Sheikh Shajahan: ভোলার হাতেই ছিল লাটাই! কেন ভোলাকে ‘খুনে’র ছক শাহজাহানের?
Sheikh Shajahan: চার্জশিটের ৮০ নম্বর পাতায় এটা উল্লেখ রয়েছে, শাহজাহান নিজের এলাকায় সব রকমের ব্যবসা ও আর্থিক লেনদেন থেকে কমিশন নিত। কেউ ১ লক্ষ টাকায় কোনও জমি বিক্রি করবে, সেটার দাম শাহজাহান বাড়িয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে। এক্ষেত্রে জমির মালিককে দেবে ৭০ হাজার টাকা। বাকি নিজের পকেটে ভরতেন শাহজাহান।

কলকাতা: আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে অন্যতম সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষের গাড়ি দুর্ঘটনা। তাতে সাক্ষীর ছেলে-সহ চালকের মৃত্যু। তাতে আবারও নাম জড়িয়েছে শেখ শাহজাহানেরই। অভিযোগ উঠছে, জেলে থেকেই গোটাটার পরিকল্পনা করেছেন তিনিই। কিন্তু কেন? শেখ শাহজাহানের একাধিক কীর্তি সামনে এসেছে আগেই। নতুন করে কী এমন জানতেন ভোলানাথ, যার জন্য খুনের শাহাজান শেখের বিরুদ্ধে ইডির দাখিল করা চার্জশিটে ৯ নম্বর সাক্ষী ভোলানাথ ঘোষ। তিনদিন ভোলার বয়ান রেকর্ড করে ইডি। ইডির সামনে শাহজনের বিরুদ্ধে দেওয়া ভোলানাথের বিস্ফোরক বয়ান অনুযায়ী, ২০১৬ সালে শাহজাহান শেখ আসানসোলের কয়লা ব্যবসায়ীর থেকে কয়লা কিনে সন্দেশখালি ও সংলগ্ন এলাকায় ইটভাটায় বিক্রির ব্যবসা শুরু করে।
২০১৭ সালে মাছের ব্যবসায় নামে শাহজাহান ৫০-৫০ শতাংশ হারে পার্টনারশিপে। যাঁরা মাছ রফতানি করতেন, তাঁদের সরাসরি সাপ্লাই করতেন। ভোলার কথায়, “আমি যতটুকু জানি তাতে লভ্যাংশ না দেওয়ায় পার্টনারশিপ ভেঙে যায়। ২০১৮ সালে শাহজাহান শেখ সাবিনা ফিশ সাপ্লাই নামে নিজের ব্যবসা শুরু করে।” চার্জশিটের ৮০ নম্বর পাতায় সেটা বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
চার্জশিটের ৮০ নম্বর পাতায় এটা উল্লেখ রয়েছে, শাহজাহান নিজের এলাকায় সব রকমের ব্যবসা ও আর্থিক লেনদেন থেকে কমিশন নিত। কেউ ১ লক্ষ টাকায় কোনও জমি বিক্রি করবে, সেটার দাম শাহজাহান বাড়িয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে। এক্ষেত্রে জমির মালিককে দেবে ৭০ হাজার টাকা। বাকি নিজের পকেটে ভরতেন শাহজাহান।
চার্জশিটের ৬০ নম্বর পাতায় উল্লেখ রয়েছে, ২০১৭ সালে শাহজাহান ধামাখালি এলাকায় ভয় দেখিয়ে দুটি ইট ভাটা জোর করে কম দামে কিনেছিল। একজন মালিক বিহারের, অন্যজন বসিরহাটের ছিল।
ইডি চার্জশিটে জানিয়েছে, ২০১৬-১৭ সালে শাহজাহান শেখ ও ভোলানাথ ঘোষ এসবি মৎস্য আড়ত নামে ব্যবসা শুরু করে। ৭০ শতাংশ পার্টনার শাহাজান বাকি ৩০ শতাংশ ভোলানাথ ঘোষ। ভোলানাথ ব্যবসায়িক ও দৈনন্দিন কাজ সামলাতেন। ২০১৯ সালে ভোলানাথের সঙ্গে পার্টনারশিপ ভেঙে এসকে সাবিনা ফিশ সাপ্লায়ার্স নামে নিজের মাছের ব্যবসা শুরু করে শাহজাহান। এই ব্যবসায় ভোলানাথ ম্যানেজার ছিলেন। ভুয়ো মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা পাঠানো হত। সেইসব ভুয়ো ব্যবসায়ীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখভাল করতেন ভোলানাথ। প্রত্যেক দিনের টাকা প্রত্যেকদিন তুলে নিতেন ভোলানাথ। তেমনটাই চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ ভোলানাথ শাহজাহানের আর্থিক দুর্নীতির একেবারে ‘ডায়েরি’ বজায় রাখতেন। সেক্ষেত্রেই কি ভোলানাথকে পথ থেকে সরানোর ছক?
