জিজ্ঞাসা: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ না ‘আয়ুষ্মান ভারত’, কোন প্রকল্পে আপনার লাভ বেশি?

রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে ২০১৬ সালের শেষের দিকে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের কথা ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঘোষণা করেন।

জিজ্ঞাসা: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ না ‘আয়ুষ্মান ভারত’, কোন প্রকল্পে আপনার লাভ বেশি?
জিজ্ঞাসা: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ না ‘আয়ুষ্মান ভারত’, কোন প্রকল্পে আপনার লাভ বেশি?
Follow Us:
| Updated on: Jan 13, 2021 | 2:24 AM

কলকাতা: একদিকে আয়ুষ্মান ভারত (Ayushman bharat), অপরদিকে স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi)। কেন্দ্র বনাম রাজ্যের রাজনৈতিক তরজায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে এই দুই জনকল্যাণমুখী প্রকল্প। অতিমারি আবহে একুশের নির্বাচনের আগে একদিকে বিজেপি অভিযোগ তুলছে রাজ্যবাসীকে আয়ুষ্মান ভারত থেকে বঞ্চিত রাখার। অপরদিকে তৃণমূল সরকার রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে দুয়ারে নিয়ে এসেছে স্বাস্থ্যসাথী। মোটের উপর দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমেই পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করে সরকার।

তবে ইদানীং বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে নিয়েও হাসপাতাল থেকে প্রত্যাখ্যান হতে হয়েছে রোগীদের। এমনটা যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের কাছে সেই আবেদনও জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরে বলেছেন রোগী না ফেরাতে। তবে যে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ‘ঢপের চপ’ আখ্যা দিয়েছিলেন, সেই তাঁর পরিবারের সদস্যরাই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করে ফেলেছেন। এই ঘটনা রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

এই ঘটনার পর ফের একবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কোনটা বেশি লাভজনক আমজনতার জন্য, স্বাস্থ্যসাথী নাকি আয়ুষ্মান ভারত? কোন প্রকল্পে বেশি সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ? দেখে নেওয়া যাক এই দুই প্রকল্পের কিছু তুলনামূলক সংস্থান।

প্রথমত, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের খরচ পুরোপুরি বহন করবে রাজ্যে সরকার। এতে কেন্দ্রের কোনও সাহায্য নেই। অন্যদিকে আয়ুষ্মান ভারত কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প হলেও এই ৬০% খরচ বহন করে কেন্দ্র। এবং ৪০% খরচ রাজ্য সরকারকে বহন করতে হয়।

দ্বিতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ১০০% জনগণ স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা পাবেন। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারতের মাধ্যমে দেশের ৪০% মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। এবং এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে।

তৃতীয়ত, স্বাস্থ্যসাথীর জন্য এই বছর ২,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতিবছর ৯২৫ কোটি টাকা খরচ করে এই প্রকল্পের জন্য। অন্যদিকে ২০১৯-২০ সালের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র ব্যয় বরাদ্দের অর্ধেক পরিমাণ অর্থ খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চতুর্থত, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাড়ির গৃহকর্ত্রী বা সবচেয়ে বয়স্ক মহিলা সদস্যের নামে করা হয়। অন্যদিকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে এই ধরনের কোনও পরিসর নেই।

আরও একটি বিষয় এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে। তা হল- রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে ২০১৬ সালের শেষের দিকে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের কথা ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঘোষণা করেন। যদিও স্বাস্থ্যসাথীর পরিসর তখন অনেকটাই কম ছিল। কয়েকমাস আগে তা বাড়িয়ে আপামর রাজ্যবাসীর জন্য করা হয়েছে। তবে জনগণের জন্য স্বাস্থ্যবিমার বিষয়টি সর্বপ্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ভেবেছিলেন।