Posta: পোড়া মোবিলে কালোজিরে পালিশ করে পোস্তায় রমরমা ব্যবসা, ইবি-র জালে পাঁচ অভিযুক্ত
Kolkata: ধনেগুঁড়োয় মেশানো হত ক্ষতিকারক হলুদ রং ও অন্যান্য রাসায়নিক।
কলকাতা: কখনও কালো জিরে চকচকে করতে পোড়া মোবিলের পালিশ, কখনও আবার ধনেগুঁড়োর রং আকর্শনীয় করে তুলতে নিম্নমানের রাসায়নিক ব্যবহার, ভেজাল মশলার রমরমা ব্যবসা চলত এভাবেই। তাও খোদ পোস্তার মত বাজারে।
কিছুদিন আগে বাজেয়াপ্ত হওয়া বিপুল পরিমাণ মশলায় নমুনা পরীক্ষার চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের হাতে আসে। এরপরই বড়বাজারে হানা নিয়ে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল গোয়েন্দারা। ধৃতদের মঙ্গলবার আদালতে তোলা হয়। তবে এই একই কাজে জড়িত আরও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম উঠে এসেছে তদন্তে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আর কোন কোন জায়গায় এই ভেজাল মশলা যেত সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধেয় পোস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নাম সত্যরঞ্জন বিশ্বাস এবং মদন প্রসাদ। এরমধ্যে দ্বিতীয়জন পেশায় লরিচালক। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই রাতেই একই এলাকায় আবারও হানা দেন গোয়েন্দারা। সেই অভিযানে ইন্দ্রজিৎ সরকার, বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল, অমৃতলাল সরকার নামে আরও তিন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই মশলায় ভেজাল মেশানোর অভিযোগ রয়েছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলার নাজিরপুর থেকে নিম্নমানের এবং রাসায়নক মেশানো এই মশলা নিয়ে আসা হত পোস্তার মশলা বাজারে বিক্রি করার জন্য। সেখানকার একাধিক ব্যবসায়ীরা এই ভেজাল মশলাই মজুত করে বাজারের অন্যত্র সরবরাহ করত। প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত লাভের আশায় দীর্ঘদিন যাবৎ এই নিম্নমানের মশলা কেনা-বেচার কারবার চালাচ্ছিল অভিযুক্তরা।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসের শুরুতে ইবি-র গোয়েন্দাদের কাছে গোপন সূত্রে ভেজাল মশলার রমরমা ব্যবসার খবর আসে। তার ভিত্তিতে পোস্তা এলাকায় অভিযান চালায় গোয়েন্দারা। তাতেই প্রায় ২২২টি বস্তা কালোজিরা এবং ৫৫টি বস্তা ধনেগুঁড়ো বাজেয়াপ্ত করে কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। এরপর বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই মশলার নমুনা পাঠানো হয়, গুণমান পরীক্ষার জন্য। সম্প্রতি সেই রিপোর্টে হাতে আসার পরই কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় গোয়েন্দাদেরও।
দেখা যায়, কালোজিরা চকচকে ও আকর্ষনীয় করতে পোড়া মোবিল দিয়ে পালিশ করা হত বাজরজাত হওয়ার আগে। ধনেগুঁড়োয় মেশানো হত ক্ষতিকারক হলুদ রং ও অন্যান্য রাসায়নিক। যা মানবশরীরের জন্য চুড়ান্ত ক্ষতিকারক। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সোমবার রাতভর চলে অভিযান।