Organ Donation in Kolkata: মাত্র ৪৩ বছর বয়সে থেমে গেলেন সংযুক্তা, তাঁর মৃত্যুর পরও ‘জীবনের আলো’ দেখলেন অনেকে
Organ Donation in Kolkata: এত কম বয়সে কীভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন চিকিৎসক, ব্যাখ্যা খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরাও।
কলকাতা : পেশাদারিত্বের সঙ্গে দিনের পর দিন কাজ করেছেন তিনি। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে থাকা রোগীর চিকিৎসায় হাত লাগিয়েছেন দক্ষতার সঙ্গে। প্রাণবন্ত সেই মহিলা চিকিৎসক যে আর নেই, সেটা মেনে নিতে পারছেন না সহকর্মীরা। কিন্তু পরিবার বাঁচিয়ে রাখল সংযুক্তাকে। সাত বছরের শিশুকন্যাকে রেখে মঙ্গলবার সকালে চলে গিয়েছেন ৪৩ বছরের চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়। তাঁর অঙ্গের মাধ্যমেই তাঁকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখার চেষ্টা করেছে পরিবার। বুধবারই সেই অঙ্গদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
মুমূর্ষু রোগীদের বাঁচিয়ে তোলাই ছিল সংযুক্তার ব্রত। পরিবারের ইচ্ছায় মৃত্যুর পরও সেই অঙ্গীকারই অটুট রাখতে পারলেন সংযুক্তা। পেশায় অ্যানাস্থেসিস্ট সংযুক্তা গত শনিবার নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সল্টলেকের দত্তাবাদ সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শহরের একাধিক হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। মৃত্যুর হাত থেকে বহু মানুষকে ফিরিয়ে এনেছেন সংযুক্তা। কিন্তু নিজে আর ফিরতে পারেননি।
মঙ্গলবার সকালে তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আর সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মা’কে হারায় সংযুক্তার সাত বছরের শিশুকন্যা। এখানেই সবকিছু থেমে যেতে পারত। কিন্তু সংযুক্তার পরিজনেরা তা হতে দেননি। মৃত্যুর পরও সংযুক্তাকে অনেকের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় সংযুক্তার হৃৎপিণ্ড দান করা যায়নি। তবে লিভার পেয়েছেন অ্যাপেলোয় চিকিৎসাধীন ৬১ বছরের এক বৃদ্ধ। একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হবে এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ৪৫ বছরের এক ব্যক্তির দেহে। আর একটি কিডনি পাচ্ছেন দমদমের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জামশেদপুরের বাসিন্দা এক তরুণী। এ ছাড়া চোখের কর্নিয়া শহরের একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে সংরক্ষিত করে রাখা হবে।
এমন এক সহকর্মীকে হারানোর শোক ভুলতে পারছেন না অনেকেই। তবে মৃত্যুতেও অন্যের যন্ত্রণায় সহমর্মী হওয়ার অঙ্গীকারকে স্যালুট জানাচ্ছে চিকিৎসক সমাজ। অ্যাপেলোর চিকিৎসক শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায জানান, অত্যন্ত সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ছিলেন সংযুক্তা। তাঁর এই বয়সে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তিনি জানান, অল্প বয়সে অনেকেরই এই ধরনের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হচ্ছে। সংযুক্তার যা বয়স তাতে স্বাস্থ্য সচেতনতার কথাই বা কী বলবেন তা বুঝতে পারছেন না চিকিৎসক। তবে পরিবার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে সমর্থন করছেন তিনি।