Suvendu Adhikari on Mamata-Dhankhar conflict: ‘মাননীয়া হারের জ্বালা ভোলেননি…পাবলিকলি এমন কথা বলা যায় না’

Kolkata: বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এমন চরম আকার নিয়েছে, তা কার্যত নজিরবিহীন। প্রশাসনিক বৈঠকও বাদ যাচ্ছে না। সদ্যই টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

Suvendu Adhikari on Mamata-Dhankhar conflict: 'মাননীয়া হারের জ্বালা ভোলেননি...পাবলিকলি এমন কথা বলা যায় না'
শুভেন্দুর তোপ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 04, 2022 | 6:56 AM

কলকাতা:  নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চলছিল প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে আচমকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে (Purba Medinipore SP) প্রশ্ন ছুড়ে বসেন। রাজ্যপাল ফোন করে নির্দেশ দিচ্ছেন কি না, রাজনৈতিক চাপের মুখে কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন কি না, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরাসরি প্রশ্ন করেন পুলিশসুপার অমরনাথ কে-কে। একইসঙ্গে জানতে চান, কেন তাঁর জেলা থেকে এত অভিযোগ আসছে। কেনই বা পুলিশ প্রশাসন থাকতেও মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্যা মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। পুলিশ সুপারের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টই বলেন, তিনি বিষয়টি ভাল ভাবে দেখছেন না। রাজনৈতিক কোনও চাপ থাকলে তাঁকে নির্দ্বিধায় যেন পুলিশ সুপার জানিয়ে দেন। এদিকে, প্রশাসনিক বৈঠকে কোনও প্রশাসনিক অধিকর্তাকে কোনও সাংবিধানিক অধিকর্তার বিরুদ্ধে প্রশ্ন করা যায় কি না তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikri)।

বিজেপি বিধায়কের কথায়, “আসলে মাননীয়া এখনও নন্দীগ্রামে হারের জ্বালা ভুলতে পারেননি। ওঁ একজন আইপিএসকে পাবলিকলি জিজ্ঞেস করতে পারেন না তাঁকে রাজ্যপাল ফোন করেছেন কি না। আইএস, আইপিএসরা ডেপুটেশনে কাজ করেন। আগামী মার্চের শেষে কেন্দ্রীয় সরকার সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ম অনুযায়ী ট্রান্সফার অর্ডারের পোস্টিং নিয়ে নেবে। ভয় আতঙ্কে ভুগছেন ওঁ। ” এখানেই থামেননি শুভেন্দু। পুরসভা ভোট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে আদর্শ নির্বাচন বিধি চালু হয়ে গেলেও কেন প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইটে তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা।

বস্তুত,  প্রশাসনিক বৈঠকে, পুলিশসুপার অমরনাথ কে-কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তোমার জেলা সম্পর্কে আমি কিছু কিছু অভিযোগ পাচ্ছি। কাউকে কাউকে সাজিয়ে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। অনেকদিন তোমাদের বলেছে, তোমরা কিছু করোনি। তারপর আমি ইন্টারফেয়ার করেছি। শোনো যারা দাঙ্গা করে কোনও ধর্ম নেই তাদের। কোনও কোনও রাজনৈতিক নেতা ইন্ধন দেয়, তাই হয়। ”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে পুলিশসুপার অমরনাথ কে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই তদন্ত করেছি। ব্যবস্থাও নিয়েছি।” এরপরই পুলিশসুপার রীতিমতো হকচকিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তোমাকে কি গভর্নর ফোন টোন করেন? এটা করবে না, সেটা করবে না বলেন? জানি করলেও এখন তুমি বলবে না! তবে তোমার ওসব দেখার দরকার নেই। তুমি রাজ্য সরকারের কাজ করছ, ঠিক আছে? তুমি তোমার মতো কাজ করবে। তুমি খুব ভালভাবে কাজ করবে বলেই কিন্তু ওখানে দিয়েছিলাম। কিন্তু অভিযোগ পেলাম হলদিয়াতেও। বাধ্য হয়ে দু’জনকে অ্যারেস্ট করে সরাতে হল। ওরা কাজ করতে অসুবিধা করছিল এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিকে। এটা আমাকে কেন দেখতে হবে তোমরা থাকতে? তুমি নিজে দেখো এগুলো। তোমার যদি মনে হয় কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে রাজনৈতিক চাপের জন্য, আমাকে সরাসরি বলতে পার। কেউ তোমাদের বলে দেবে এটা করবে না, ওটা করবে না— তা শুনবে না।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এমন চরম আকার নিয়েছে, তা কার্যত নজিরবিহীন। প্রশাসনিক বৈঠকও বাদ যাচ্ছে না। সদ্যই টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অভিযোগ করেছেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় তাঁরই নামে ‘গালাগালি করে’ আবার তাঁকেই টুইটে ট্যাগ করেন। তাই বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করেন বলে জানান মমতা। তার পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যপালও। সেই সংঘাত কার্যত থামেনি। নেতাজি ইন্ডোর থেকে দলের সাংগঠনিক বৈঠকেও রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। এ বার প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যপাল-প্রসঙ্গ উত্থাপন করায় আরও বড় আকার নিতে পারে নবান্ন-রাজভবন সংঘাত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।

দেখুন বাঙালিয়ানা:

** বাঙালিয়ানার চর্চায় বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তন্ময় বোস, অজয় চক্রবর্তী

** বাঙালিয়ানার চর্চায় অতিথি শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার