Partha Chatterjee: ‘অভিযুক্তদেরও অধিকার আছে, অনির্দিষ্টকাল তদন্ত চলছে বলা যায় না’, CBI-কে ভর্ৎসনা আদালতের
Recruitment Scam: তদন্তে অগ্রগতি নিয়ে আলিপুর আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকারীরা কোথায়? ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট কোথায়? সিবিআইকে প্রশ্ন আলিপুর আদালতের।
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) তদন্তে ফের আদালতের ভর্ৎসনার মুখে সিবিআই (CBI)। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বাকিদের আলিপুর আদালতে (Alipore Court) পেশ করা হয়। কিন্তু তদন্তে অগ্রগতি নিয়ে আলিপুর আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রকারীরা কোথায়? ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট কোথায়? সিবিআইকে প্রশ্ন আলিপুর আদালতের। বিচারকের মন্তব্য, যা হচ্ছে তা ঠিক নয়। বিচারক সিবিআই আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনারা চার্জশিট উল্লেখ করেছেন যে এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বাকি অভিযুক্ত এবং প্রার্থীদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা দরকার। তাহলে সেটা কই? তারা কোথায়?’
বিচারক বলেন, ‘আমি ৭ ডিসেম্বর এই কোর্টে যোগ দিয়েছি। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি। অনেকদিন হয়েছে।’ বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, এমন অনেক তথ্য রয়েছে, যা তারা ওপেন কোর্টে বলতে পারছেন না। সেই বক্তব্য শুনে বিচারক আবারও প্রশ্ন করেন, কারও ১৬৪ (গোপন জবানবন্দি) রেকর্ডের আবেদন করা হয়েছে কি না। ব্যাঙ্কের কোনও স্টেটমেন্ট নেওয়া হয়েছে কি না। তদন্তকারী অফিসারের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘যেটা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। অন্তত একটা ১৬৪ করান।’ তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে আমরা ডিটেল ইনভেস্টিগেশন করছি। বেসিক কাজ না করলে লক্ষ্য পূরণ হবে না। তাই একটু সময় চাই। ব্যাঙ্কের কিছু তথ্য দরকার।’
উল্লেখ্য, এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার দুই মিডলম্যান প্রদীপ সিং ও প্রসন্ন রায় ছাড়া বাকি প্রত্যেক আইনজীবীরাই জামিনের জন্য আবেদন জানান। যদিও প্রদীপ ও প্রসন্নর আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, তাঁদের মক্কেলের বিরুদ্ধে সিবিআই কী কী অভিযোগ এনেছে, কী কী তথ্য প্রমাণ পেয়েছে, তা যাতে জানানো হয়। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ বাকি সকল অভিযুক্তের আইনজীবীরাই জামিনের আবেদন জানান। পার্থর আইনজীবীর বক্তব্য, এমনভাবে গোটা বিষয়টিকে দেখানো হচ্ছে, যেন এটাই বোধ হয় পৃথিবীর প্রথম দুর্নীতি। তা তো নয়, এর আগেও পৃথিবীতে অনেক দুর্নীতি হয়েছে।
তখন বিচারক বলেন, ‘অভিযুক্তদেরও তো কিছু অধিকার রয়েছে। অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত তো তদন্ত চলছে বলা যায় না। আর কতদিন সময় লাগবে?’ পাল্টা সিবিআই আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এরা তো বলবেই আমরা তদন্ত ‘ড্র্যাগ’ করছি। তদন্তের নামে আমরা কাউকে আটকাতে পারি না। কিন্তু তদন্ত যখন শুরু হয়েছিল, তখন অভিযোগ ছিল বেআইনিভাবে চাকরির। পরবর্তী তদন্ত কি দেখা যাচ্ছে, পুরোটাই পরিকল্পনা করে হয়েছে। কীভাবে ম্যানুপুলেট করা হল, কীভাবে নিয়োগ করা হল, কীভাবে গোটা বিষয়টি চাপা দেওয়া হল… পুরোটাই আমরা খুঁজে বের করছি।’
সিবিআই আইনজীবী আরও জানান, নিয়োগ করার আগে থেকেই সব প্ল্যানিং করা ছিল, যে ওএমআর শিট কাকে দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে সরকারী কর্মীদের পাশাপাশি বাইরের অনেকের নামও উঠে এসেছে। আমাদের কেস ডায়েরি নিজেই কথা বলছে। এরা প্রত্যেকেই এই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশীদার।’