Jadavpur University: ‘অন্ধকারে চলত মদ্যপান, আরও অনৈতিক…’, যাদবপুরকে ‘সোজা’ করার দাওয়াই জানালেন ‘হোক কলরব’ সময়ের উপাচার্য
Jadavpur University: বিভিন্ন মহল থেকে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে, বকলমে যাদবপুর চালায় যাদবপুরের বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন জুটা। সেই জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় আবার বকলমে দুষছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অব্যবস্থাকে’।
কলকাতা: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যু নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। রোজই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ক্যাম্পাসে। কখনও এসএফআই-আইসা বনাম তৃণমূল, কখনও আবার নকশালপন্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধছে বিজেপির। কিন্তু ছাত্রমৃত্যুর দায় কার? ঘোলা জলে মাছ ধরা শেষে উত্তর কি মিলবে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী অবশ্য এ ঘটনার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্তাকর্তাদের দিকে আঙুল তুলছেন। তাঁর আমলেই হয়েছিল সাড়া ফেলা ‘হোক কলরব’ আন্দোলন। সরতে হয়েছিল অভিজিৎবাবুকে। টিভি-৯ বাংলার বিশেষ অনুষ্ঠান ‘স্বপ্ন-মৃত্যু-রাজনীতি’-এ এসে তাঁর ‘অপসারণের’ পিছনে চক্রান্তের কথা বললেন এই পোড় খাওয়া অধ্যাপক। বাংলা বিভাগের প্রথমবর্ষের ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর জন্য আঙুল তুললেন ‘জেইউ অথরিটির’ দিকে।
সাফ বললেন, “আমি উপাচার্য থাকার সময় যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছিলাম সেগুলি পুরোপুরি ইউজিসির নির্দেশ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, তার আগে রাঘবন কমিটির সাজেশন, কলকাতা হাইকোর্টের অন্তর্বতী নির্দেশ মেনেই নিয়েছিলাম। সেগুলি যদি অক্ষরে অক্ষরে আজও পালন করা হত তাহলে আজকে এই দিন দেখতে হত না। এই নির্দেশগুলিকে যাঁরা বন্ধ করেছেন বা কর্তৃপক্ষকে বন্ধ করতে বাধ্য করেছেন, এই মৃত্যুর জন্য আমি তাঁদেরও দায়ী করব। কর্তৃপক্ষ কোন চাপের কাছে কেন মাথানত করল, কেন গেটে নজরদারি উঠে গেল এ বিষয়ে তদন্ত করা দরকার।” তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত ছাত্র নেতা ও একাংশের অধ্যাপকের দিকে।
এদিকে বিভিন্ন মহল থেকে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে, বকলমে যাদবপুর চালায় যাদবপুরের বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন জুটা। সেই জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় আবার বকলমে দুষছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অব্যবস্থাকে’। তিনি বলছেন, “ইসি, কোর্ট, ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলে নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তবেই শিক্ষকরা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অংশ হয়। কিন্তু, ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। ছাত্র নেই, স্কলাররা নেই, শিক্ষকরা নেই।”
অন্যদিকে অভিজিৎবাবু কিন্তু বলছেন, তিনি যা যা করতে চেয়েছিলেন সবটাই ছাত্র স্বার্থে। স্পষ্ট বললেন, “বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢোকা আটকাতে চেয়েছিলাম। সেই জন্যই সিসিটিভি থাকুক আমি চেয়েছিলাম। যাদবপুরে গিয়ে দেখেছিলাম সন্ধ্যার পর গোটা ক্যাম্পাস গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকে। অন্ধকারে বসে বহু ছাত্র, বহিরাগত মদ্যপান করত, নানারকম অনৈতিক কাজ করত। সেই জায়গাটা আমি আটকে ছিলাম। তাই ফ্লাড লাইট দিয়ে ক্যাম্পাস ভরিয়ে দিয়েছিলাম। আমি নিজে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে টহল দিতাম। ঝিলপাড়কে আমি পুরো ঘিরে দিয়েছিলাম। শিক্ষকরাও আমাকে সমর্থন জানিয়েছিল, ছাত্ররাও কিছু বলেনি।” তারপরও সরতে হল কেন? এখানেই তিনি আবার তুলছেন ‘চক্রান্তের’ তত্ত্ব।
যাদবপুরের এই ‘বিতর্কিত’ উপাচার্য বলছেন, “ওই সময় একটা মেকি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে ঘেরাও করা হয়। ঘেরাওয়ের দিন আমার কাছে খবর আসে বাইরে থেকে বেশ কিছু লোক ঢুকেছে। তাঁদের আছে রড আছে। তখন ইসি চলছিল। আমি ইসিকে জানাই। আলোচনা হয় এটা নিয়ে। তখনই সর্বসম্মতিক্রমে পুলিশ ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুলিশ আসে। কিন্তু, পুলিশ তো আমার নিয়ন্ত্রণে নয়, তারা কীভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেদিন পুলিশ যা করেছিল সেটা নিয়ে আন্দোলন নয়। সেটাই পরে হোক কলরব নাম দেওয়া হয়। এর পিছনে কোনও চক্রান্ত থাকতে পারে বলে মনে হয়। পিছনে যাই থাকুক না কেন আমি সরে যাওয়ার পরেই নজরদারির ওই মেকানিজমটা উঠে যায়। তাই ওই ঘটনায় যাঁরা মদত দিয়েছিলেন তাঁরা অপরাধী বলে আমি মনে করি।”