University VC: উপাচার্যদের হেনস্থা করার অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে সরব শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়
University VC: "ধিক্কার জানাচ্ছি। এর থেকে ন্যক্কারজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না", এমনটাই বললেন শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়।
কলকাতা: বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না খোদ উপাচার্য। এমন অভিযোগ সামনে আসার পর রাজ্য সরকার তথা শিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়। এক উপাচার্য যখন প্রবেশ করতে পারেন না, তখন তার থেকে লজ্জাজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। রবীন্দ্র ভারতী ও রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রকাশ্যে অভিযোগ করার পর শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, কেন এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার তথা শিক্ষামন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এর ফলে উচ্চশিক্ষায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। রাজ্যপালের নিয়োগ করা উপাচার্যরা এই ধরনের অভিযোগ সামনে আনার পর TV9 বাংলার সাক্ষাৎকারে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ বুঝিয়ে দিলেন, উপাচার্য নিয়োগের এক্তিয়ার আচার্যের আছে কি না।
অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সংবিধানে কোথাও বলা নেই যে রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার পরামর্শ মেনে চলতে বাধ্য। তবে প্রথা অনুযায়ী সেটা মেনেই চলেন রাজ্যপাল।” তিনি আরও বলেন, “আইনে রয়েছে যে রাজ্য়পাল আচার্য হবেন, তবে তাঁর কাজ কী তা বলা নেই। মামলা হওয়ায় হাইকোর্ট স্পষ্ট বলে দিয়েছে, অন্তর্বতীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন আচার্য। তারপরও দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্র ভারতী বা রায়গঞ্জের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের ছাত্র ও কর্মী সংগঠনগুলি কাজ করতে দিচ্ছে না।”
এই ঘটনার কড়া নিন্দা করে অমল সরকার বলেন, “যা হচ্ছে তা অন্যায়। শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী কেন নির্দেশ দিচ্ছেন না যে উপাচার্যকে কাজ করতে দাও? কবে আসবে এমন নির্দেশ? কোনও দিন এমন নির্দেশ আসবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ধিক্কার জানাচ্ছি। এর থেকে ন্যক্কারজনক ঘটনা আর কিছু হতে পারে না।”
শিক্ষাবিদের মতে, উপাচার্য যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে না যেতে পারেন, তাহলে অনেক কাজ ব্যাহত হয়। ফলে উচ্চশিক্ষার ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু সরকার তার গোঁ ধরে বসে আছে বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে! নিজেদের সংগঠনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সম্ভবত পিছন থেকে নির্দেশ দিচ্ছে।”
উল্লেখ্য, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁর ঘরে গিয়ে অভব্য আচরণ করেছেন তৃণমূলপন্থী সংগঠনের সদস্যরা। বর্তমানে বাড়িতে থেকেই কাজ করতে হচ্ছে তাঁকে। তাঁকে বোতল ছুড়ে মারার কথা বলা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কুমার রায়ের দাবি, মাত্র সাতদিন হল দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি, তা সত্ত্বেও নানা অভিযোগ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূলের কর্মী সংগঠন। এই দুজনকেই সম্প্রতি নিয়োগ করেছেন আচার্য সি ভি আনন্দ বোস।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে দেবব্রত দাসের বক্তব্য, উপাচার্যের সঙ্গে এই ব্যবহার কখনওই সমর্থনযোগ্য নয়। যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করেন তিনি। দেবব্রত বাবু বলেন, “শিক্ষা ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখতে চাই। আলোচনার মাধ্যমেই সব সমাধান হওয়া সম্ভব। আমাদের ডেকে থাকলে আমরা কথা বলব। তবে উপাচার্য যে বাহিনী মোতায়েন করার কথা বলেছেন, সেটাও শিক্ষার পরিবেশে হতে পারে না।”