ভুয়ো টিকা নেওয়ায় মিমির লিভার নিয়ে চিন্তায় তাঁর চিকিৎসকরা

TV9 বাংলার কাছে ভুয়ো ভ্যাকসিনের খবর জানতে পেরে মিমির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, "ভয় পেয়ে আর লাভ নেই। যা হওয়ার তো হয়েই গিয়েছে।"

ভুয়ো টিকা নেওয়ায় মিমির লিভার নিয়ে চিন্তায় তাঁর চিকিৎসকরা
কসবার ওই ক্যাম্পে টিকা নেন মিমি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 25, 2021 | 10:37 AM

দেবপ্রিয় দত্ত মজুমদার: ভুয়ো আইএএস। ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্র। ভুয়ো স্বাস্থ্যকর্মী। এমনকী, টিকাও ভুয়ো। দেবাঞ্জন দেবের গোটা কর্মকাণ্ডই ভুয়োর ভুলভুলাইয়া। আসল শুধু টিকা গ্রহীতারা। যাঁরা এখন মহা বিপাকে। কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীও। ভ্যাকসিনের নামে জলে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে অ্যামিকাসিন। TV9 বাংলার কাছে ভুয়ো ভ্যাকসিনের খবর জানতে পেরে মিমির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, “ভয় পেয়ে আর লাভ নেই। যা হওয়ার তো হয়েই গিয়েছে।”

প্রথমে কলকাতা পুরসভা, এরপর কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিভাগ; দু’তরফেই নিশ্চিত করা হয়েছে, দেবাঞ্জনের টিকাকরণ কেন্দ্রে করোনার আসল ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। কারণ, বাজেয়াপ্ত ভ্যাকসিনের ভায়ালে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, ব্যাচ নম্বর বা ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, কোনওটাই উল্লেখ নেই। এমনকী, ভ্যাকসিন ভায়ালের ট্যাগে লেখা নেই প্রস্তুতকারী সংস্থার নামও। ভ্যাকসিনের ভায়ালের গায়ে লেখা ছিল, কোভিশিল্ড রিকম্বিনেন্ট। যার বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। বৃহস্পতিবার দেবাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়ে কসবার সেই অফিসে গেলে সেখানের ফ্রিজ থেকে আবার কোভিশিল্ডের ১২০ টি ভায়াল উদ্ধার হয়। এরপর কোভিশিল্ডের স্টিকার টানতেই বেরিয়ে আসে অ্যামিকাসিন ৫০০ ইঞ্জেকশন। যা মূলত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।

সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও কসবার ওই ক্যাম্প থেকেই টিকা নিয়েছিলেন। হাড় হিম করা একের পর এক তথ্য উঠে আসার পর তিনি কী ভাবছেন? জানতে চাওয়া হলে যাবদপুরের সাংসদ বলেন, “অযথা দুশ্চিন্তা করে কোনও লাভ নেই। যেটা শরীরে প্রবেশ করার সেটা ইতিমধ্যেই করে গিয়েছে। আমি আমার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কাছে যা খবর এসেছে, অ্যামিকিসিন বলে একটা ওষুধ যা অ্যান্টিবায়োটিক, যা মূত্র সংক্রমণ বা পেটে ব্যাথার জন্য দেওয়া হয়, সেটা প্রয়োগ করা হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক যেহেতু জলে মিশে গিয়েছে তাই অতটা প্রভাব নাও ফেলতে পারে। তবে আমি আগামিকাল রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছি। যেহেতু আমার একটা লিভার সমস্যা আছে, তাই চিকিৎসক চিন্তায় আছেন আমার লিভারে যেন এর প্রভাব না পড়ে। ব্লাড টেস্ট, লিভার টেস্ট করাব। সবাইকে বলব (যাঁরা ওই ক্যাম্প থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন), কাছাকাছি কোথাও গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং নিজের খেয়াল রাখুন।”

আরও পড়ুন: পুলিশের স্ক্যানারে দেবাঞ্জনের সঙ্গিনীও, সিটি কলেজের টিকা ক্যাম্পে মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়েছিলেন এই ‘রহস্যময়ী’

কিন্তু খাস কলকাতা শহরের বুকে এভাবে টিকা নিয়ে জালিয়াতি শিকার হচ্ছেন খোদ তারকা সাংসদ। মানুষ তো আতঙ্কে কাঁটা হয়ে যাবে। সাবাধান থাকা যাবে কী ভাবে? মিমি বলেন, “একটা গোটা গোষ্ঠীকে বোকা বানানো হয়েছে। আমি না গেলে হয়তো এরা ধরা পড়ত না, অথবা আরও অনেকে প্রতারিত হত। কারণ, এরা আগেও এরকম ভুয়ো ক্যাম্প করে টিকাকরণ করেছে। আমি খুব চিন্তিত যারা আগেও এর শিকার হয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের জন্য। আমি বলব, তাঁরা যেন সেন্টারে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।”

একই সঙ্গে মিমির পরামর্শ, “এরপর থেকে যেখানে ভ্যাকসিন নেবেন, সেখানে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট চাইবেন। সার্টিফিকেট না দেখলেই প্রশাসনকে জানাবেন। আমার ফোন নম্বর না দেওয়া থাকলেও সেক্রেটারি বা কর্মীদের কাছে কোনও এসএমএস আসেনি।” তাঁর সংযোজন, “ও (দেবাঞ্জন) তো পালিয়েই যাচ্ছিল। আমার কর্মীরা ওকে ধরেও রেখেছিল। ও একটাই কথা বলছিল, আমি তো ভাল কাজ করছি। জানি না, কী ভাল কাজ করেছে।”

আরও পড়ুন: কোভিশিল্ডের স্টিকার সরাতেই চোখ কপালে ফরেন্সিক বিভাগের! ভ্যাকসিনের নামে কী নিলেন মিমিরা?