পৃথক রাঢ়বঙ্গ বিতর্কে সৌমিত্রকে তলব নাড্ডার, বার্লায় নরম বিজেপি

শুধুমাত্র সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কেই দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে ডেকে পাঠানো হয়নি।

পৃথক রাঢ়বঙ্গ বিতর্কে সৌমিত্রকে তলব নাড্ডার, বার্লায় নরম বিজেপি
নাড্ডা সাক্ষাতে সৌমিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 23, 2021 | 12:24 AM

কলকাতা: বিকেলেই কিছুটা রুষ্ট সুরে শাসানি দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। রাত হতে না হতেই সৌমিত্র খাঁ-কে ডেকে পাঠালেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। রাঢ়বঙ্গকে পৃথক রাজ্য দেখতে চাওয়ার দাবি করে এ বার দলীয় নেতৃত্বের রোষানলের মুখে পড়তে হতে পারে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে। ঘটনাপ্রবাহ যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ। যদিও লক্ষ্যণীয় বিষয়টি হল, শুধুমাত্র সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কেই তলব করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লাকে ডেকে পাঠানো হয়নি। মঙ্গলবার রাতেই নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন সৌমিত্র।

সৌমিত্রর উপর যে কোপ নেমে আসবে তার ইঙ্গিত অবশ্য মঙ্গলবার সকাল থেকেই মিলেছিল। মঙ্গলবার সকালে রাজ্য বিজেপির মিডিয়া সেলের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে দিলীপ ঘোষ নিজেও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সকলে সৌমিত্রর বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁর মন্তব্যের যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে, তা জানানো হয় বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে। এরপরই বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দিলীপ আবারও জানিয়ে দেন, বিজেপি এই দাবিকে সমর্থন করে না। দিলীপবাবু বলেন, “দলে থাকতে গেলে দলের সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করতে হবে।”

এরপরই কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হন সৌমিত্র। রাঢ়বঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি তাঁর ‘একান্ত ব্যক্তিগত’ বলে এ দিন তিনি জানান। সৌমিত্র জানিয়েছেন, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব সতর্ক করেন জন বার্লা ও সৌমিত্র খাঁ-কে। দিলীপ জানান, দল দুই সাংসদের সঙ্গে কথা বলবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গোটা বিতর্কের রেশ অবশ্য বাংলার রাজনৈতিক গণ্ডিতেই আটকে ছিল। তবে এ বার তার ঢেউ দিল্লিতেও ধাক্কা মারল। গত কয়েকদিন ধরে চলা এই বিতর্ক নিয়ে দিল্লির নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেই ছিলেন। কিন্তু, এ বার নাড্ডার তলব স্পষ্টত বুঝিয়ে দিচ্ছে, সৌমিত্র খাঁ-র মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখছে না দল। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতেই সৌমিত্রর সঙ্গে বৈঠক করেন জেপি নাড্ডা। যদিও দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: ‘বিজেপিতে থাকতে হলে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে’, শাসালেন দিলীপ, সুর নরম সৌমিত্রর

যদিও এই তলব আরেকটি পৃথক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। কেন শুধুমাত্র সৌমিত্র খাঁ-কেই তলব করল শীর্ষ নেতৃত্ব? এই প্রশ্ন খুব স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। তবে কি উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পক্ষে বার্লার সঙ্গেই সহমত পোষণ করছেন শীর্ষ নেতৃত্ব? সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আগামীর দিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।