কোভিশিল্ডের স্টিকার সরাতেই চোখ কপালে ফরেন্সিক বিভাগের! ভ্যাকসিনের নামে কী নিলেন মিমিরা?
কোনও মানুষকেই যে কোভিশিল্ড দেওয়া হয়নি, তা যেমন একদিকে পুরসভার তরফেও নিশ্চিত করা হয়েছে, তেমনই ফরেন্সিক দলও ভায়াল উদ্ধারের পর তেমনটাই মনে করছে।
কলকাতা: কসবার ভুয়ো টিকাকরণ কেন্দ্রে তল্লাশি করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধৃত দেবাঞ্জন দেবকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কসবার অফিসে যাওয়া হলে ফ্রিজে কোভিশিল্ডের প্রায় ১২০ টি ভায়াল মেলে। কিন্তু, তা দেখে সন্দেহ হওয়ায় কোভিশিল্ডের স্টিকার ধরে টান দিতেই খুলে যায় রহস্যের জাল। দেখা যায়, কোভিশিল্ডের স্টিকারের আড়ালেই লুকিয়ে রয়েছে অ্যামিকাসিন ৫০০ ইঞ্জেকশন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মূলত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হয়। সাধারণত জ্বর, সর্দি, কাশির ক্ষেত্রে এই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এ বাদের সেই ফ্রিজ থেকে খুচরো অবস্থায় প্রচুর ভ্যাকসিন উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় হাজারে বেশি সিরিঞ্জ, পিপিই কিট, মাস্ক ও স্যানিটাইজার। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক অনুমান, কোভিশিল্ডের নাম করে এই অ্যামিকাসিন ভ্যাকসিনই দেওয়া হয়েছিল টিকা প্রাপকদের। ঠিক কত সংখ্যক মানুষ এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন তা নিয়ে এখনও সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তবে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, কয়েকশো মানুষ এই জাল করোনা টিকা নিয়ে থাকবেন।
ফলে প্রথম থেকেই যে সন্দেহ সকলের মনে দানা বেঁধেছিল, তা কার্যত আজকের পর স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কোনও মানুষকেই যে কোভিশিল্ড দেওয়া হয়নি, তা যেমন একদিকে পুরসভার তরফেও নিশ্চিত করা হয়েছে, তেমনই ফরেন্সিক দলও ভায়াল উদ্ধারের পর তেমনটাই মনে করছে।
আরও পড়ুন: কসবার ক্যাম্পে জাল টিকা নিয়েছেন মিমিরা! গুঁড়ো ও জল মিশিয়ে তৈরি হয়েছিল ভ্যাকসিন
এই প্রসঙ্গে পুরসভার তরফে প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, “যদি সঠিক ভ্যাকসিন হতো তাহলে ভ্যাকসিনের গায়ের রিকম্বিনেন্ট লেখা থাকত না।” এ ছাড়াও আরও সন্দেহ বাড়ার কারণ, ভ্যাকসিনের গায়ে কোনও রকমের ব্যাচ নম্বর, বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লেখা নেই। অর্থাৎ, ভ্যাকসিনটি যে সম্পূর্ণ জাল, তা প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের কথায়। যদিও কী ধরনের গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফরেন্সিক তদন্তের পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: এক দেবাঞ্জনের কীর্তি অনেক, মোটা টাকায় টিকা বিক্রি ফিনান্স সংস্থায়, কর্মীদের দেয় স্পুটনিক ভি-ও