কয়লাকাণ্ডে লালার বিরুদ্ধে আরও এক মামলা! কত দূর এগোল সিবিআই, জানতে চায় হাইকোর্ট
Coal Scam: বাংলা নির্বাচনের ঠিক আগে এ রাজ্যে সামনে আসে নতুন কেলেঙ্কারি। অবৈধভাবে কয়লা পাচার করে উঠত কোটি কোটি টাকা। আর সেই টাকা প্রভাবশালীদের অ্যাকাউন্টে যেত বলেও অভিযোগ ওঠে।
বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় বেআইনি কয়লা খনির অভিযোগে লালা ওরফে অনুপ মাজি-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এবার সেই মামলাকে ত্বরান্বিত করার পথে হাঁটছে আদালত। ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের থেকে পৃথক অভিযোগ পেয়ে সিবিআই তাদের ডেকে কথাবার্তা বলেছে। বিচারপতি দেবাংশু বসাক সিবিআইয়ের কাছে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে বাঁকুড়ার এই অভিযোগ নিয়ে তাদের অবস্থান জানাতে বলা হয়েছে সিবিআইকে। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে হাইকোর্টে।
১৯৯১ সালে বাঁকুড়ার মেজিয়ায় মাটির নিচে কয়লা খনির খোঁজ পাওয়া যায়। তারপর থেকে ইসিএলের মাধ্যমে কয়লা উত্তোলন শুরু হয় এই খনি এলাকায়। অভিযোগ, এরপরই এলাকায় শুরু হয় বেআইনি কয়লা উত্তোলন। অভিযোগ, স্থানীয়রা এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেন। বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে অভিযোগও জানান। এরপরই সেখানে বসানো হয় পুলিশ ক্যাম্প। সূত্রের খবর, এরপর কয়লা চুরির ক্ষেত্রে কিছুটা লাগাম পরানো গিয়েছিল।
কিন্তু ২০১৫ সালে তৎকালীন বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সেই ক্যাম্প তুলে দেন বলে আদালতে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তারপর থেকে দেদার বেআইনি কয়লা তোলা শুরু হয়। ফলে কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বাড়ি ঘরে ফাটল ধরতে থাকে। ২০১৭ সালে গ্রামবাসীরা হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই মামলায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি জেলাশাসককে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদতে কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ফের চলতি বছরের অগস্টে মামলা হয় হাইকোর্টে। এলাকায় ফের পুলিশ ক্যাম্প বসানো এবং সিবিআই তদন্ত চাওয়া হয়। সেই মামলাতেই তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে।
বাংলা নির্বাচনের ঠিক আগে এ রাজ্যে সামনে আসে নতুন কেলেঙ্কারি। অবৈধভাবে কয়লা পাচার করে উঠত কোটি কোটি টাকা। আর সেই টাকা প্রভাবশালীদের অ্যাকাউন্টে যেত বলেও অভিযোগ ওঠে। কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে একের পর এক নাম। আইএএস, আইপিএসদের মদত ছিল বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে অনুপ মাজি ওরফে লালা নামে এক কয়লা ব্যবসায়ীর নামও।
গত নভেম্বরে সিবিআই কয়লাকাণ্ডে মামলা দায়ের করে তদন্তে নামার পর চোখ কপালে ওঠে। গত ২৭ নভেম্বর কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তভার নেওয়ার পর থেকে লালাকে নোটিস পাঠায় সিবিআই। কিন্তু সে হাজিরা নিপুণভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর তাঁকে নাগালে পেতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যায় সিবিআই। জারি হয় লুকআউট নোটিসও। কিন্তু কোনও কিছুতেই কিছু হয়নি। এরইমধ্যে গত মার্চ মাস নাগাদ সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে জানায় এখনই লালাকে গ্রেফতার করা যাবে না। তবে সিবিআইকে তদন্তে সবরকম সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয় লালাকে। এরপর ৩০ মার্চ প্রথমবার সিবিআই দফতরে হাজির হন অনুপ মাজি ওরফে লালা। এরপর থেকে একাধিক বার নিজাম প্যালেসে গিয়েছেন তিনি। যদিও সিবিআই চাইছে লালাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে। অন্যদিকে লালাও দাবি করেছেন, তিনি কোনও ভাবেই এই ঘটনায় যুক্ত নন। আরও পড়ুন: CPIM: দলে ঐশী, মীনাক্ষিরা যথেষ্ট নয়, টার্গেট পূরণে ব্যর্থ সিপিএম!