Calcutta High Court: ‘তাড়াহুড়োয় মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা ঠিক নয়’, দম্পতির ফাঁসির সাজা কমিয়ে মন্তব্য হাইকোর্টের
Life Imprisonment: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার বেঞ্চ ওই মামলায় আরও জানিয়েছেন, মৃত্যদণ্ডের সাজা ঘোষণার আগে আদালতে যাতে দোষী ব্যক্তি তার মামলা উপস্থাপনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত এবং পর্যাপ্ত সুযোগ পান, সেই সুযোগ দিতে হবে আদালতকে।
কলকাতা: শিশু হত্যার মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যদণ্ডের (Death Sentence) সাজা পাওয়া এক দম্পতি, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলায় দোষীদের যাবজ্জীবন সাজার (Life Imprisonment) নির্দেশ দিয়েছে। ওই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, “দোষীকে তাঁর বক্তব্য ও স্বপক্ষের প্রামাণ্য নথি পেশ করার পর্যাপ্ত সুযোগ না দিয়ে তাড়াহুড়োর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে দেওয়া হলে, তা আসামিদের জন্য পরিপন্থী।” কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার বেঞ্চ ওই মামলায় আরও জানিয়েছেন, মৃত্যদণ্ডের সাজা ঘোষণার আগে আদালতে যাতে দোষী ব্যক্তি তার মামলা উপস্থাপনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত এবং পর্যাপ্ত সুযোগ পান, সেই সুযোগ দিতে হবে আদালতকে।
উল্লেখ্য, ১৪ বছর বয়সি এক কিশোরীকে খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন নিমাই সাসমল ও পূর্ণিমা সাসমল। ওই মৃতার সৎ মা পূর্ণিমা। এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলির আরামবাগ আদালতে ওই দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই দম্পতি।
জানা গিয়েছে নিমাই সাসমলের দুই মেয়ে দেবযানী ও কুমকুম। কুমকুম তার মামার বাড়িতে থাকত এবং দেবযানী থাকত নিমাই ও পূর্ণিমার সঙ্গে। নিমাইয়ের প্রথম স্ত্রী রেবা মারা যাওয়ার পর একটি জমি চলে গিয়েছিল দেবযানী ও কুমকুমের নামে। জানা গিয়েছে, ওই দম্পতি চাইছিল যাতে দেবযানী তার সৎ মা পূর্ণিমার নামে ওই জমি লিখে দেয়। কিন্তু তাতে রাজি ছিল না দেবযানী। সেই কারণে তাঁর উপর অত্যাচার চলত এবং সেই থেকেই দেবযানীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
হাইকোর্ট এই মামলার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, যা যা তথ্য উঠে এসেছে, তাতে এটি স্পষ্ট যে নিজেদের স্বপক্ষে যে যুক্তি অভিযুক্তরা জানাচ্ছেন, তাতে কোনও সারমর্ম নেই। তাই তাদের দোষী সাব্যস্ত করার যে নির্দেশ নিম্ন আদালত দিয়েছেন, সেটাই বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। কিন্তু মৃত্যুদণ্ডের যে সাজা নিম্ন আদালত ঘোষণা করেছিল, সেই বিষয়ে হাইকোর্ট জানিয়েছে, “আদালত আবেদনকারীদের শুধরানো ও পুনর্বাসনের কোনও সম্ভাবনা ছিল কি না এবং বিকল্প হিসেবে যাবজ্জীবনের সম্ভাবনা ছিল কি না তা খতিয়ে করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।”