রাজীবের পদত্যাগ: ‘কুছ পরোয়া নেহি’ তৃণমূলের, দরজা খুলে বিজেপি

একদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে যখন রাজীবের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন রাজীবের সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব দলের অন্দরে পড়বে না বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল নেতারা।

রাজীবের পদত্যাগ: 'কুছ পরোয়া নেহি' তৃণমূলের, দরজা খুলে বিজেপি
ভাঙন বাড়লেও মচকাচ্ছে না তৃণমূল- নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 22, 2021 | 5:02 PM

কলকাতা: রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Rajib Banerjee) ইস্তফার পরও তৃণমূলের (TMC) ‘কুছ পরোয়া নেহি’ ভাব অব্যাহত। অন্যদিকে, বিজেপি (BJP) দরজা খুলে রেখে তাঁকে স্বাগত জানাতে চাইছে। দুই দলের মন্তব্যেই এই বিষয়টা স্পষ্ট।

দীর্ঘ কয়েক মাসের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ডোমজুড়ের বিধায়ক শুক্রবার বনমন্ত্রীর পদ ছেড়েছেন। এরপর তিনি দল ছাড়বেন কিনা এই নিয়ে জল্পনা যখন অব্যাহত, তখন আজকের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছেন তৃণমূল ও বিজেপির নেতারা। একদিকে বিজেপির পক্ষ থেকে যখন রাজীবের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন তৃণমূল আগের কথারই পুনরাবৃত্তি করছে। রাজীবের সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব দলের অন্দরে পড়বে না বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল নেতারা। একনজরে দেখে নিন কে কী বললেন…

পার্থ চট্টোপাধ্যায়: যারা এতদিন ক্ষমতা ভোগ করেছে তাঁরাই যাচ্ছে। বিরাট বটগাছ থেকে দুটটো পাতা ঝরে গেলে কিছু যায় আসে না। সাড়ে নয় বছর ক্ষমতা ভোগ করে ভোটের আগে দল ছাড়া! বাংলার মানুষ সবই দেখতে পাচ্ছেন। কোনও কর্মী দল ছেড়ে যাচ্ছে না। কর্মীরা সব মমতার সঙ্গেই আছে।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: যে দফতরে কন্ট্রাক্ট্রর বেশি থাকে, সেই দফতরে থাকতে চান রাজীব। ওঁর তাই দরকার ছিল। সেটা পাননি বলেই ক্ষোভ। তাই দল ছেড়ে গিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই সবাই জিতেছেন। আজ এসে তো বললে হবে না আমি হনু হয়ে গেছি। মমতার ছবি ছাড়া কেউ জিতে দেখাক। কাঁথিতেও মেজবাবু দেখাক বা উলুবেড়িয়ার ভাইপো দেখাক।

কৈলাস বিজয়বর্গীয়: রাজীব স্বাভিমানী, জনদরদী, দুর্নীতিমুক্ত নেতা। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এলে তাঁকে স্বাগত। ভাইপো ও তাঁর পিসির নেতৃত্বের কারণে একটা একনায়কতন্ত্র চলছে তৃণমূলে। ৩০ তারিখ অমিত শাহের সভাতেও কেউ যোগদান করেন কিনা তা সেদিন দেখা যাবে। আমার রাজীবের সঙ্গে কথা হয়নি।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক: রাজীব শিক্ষিত ছেলে, রাজীব ভুল করেছে। তৃণমূলের কোনও ক্ষতি নেই। তৃণমূল একটি বটবৃক্ষ যার ৬ লক্ষ পাতা। রাজীবের মত একটা পাতা ঝরে গেল। আবার নতুন পাতা গজিয়ে যাবে। সব সময় একটা কথা মাথায় রাখা উচিত, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। রাজীব করে ভাবছেন।

আরও পড়ুন: ‘আঘাত নিতে পারছিলাম না’, রাজীবের কান্না রাজভবনে

লকেট চট্টোপাধ্যায়: তাসের ঘরের মতো তৃণমূলটা ভাঙতে শুরু করেছে। যারা ভাল মানুষ আছে, যারা মানুষের কাজ করতে চায়, তাঁদের সবাইকে বিজেপিতে স্বাগত জানাই। তোলাবাজি মুক্ত বাংলা গড়তে সবাইকে এক হতেই হবে। আগামী দিনে আরও অনেকে পদত্যাগ করবেন।

বৈশালী ডালমিয়া: দুঃখের ব্যাপার। দল থেকে বিমুখ হয়ে চলে যাচ্ছেন দল ছেড়ে। আমি আগেও বলেছি, দলে কিছু উইপোকা আছে। কিছু মানুষ এত জ্বালাতন করেছে, অত্যাচার করেছে, কাজ করতে দিচ্ছে না। মানুষের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। কেউ অন্যায় করলে তাকে সেফ গার্ড করে দেওয়া হচ্ছে। হাওড়া জেলাটা নষ্ট হয়ে গেছে। হয়ত নতুন লোক আসবে। দক্ষ প্রশাসকেরা চলে যাচ্ছেন। মূল্য দেয়নি দল। পার্থবাবু জেলায় নেই। সমস্যা জেলা নেতৃত্বের। মন্ত্রীদেরই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! উইপোকাদের কেন তাড়ানো হচ্ছে না?

আরও পড়ুন: মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন ‘বেসুরো’ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়