ট্রাম্প বলেছিলেন ‘বিবেকামুণ্ড’, হিন্দুধর্মের ধারক-বাহক পাশে বসে হাততালি দিয়েছিলেন: অভিষেক
প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ ছিল ট্রাম্পের হাত থেকে মাইকটা কেড়ে নেওয়া, তোপ অভিষেকের।
কলকাতা: ডোনাল্ড ট্রাম্প এসে বলে গেলেন ‘বিবেকামুণ্ড’। তখন পাশে বসে হাততালি দিচ্ছিলেন। এখন বুকে বিবেকানন্দর ছবি ঝুলিয়ে মিছিল করছেন! মঙ্গলবার হাজরার পথসভা থেকে নাম না করে নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি নেতৃত্বকে এভাবেই আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “বিবেকানন্দ কোনও দিন বলেননি অমুক ধর্মের মানুষকে নাগরিকত্ব দেব, একে দেব না। সকল ধর্মের প্রতি সমান উদার ছিলেন স্বামীজী। অথচ যাঁরা নিজেদের স্বামীজীর আদর্শের ধারক-বাহক বলছেন, তাঁরা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ করে চলেছেন।”
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ভারতে এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত সম্পর্কে বলতে গিয়ে সে দিন বিবেকানন্দর কথা শোনা গিয়েছিল ট্রাম্পের মুখে। কিন্তু তিনি যে ভাবে বিশ্ববন্দিত মহামানবের নাম উচ্চারণ করেছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক হয় দেশজুড়ে। ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দর জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাতে এসে হাজরায় সে দিনের কথাই তুলে ধরেন অভিষেক।
নাম না করে নরেন্দ্র মোদীর দিকে তৃণমূল সাংসদ নিশানা করেন, “এক বছর আগে ট্রাম্পকে দেশে নিয়ে এলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। বিবেকানন্দের নাম বলতে পারেন না। বলছেন বিবেকামুণ্ডা। আর পাশে হিন্দু ধর্মের সব থেকে বড় ধারক-বাহক বলে নিজেকে যিনি দাবি করেন তিনি বসে হাততালি দিচ্ছেন। বাঙালির কাছে এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে!”
এই প্রসঙ্গ টেনে তিনি এক হাত নেন বিজেপিকেও। সেদিন একজনও বিজেপি নেতা কেন প্রতিবাদ করেননি প্রশ্ন তোলেন অভিষেক। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বিবেকানন্দ-ভক্তিকে খোঁচা দিয়ে বলেন, “সত্যি যদি প্রধানমন্ত্রী স্বামীজীকে ভালবাসতেন, তা হলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত থেকে মাইকটা কেড়ে নিয়ে বলতেন স্বামী বিবেকানন্দর নামটা ঠিক করে উচ্চারণ করুন। তারপর স্বামী বিবেকান্দর আদর্শ নিয়ে কথা বলবেন।” অভিষেকের হুঁশিয়ারি, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিসর্জন তো হয়েই গিয়েছে। এখানে যে এক দু’টো আগাছা রয়েছে সেগুলোও বিসর্জন সময়ের অপেক্ষা। আমরা রাজনৈতিকভাবে লড়ে নেব।”
বিবেকানন্দর জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মুখে যতই ‘রাজনীতির কথা বলব না’ বলুন না কেন, বারবারই অভিষেকের নিশানায় ছিল বিজেপি। তাই তৃণমূল সাংসদকে কখনও বলতে শোনা গিয়েছে, “তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে শুধু গুজরাতে বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি বানিয়েছেন, খুব ভাল। উনি আমাদের প্রণম্য। কিন্তু স্বামীজীরও তো মূর্তি তৈরি করতে পারতেন বাংলায়।” আবার কখনও বলেছেন, “আপনাদের কোনও অধিকার নেই স্বামীজি সম্পর্কে কথা বলার। উনি কয়েকটি ধর্মের লোককে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেননি।”