Babul Supriyo: বিধানসভায় ‘সংঘাত’! মমতার প্রশ্নে বাবুলের উত্তর, ‘আমার সিলেবাসের বাইরে’

বাবুল সুপ্রিয় সব ঠিক আছে বললেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পর্যটন মন্ত্রীর কি দূরত্ব বাড়ছে?- এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঁকি মারছে রাজনৈতিক মহলে।

Babul Supriyo: বিধানসভায় ‘সংঘাত’! মমতার প্রশ্নে বাবুলের উত্তর, ‘আমার সিলেবাসের বাইরে’
বিধানসভায় প্রকট বাবুল-মমতার দ্বন্দ্ব!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 24, 2022 | 6:25 PM

কলকাতা: মন্ত্রিত্বের মাত্র সাড়ে তিন মাস পেরিয়েছে। এর মধ্যেই ‘গুড বয়’ বাবুল সুপ্রিয়র পারফরম্যান্স নিয়ে বিরক্তির সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। একেবারে বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন পর্যটন দফতরের মন্ত্রীকে কাজ নিয়ে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই বাবুলের পালটা জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পর্যটন মন্ত্রীর দূরত্ব প্রকট হয়ে উঠল বলে রাজনৈতিক মহলের দাবি।

এদিন গন্ডগোলের সূত্রপাত বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বের সময়। পর্যটন দফতরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হঠাৎ করেই প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী পর্যটন দফতরের মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ইয়ুথ হোস্টেল সক্রিয় করতে হবে। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাবুল তুমি নতুন এসেছ। বাংলার ডিটেলস জেনে নাও।” এদিন যেন বাবুলের পারফরম্যান্স নিয়ে কিঞ্চিৎ বিরক্ত মনে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। বিধানসভার অধিবেশনে বাবুল সুপ্রিয় নিয়মিত উপস্থিত থাকেন না। সেটা নিয়েও যারপরনাই বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পর নীরব থাকেননি বাবুল সুপ্রিয়। তিনি পালটা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই। হিমালয় থেকে সমুদ্র আছে। সবটা আমার নলেজে নেই। আমার সিলেবাসের বাইরে আছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাহায্য করে দিলে ভাল হয়।”

এভাবে বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বের মধ্যেই এভাবে পর্যটন মন্ত্রীর পালটা জবাব দেওয়ার ঘটনায় স্বাভাবিকরভাবেই হতবাক হয়ে যান অধিবেশনে উপস্থিত শাসকদলের মন্ত্রীরা। বাবুলের জবাবে মুখ্যমন্ত্রীও যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েন তা বলা বাহুল্য। তারপরই পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামেন হেভিওয়েট নেতারা।

জানা গিয়েছে, মমতার মন্ত্রিসভার একেবারে শীর্ষ স্তরের সদস্য, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম যান বাবুলের কাছে। তারপর বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পর বাবুল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “সিনিয়াররা আমাকে বুঝিয়েছেন। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার ফারাক আছে। বিধানসভার অধিবেশন থাকলে সব কাজ ছেড়ে আসতে হয়।” এর কিছুক্ষণ পরে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়েও তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বাবুল সুপ্রিয়। তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “সব ঠিক আছে।” মুখ্যমন্ত্রীর তরফে অবশ্য এটা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বাবুল সুপ্রিয় সব ঠিক আছে বললেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পর্যটন মন্ত্রীর কি দূরত্ব বাড়ছে?- এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঁকি মারছে রাজনৈতিক মহলে।

প্রসঙ্গত, পদ্ম শিবিরে থাকলেও বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি সংঘাত দেখা যায়নি। বরং ২০১৫-য় ভিক্টোরিয়ায় বাবুল সুপ্রিয়কে দেখে গাড়ি থামিয়ে তাঁকে ঝালমুড়ি খাইয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন নরেন্দ্র মোদীর ‘গুড বয়’ ছিলেন বাবুল। তারপর গঙ্গা-যমুনার উপর দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ধীরে-ধীরে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে বাবুলের দূরত্ব বাড়ে এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান না পেয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়ে দলত্যাগ করেন বাবুল। যদিও দলত্যাগের পিছনে মন্ত্রিসভায় স্থান না হওয়াটা কারণ নয় বলে জানান বাবুল। তারপর তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর আসন, বালিগঞ্জ থেকে জয়ী হন। গত অগস্টেই বাবুল সুপ্রিয়কে মন্ত্রিসভায় নিয়ে এসে পর্যটন দফতরের ভার দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই বিধানসভায় একেবারে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন বাবুলের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য এবং পালটা বাবুলের জবাবে কার্যত হতবাক রাজনৈতিক মহল। তাহলে কী বাবুলের পারফরম্যান্সে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী? দুজনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে? এখন এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে