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করছে না।’ এই ব্যাপারে ভারত নিজেদের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, চিনি শিল্পের জন্য জারি করা ভারতের বর্তমান নীতির উপর বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা কমিটির সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব পড়বে না।
দেশ ও কৃষকের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
ভারত নিজেদের বয়ানে বলেছে, দেশ নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য সমস্ত জরুরী পদক্ষেপ করেছে আর চাষীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ডব্লিউটিও-র রিপোর্টের বিরুদ্ধে আবেদন করেছে যাতে কোনও অ্যাকশন নেওয়া না হয়। ভারত জানিয়েছে, ওই তিনটি দেশ ভুল দাবি করেছিল যে ভারত আখ উৎপাদনকারীদের যে ঘরোয়া সহায়তা দেয়, তা বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার ঠিক করে দেওয়া সীমার অনেক বেশি পাশাপাশি ভারত চিনি কলগুলিকে রপ্তানির ভর্তুকি দেয়। কেন্দ্রীয় সরকার এই ভর্তুকি দেওয়া আগেই বন্ধ করেছে।
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকার চিনি কলগুলির কাছে মাসিক রপ্তানির তথ্য চেয়েছিল, যাতে যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে সরকার রপ্তানির উপর ভর্তুকি দিতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যদি চিনির দাম কমে যায়, তাহলে সরকার আরও একবার চিনি রপ্তানির উপর ভর্তুকি দেওয়ার কথা ভাবতে পারে। এরজন্য সরকার সমস্ত চিনি কলগুলিকে প্রত্যেক মাসে তাদের রপ্তানি হওয়া চিনির পরিসংখ্যান দিতে বলেছে।
কিছুদিন আগেই সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল তারা চিনি রপ্তানির উপর নজর রাখবে। মিলগুলিকে চুক্তির এবং রপ্তানির তথ্য সরবরাহ করতে হবে। যদি প্রয়োজন পড়ে তবেই সরকার মিলগুলিকে রপ্তানির উপর ভর্তুকি দেবে। প্রসঙ্গত গত আগস্ট মাস থেকে সরকার রপ্তানির উপর ভর্তুকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়ার কারণে বন্ধ করা হয়েছিল চিনির ভর্তুকি। চিনি কলগুলিকে বেশি করে চিনি রপ্তানি করতে বলা হয়েছিল। গত বছর ৭২ লাখ টন চিনি রপ্তানি হয়েছিল।যার মধ্যে সরকার প্রায় ৫০ লাখ টন চিনির জন্য ভর্তুকি প্রদান করেছিল।
ডব্লিউটিও-র আইনগুলি কী
নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থার সদস্য দেশগুলি যদি মনে করে কোনও দেশের চিনি রপ্তানির কোনও বিশেষ ধরনের উপায় ডব্লিউটিও-র নির্ধারিত নিয়মের বিরুদ্ধে, তাহলে তারা জেনিভায় অবস্থিত সংস্থার অফিসে মামলা দায়ের করতে পারে। বিতর্ক সমাধানের প্রথম চরণে দ্বিপাক্ষিক বিচার-বিমর্শ প্রথম প্রক্রিয়া। যদি দু পক্ষই মামলার সমাধান করতে না পারে, তাহলে তারা সমস্যা সমাধান কমিটির কাছে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: Petrol Price Today: ফের কমল অপরিশোধিত তেলের দাম, টানা ৪২ দিন অপরিবর্তিত পেট্রোল ডিজেলের দাম