One Person One Post: ‘কে ঠিক বলছেন দিদি না ববি?’ নেত্রী বললে তবেই মানবেন দেবাংশু-সুদীপরা!
One Person One Post: দলের স্বার্থে এই ধরনের পোস্ট নয়। দল এটাকে অনুমোদন দিচ্ছে না। এমনটাই বলেছেন ফিরহাদ হাকিম। তারপরও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সেই পোস্ট সরাননি যুব নেতারা।
কলকাতা : অন্তর্দ্বন্দ্বের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এবার আগুন একেবারে প্রকাশ্যে। সূক্ষ চিড় গত ২ -১ দিনের মধ্যে বড়সড় ফাটলের চেহারা নিয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ববি হাকিম বিতর্কে জল ঢালতে ময়দানে নামলেও খুব একটা সুরাহা হয়নি। এখনও একাধিক নেতার ওয়ালে শোভা পাচ্ছে ওয়ান পার্সন, ওয়ান পোস্ট-এর সমর্থনে পোস্ট। মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, দল এই ধরনের পোস্ট সমর্থন করছে না। তিনি বার্তা দেওয়ার পরও সেই সব পোস্ট সরল না সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। যুব নেতাদের মুখে পাল্টা দাবি, ‘নেত্রী বললে তবেই মানব।’ প্রথমে দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya) ও পরে আর এক যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ রাহাকে একই দাবি করতে দেখা গেল।
‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ বিতর্ক
বিধানসভা নির্বাচনের পরই দলের অন্দরে এই ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু, কলকাতার পুরভোটে মান্যতা পায়নি সেই নীতি। যার অন্যতম উদাহরণ খোদ মেয়র ববি হাকিম। বিধায়ক তথা মন্ত্রী হওয়ার পরও পুরভোটে টিকিট পেয়েছেন তিনি। জিতে মেয়রও হয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি’ কি তাহলে রইল না?
আর এবার সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ সেই নীতির সমর্থনে। বৃহস্পতিবার থেকে দেখা যাচ্ছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের একাধিক সদস্যের ওয়ালে সেই পোস্ট। যাতে লেখা ‘আই সাপোর্ট ওয়ান পার্সন, ওয়ান পোস্ট’। ক্রমে যুব নেতাদের ওয়ালেও ছড়িয়ে পড়ে সেই পোস্ট। যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য ও সুদীপ রাহাও নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সেই বার্তা।
বার্তা দিয়েছেন ফিরহাদ
‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির প্রশ্ন উঠলে যাঁর দিকে আঙুল ওঠে, শুক্রবার এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন সেই ববি হাকিম। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, দলে সেই সিদ্ধান্তই মানা হবে। তাই এই ধরনের পোস্টের অনুমোদন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দেয় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আজ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ক্যাম্পেন হচ্ছে।’ দলের স্বার্থে এই ধরনের পোস্ট নয়, দল এটাকে অনুমোদন দিচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পাল্টা তোপ সুদীপ, দেবাংশুদের
দলের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় নেতা ফিরহাদ হাকিম বার্তা দেওয়ার পরও অনড় যুব নেতারা। তাঁদের দাবি, নেত্রী অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললে তবেই তাঁরা মানবেন।
এই বিষয়ে Tv9 বাংলাকে দেবাংশু ভট্টাচার্য জানান, ববি হাকিম ঠিকই বলেছেন। দলনেত্রীর কথাই শিরোধার্য। আর তিনি মনে করেন, দলনেত্রীই এই ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির কথা বলেছিলেন। তাই নেত্রী যদি সেই নীতি থেকে সরে আসেন, তবেই তাঁরা মেনে নেবেন। দেবাংশু বলেন, ‘ওনার তরফ থেকে শুনতে চাই। নেত্রী বলেছিলেন, নেত্রী যদি বলেন তিনি চান না, তবে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’
একই মত, সুদীপ রাহারও। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি, কে ঠিক বলছেন, দিদি নাকি ববি হাকিম।’ তাঁর দাবি, দল যে এক ব্যক্তি, এক পদ নীতিতে চলবে, সে কথা নেত্রীকেই বলতে শুনেছেন তিনি।
ফিরহাদ যখন দাবি করেছেন তিনি দলনেত্রীর অনুমোদন নিয়েই বার্তা দিচ্ছেন, তারপরও যুব নেতারা কী ভাবে পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন, সেটাই ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।