Delhi Flood: ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙে শহরের রাস্তায় যমুনার জল, জারি ১৪৪ ধারা, মহা-বিপর্যয়ের মুখে দিল্লি
Yamuna water enters Delhi: ইতিমধ্য়েই কাশ্মীরি গেট, মজনু কি টিলা-সহ দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় ঢুতে শুরু করেছে বন্যার জল। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজধানীর বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ফৌজদারি বিধির ১৪৪ ধারা আরোপ করেছে দিল্লি পুলিশ। নীচু এলাকার বাসিন্দাদের আপাতত বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ এলাকায় চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।
নয়া দিল্লি: গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে যমুনা নদী। বুধবার (১২ জুলাই), যমুনা নদীর জলস্তর ২০৭.৭১ মিটার উচ্চতা স্পর্শ করেছে। ভেঙে গিয়েছে ৪৫ বছরের পুরানো রেকর্ড। এর আগে ১৯৭৮ সালে, যমুনার জলস্তর ২০৪.৭৯ মিটারে পৌঁছেছিল। যমুনার এই রেকর্ড ভাঙা উত্থানে দিল্লিতে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্য়েই কাশ্মীরি গেট, মজনু কি টিলা-সহ দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় ঢুতে শুরু করেছে বন্যার জল। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে রাজধানীর বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ফৌজদারি বিধির ১৪৪ ধারা আরোপ করেছে দিল্লি পুলিশ। এই বিষয়ে এদিন বিকেলে এক জরুরি বৈঠক করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। নীচু এলাকার বাসিন্দাদের আপাতত বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ এলাকায় চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলন করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “নীচু এলাকা বাসিন্দাদের আমি নিরাপদজ এলাকায় সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। জলস্তর হঠাৎ বেড়ে গিয়ে আপনাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে।”
দিল্লিবাসীকে সতর্ক করার পাশাপাশি, হরিয়ানার হাথনিকুন্ড বাঁধ থেকে জল ছাড়ায় সীমা টানতে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন কেজরীবাল। এই বিষয়ে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। চিঠিতে কেজরীবাল বলেন, গত দুই দিনে দিল্লিতে বৃষ্টিপাত হয়নি। তা সত্ত্বেও যমুনার জলের স্তর বাড়ছে। হাথনিকুন্ড বাঁধ থেকে অস্বাভাবিকভাবে পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে কেজরীবাল জানিয়েছেন, ওই বাঁধে জল রোধ করার জন্য কোনও জলাধার নেই। তাই দিল্লির সামনে সমূহ বিপদ। এদিনের বৈঠকে দিল্লি সরকারের সমস্ত বিভাগের সমস্ত পদস্থ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। দিল্লির মন্ত্রী অতিশি অবশ্য বলেছেন, সরকার যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, “আমরা যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। জল আটকাতে বেশ কয়েকটি বাঁধ স্থাপন করা হয়েছে। আমরা ক্রমাগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”
Today yamuna river Heavy water ? pic.twitter.com/5cIUTkQEQP
— Manjar Qamar LLBⓂ️ (@Manzar404) July 12, 2023
এর আগে, ১৯৭৮ সালে হরিয়ানার হাথনিকুন্ড বাঁধ থেকে যমুনায় ৭ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। যমুনার জলস্তর রাতারাতি ২০৪.৭৯ মিটারে উঠে গিয়েছিল। বিধ্বংসী বন্যার সাক্ষী হয়েছিল দিল্লি। বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। রাজধানীর বহু এলাকা তলিয়ে গিয়েছিল জলের তলায়। প্রায় ৪৩ বর্গকিলোমিটার জমির ফসল নষ্ট হয়েছিল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তৈরি করতে হয়েছিল আশ্রয় শিবির। গ্রামীণ এলাকাগুলিতে পানীয় জল, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছিল। প্রকোপ বেড়েছিল কলেরার মতো জলবাহিত রোগের। তারপর থেকে, আরও দুবার ২০৭ মিটারের উচ্চতা অতিক্রম করেছে যমুনার জলস্তর। ২০১০ সালে উঠেছিল ২০৭.১১ মিটার পর্যন্ত এবং ২০১৩ সালে ২০৭.৩২ মিটার পর্যন্ত। ২০১৩ সালে আরও বেশি জল ছাড়া হয়েছিল হাথনিকুণ্ড থেকে। তবে, বাঁধ এবং জলাধারগুলি সেই যাত্রায় বন্যা প্রতিরোধে সহায়ক হয়েছিল। তবে, এইবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ।