সরকারি স্কুলে হাজার হাজার টাকা ফি দেব কেন! শেষ পর্যন্ত যা করল স্কুল
School Fee: স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক জানান, তিনি ফুচকা বিক্রি করে সংসার চালান, স্কুলে ভর্তির দেড় হাজার টাকা দেওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর কোনও কথাই শুনতে নারাজ।
কলকাতা: সরকারি স্কুলের ফি মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকেরা! গয়না বন্দক দিয়ে টাকা জোগাড় করতে হচ্ছে! এমনই অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। অভিযোগ, সরকারি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দিতে হচ্ছে দেড় হাজার টাকা করে ফি, যা সরকার নির্ধারিত ফি-র থেকে অনেকটাই বেশি। পাঁশকুড়ায় ব্র্যাডলি বার্ড হাইস্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হন অভিভাবকরা। সেই খবর সম্প্রচারের তিন দিনের মধ্যেই টাকা ফেরৎ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
হাইস্কুলের ক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ডেভেলপমেন্ট বাবদ পড়ুয়াদের থেকে বছরে একবার সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা নেওয়া যাবে। যদি কোনও পড়ুয়া সেই ফি দিতে না পারে, তবে তার সেই ফি মকুব করার কথাও বলা আছে সরকারি নির্দেশিকায়। সেই সরকারি নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পাঁশকুড়া বার্লি পার্ট হাইস্কুলের ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক জানান, তিনি ফুচকা বিক্রি করে সংসার চালান, স্কুলে ভর্তির দেড় হাজার টাকা দেওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর কোনও কথাই শুনতে নারাজ। বাধ্য হয়ে হাতের পলা বিক্রি করে স্কুলের ফি মেটান ওই অভিভাবক।
পাশাপাশি, আর এক অভিভাবক জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষের তরফ থেকে টাকার পাশাপাশি চার বস্তা সিমেন্টও চাওয়া হয়েছে তাঁর কাছে। এই টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বিজেপির দাবি, স্কুলটির বোর্ড তৃণমূল পরিচালিত হওয়ায় বেআইনিভাবে টাকা তোলার একটি নতুন পন্থা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি TV9 বাংলায় সেই টাকা নেওয়ার খবর সম্প্রচারিত হয়। স্কুলের গরিব পড়ুয়াদের পরিবারের কথা তুলে ধরার তিন দিনের মাথায় আবারও পোস্টার পড়ল। ক্লাসে জানানো হয়েছে স্কুলের জন্য নেওয়া সামগ্রী বা টাকা ফেরত নিতে চাইলে, নিতে পারেন অভিভাবকরা।
প্রধান শিক্ষক দেবাশিস কামিল্লা বলেন, ছাত্রদের অনুষ্ঠান, সরস্বতী পুজোর মতো অনুষ্ঠানের জন্য খরচ নেওয়া হয়। তবে একসঙ্গে নিলে পড়ুয়াদের জন্য বোঝা হয়ে উঠছে। তাই ওই টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিনি জানান, সরস্বতী পুজো ছাড়া স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবসে ছাত্রদের টিফিন দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আলো, মিউজিকের জন্য খরচ হয়। সেই কারণে টাকা নেওয়া হয়।