ইঁদুর সংকট! আড়াআড়ি বিভাজিত বঙ্গ বিজেপি
Bengal BJP: মুরলীধর সেন লেনের দ্বিতল বাড়িটি প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। ফলে এই বাড়িতে ইঁদুরের আনাগোনা লেগেই থাকে। তেনারা শুধু ঘুরতে আসেন তেমন তো নয়। বিজেপির দফতরে থাকা ফাইল, জরুরি নথিও কেটে ফালাফালা করেন।
অঞ্জন রায়: বঙ্গ বিজেপিতে বেজায় বিড়ম্বনা। ইঁদুর মারা হবে নাকি পুষে রাখা হবে, এই নিয়ে রীতিমতো আড়াআড়িভাবে ভেঙে গিয়েছে পদ্মশিবির। একদল চাইছে, ইঁদুর মেরে ফেলা হোক। কারণ এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে বেশি। কিন্তু আরেকদল ইঁদুর হত্যার ঘোরতর বিরোধী। পাছে গণেশ ঠাকুর রুষ্ট হন। শত হোক, ইঁদুর তাঁর বাহন বলে কথা। এই নিয়ে বাঙালি ও অবাঙালি, কার্যত দুই ভাগে ভেঙে গিয়েছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির।
বিষয়টা একটু খুলে বলা যাক। বঙ্গ বিজেপির সদর দফতর, অর্থাৎ মুরলীধর সেন লেনের দ্বিতল বাড়িটি প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। ফলে এই বাড়িতে ইঁদুরের আনাগোনা লেগেই থাকে। তেনারা শুধু ঘুরতে আসেন তেমন তো নয়। বিজেপির দফতরে থাকা ফাইল, জরুরি নথিও কেটে ফালাফালা করেন। এমনকী, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির অফিসে ১৬ টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। সেই ক্যামেরাও আপাতত কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ সেগুলির তার কেটে বিকল করে রেখে গিয়েছে ইঁদুরের দল। এই অবস্থায় অনাকাঙ্খিত অতিথিদের সমূলে উৎপাটন করতে ইঁদুর মারার ওষুধ দিতে চায় এক পক্ষ। কিন্তু আরেক পক্ষের তাতে সায় নেই।
এই আরেক পক্ষ হলেন মূলত হিন্দিভাষী বিজেপি কর্মীরা। বঙ্গ বিজেপিতে অবাঙালি দাপট গত কয়েক মাসে আড়ে বহরে বেড়েছে। তাঁদের বিশ্বাস, ওষুধ দিয়ে যদি ইঁদুর মারা হয় এতে গণেশ ঠাকুর রুষ্ট হবেন। হিন্দি নেতাদের দাপটেই কার্যত কেউ ইঁদুর মারতে সাহস পাচ্ছে না বিজেপির সদর দফতরে। কিন্তু এতে বাঙালিরা মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তাঁরা মনে করছেন, এই অবাঙালিদের আপত্তির কারণেই বিজেপি অফিসে কোনও ফাইল, কোনও জরুরি কাগজ রাখা যাচ্ছে না। মূষিক সেনারা সবই কুচিকুচি করে কেটে দিচ্ছে। ফলে ইঁদুর নিয়েই এ বার বাঙালি বনাম অবাঙালি সংঘাত শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপির অফিসে।
এ বছর বিধানসভা নির্বাচনেও বাঙালি-অবাঙালি সংঘাত দেখা গিয়েছিল বঙ্গ বিজেপিতে। বাংলার বাইরে থেকে নেতারা প্রচার করতে এসে এই রাজ্যের নেতাদের কার্যত সাইডলাইন করে করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ফল কী হয়েছে, সেটা সবাই জানে। এ বার ইঁদুর নিয়েও একই সমস্যা তৈরি হওয়ার পরও অবাঙালিদের মতই প্রাধান্য পেয়েছে। ঠিক করা হয়েছে, ইঁদুর মারা যাবে না। বরং সিসিটিভি ক্যামেরার তার বদলে নতুন করে তা চালু হবে। আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদীকে ‘বাংলাদেশি’ মন্ত্রীর পরিচয় করাতে দেবে না তৃণমূল