‘আমার অলচিকিতে লেখা কবিতার বই বাচ্চাদের দিতে বলেছি, যাতে ওরা জানতে পারে’, ঝাড়গ্রামে বললেন মমতা
CM Mamata Banerjee: এদিন ঝাড়গ্রামের সভায় রাজ্য সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন বক্তব্য রাখার আগে মাদলের তালে তালে আদিবাসী শিল্পীদের সঙ্গে পা মেলান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরণে তখন আদিবাসীদের ঐতিহ্যমণ্ডিত পাঞ্চি শাড়ি। এরপরই ধামসাতে বোল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্যের শুরুতেই তুলে ধরেন জঙ্গমহলের সঙ্গে তিনি কতটা একাত্ম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “আদিবাসী সমাজের সকলে যে ভাবে এগিয়ে চলেছেন, আগামিদিনে আরও এগোবেন। আমি নিজেও অলচিকি লিপিতে বই লিখেছি। যে সমস্ত বাচ্চারা ভাল ফল করেছে এখানে, তাদের আমার লেখা একটা বই দিতে বলেছি। যাতে ওরা জানতে পারে।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঝাড়গ্রাম জেলার ৯৫ শতাংশ মানুষকে তাঁর সরকার কোনও না কোনও পরিষেবা দিয়েছে। ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হয়েছে তাঁর সরকারের আমলেই। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, সাধুরাম চাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, চারটি নতুন কলেজ হয়েছে জেলায়। ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকরণ, মাওবাদী হামলায় নিহত বা নিরুদ্দেশের পরিবারের একজনের চাকরি, লালগড় সেতু, জঙ্গল সেতু, স্পোর্টস কমপ্লেক্স —কার্পণ্য করেননি কোনও কিছুতেই। মমতা বলেন, “আমরা কথা রেখেছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু সমস্ত কিছু করা হয়েছে। আদিবাসীদের জন্য তফশিলি জাতি, তফশিলি উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় ইংরাজি মাধ্যম স্কুল করা হচ্ছে। ১০০টি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল হচ্ছে। অলচিকি ভাষায় পড়ানোর জন্য আরও ৫০০টা নতুন স্কুল তৈরি হচ্ছে। সেখানে দেড় হাজার প্যারা টিচার নিয়োগও হবে। ১১টি স্কুলে সাঁওতালি ভাষায় উচ্চ মাধ্যমিক পড়ানোর চেষ্টাও হচ্ছে।”
রাজ্যে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলে যে মাটি তৃণমূল তৈরি করেছিল, ২০১৯ সালে বিজেপি সেখানে গেরুয়া ঝড় তোলে। ঝাড়গ্রাম সংসদীয় এলাকা নিজেদের দখলে নেয় তারা। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জঙ্গলমহলের রাশ ধরেন। ভাঙা পায়েও ছুটে যান ভোটের আগে। আদিবাসীদের মন যে তিনিই বোঝেন, তা প্রমাণে একের পর এক প্রকল্পের ঘোষণা করেন। বিধানসভা ভোটে তার ফলও হাতেনাতে পায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, ঝাড়গ্রাম, শালবনি, বিনপুরে ঘাসফুলের রমরমা।
২০২৪-এর লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারে নামছে তৃণমূল। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য আরও একবার তা স্পষ্ট করে দিল। বক্তব্যের একেবারে শেষে এসে মমতার সেই আবেদন, “আপনাদের যদি কখনও সমস্যা হয় আমাকে বলবেন। আমি দেখে নেব। কিন্তু কেউ কখনও কোনওদিনও ভুল বুঝবেন না। আপনারা আমাদের অনেক আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা দিয়েছেন।” আরও পড়ুন: বাসের স্টিয়ারিংয়ে খোদ রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী! মহানগরে প্রথম সিএনজি বাস চালালেন ফিরহাদ