Medical College Kolkata: মেডিক্যালের কর্মী আবাসনে গুলিকাণ্ডে গ্রেফতার পাঁচ
Kolkata Medical College: এই ঘটনায় ভিকি আলি নামে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে।
কলকাতা: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Medical College Kolkata) গ্রুপ-ডি কর্মীদের আবাসনচত্বর সমাজ বিরোধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপিকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মীরা। গ্রুপ ডি কর্মীদের বক্তব্য, সার্ভিস কোয়ার্টার সমাজবিরোধীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। সমাজবিরোধীদের জন্য কর্মীদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় এবার তা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এই ঘটনায় রবিবার চারজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে বউবাজার থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে। ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি জমায়েত, মারধর, গোলমাল পাকানোর অভিযোগের ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার দুপুরে। ইডেন হাসপাতাল রোডে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৫ নম্বর গেটের সামনে যে রাস্তা তার ধারেই রয়েছে হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ও গ্রুপ ডি স্টাফদের কোয়ার্টার। অভিযোগ, এদিন দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৫ নম্বর গেটের সামনে তুমুল হই হট্টগোল শুরু হয়। সোডার বোতল ছুড়তে থাকে একদল দুষ্কৃতী। এর পর বোমাবাজি, চার পাঁচ রাউন্ড গুলিও চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। স্টাফ কোয়ার্টারে থাকা আবাসিকরা জানান, একদল দুষ্কৃতী এখানে বেশ কয়েকদিন ধরেই দাপাদাপি শুরু করেছে। দিনের পর দিন ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন মহিলারা।
রবিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলকাতা মেডিক্যালের পাঁচ নম্বর গেট চত্বর। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় বউবাজার থানার পুলিশ। ডিসি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে হাজির হয়। নামানো হয় র্যাফও। চারজনকে ধরেও নিয়ে যায়। স্থানীয়রা অভিযোগ তোলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ, সমস্ত ক্ষেত্রেই একদল যুবক ঢুকে পড়ে। সব কিছুতেই ক্ষমতা কায়েমের চেষ্টা করেন তাঁরা। এদিকে অস্থায়ী কর্মীদের মানুষ ভুল বোঝেন।
রবিবার এক বৈঠকে আবাসনের লোকজন ঠিক করেন এর প্রতিবাদ করবেন। এরপরই দুপুর তিনটে সাড়ে তিনটে নাগাদ হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। স্টাফ কোয়ার্টারের এক বাসিন্দার কথায়, “আমাদের চুক্তি ভিত্তিক বা সরকারি কাজ করি এই হাসপাতালে। থাকি এই আবাসনেই। আমাদের এ নিয়ে দু’ তিনবার আমাদের উপর হামলা হল। বাইরে একটা ক্লাব বানিয়েছে। কতগুলো সমাজ বিরোধী সেখানে বসে থাকে। আমাদেরও কিছু ছেলে থাকে ওদের সঙ্গে। মেয়েরা বাইরে বের হলেই টোন টিটকিরি করতে থাকে। পরিবেশটা একেবারে নষ্ট। এখান দিয়ে কেউ যাতায়াত করার সাহস পায় না।”
এই ঘটনায় ভিকি আলি নামে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। অভিযোগ, ২০২০ সালে যখন করোনার বাড়বাড়ন্তের পর কলকাতা মেডিক্যালকে আলাদা করে করোনার হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়, সুপারস্পেশালিটি ভবনে চিকিৎসা শুরু হয়, সে সময় প্রচুর অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল সুষ্ঠু পরিষেবার স্বার্থে। সেই সময় ধীরে ধীরে ভিকি আলি অস্থায়ী কর্মীদের নেতা হয়ে ওঠেন বলে অভিযোগ। গোটা বিষয়টিই তিনি নিয়ন্ত্রণও করতে থাকেন বলেই অভিযোগ। রবিবার ভিকি আলি-সহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হয় প্রথমে। এর পর রাতভর দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় সোমবার।