Stray Dog: লালি, বুলেট, ধিঙ্গি-রা থাকবে কোথায়? ১৫০ সন্তানের জন্য আশ্রয় খুঁজছেন নিউ আলিপুরের ‘গার্গীদি’
Stray Dog: ওই প্রাণীদের খাওয়াতে লাগে ১৫ কেজি চাল, ৬ কেজি মাংস, ৪ কেজি মাছ। এছাড়াও রয়েছে ওষুধ। গার্গী তাঁর বেতনের ৮০ শতাংশই খরচ করেন এই প্রাণীদের খাওয়াতে। এমনকী কঠিন রোগে আক্রান্ত কুকুর বা বিড়ালদের খাওয়াতে কখনও কখনও ঋণও নিতে হয়েছে তাঁকে।
কলকাতা: দেওয়ালের রঙ চটেছে। পুরনো কাঠের দরজা, স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের ভিতর পাতা একটা ছোট খাট। আর তার মধ্যেই বাস তাঁর ‘সন্তান’দের। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা গার্গী সেনকে ‘গার্গী দি’ বলেই ডাকেন এলাকা মানুষজন। নিজের বাড়ি ছেড়েছেন প্রায় ১০ বছর আগে। কলকাতার নিউ আলিপুরের একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি ও তাঁর সন্তানেরা। কারও নাম ধিঙ্গি, কারও নাম বুলেট। তাঁদের জন্য কার্যত নিজের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন গার্গী। একজন, দুজন নয়, তাঁর এমন ‘সন্তানে’র সংখ্যা অন্তত ১৫০ জন।
স্কুলে কর্মশিক্ষার পাঠ দেন তিনি। ছোট থেকেই রাস্তার কুকুর, বিড়াল, পাখিদের প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল অফুরন্ত। তবে তাঁর জীবনটা একেবারে বদলে দিয়েছিল রাস্তার এক বিড়াল ‘এশা’। তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন গার্গী। তারপর কখন যে সেই সংখ্যাটা ১০০ পেরিয়ে গিয়েছে, তা বুঝতে পারেননি তিনি নিজেও। আজ ১৫০ প্রাণীর খাওয়া, থাকা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ওই প্রাণীদের খাওয়াতে লাগে ১৫ কেজি চাল, ৬ কেজি মাংস, ৪ কেজি মাছ। এছাড়াও রয়েছে ওষুধ। গার্গী তাঁর বেতনের ৮০ শতাংশই খরচ করেন এই প্রাণীদের খাওয়াতে। এমনকী কঠিন রোগে আক্রান্ত কুকুর বা বিড়ালদের খাওয়াতে কখনও কখনও ঋণও নিতে হয়েছে তাঁকে।
বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব এসেছে একাধিকবার। কিন্তু প্রত্যেকবারই সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি বলে থাকেন, ‘ওরা আমার সন্তান। আমি ওদের জন্য কারও কাছ থেকে টাকা নেব না।’
তবে এখন তাঁর বয়স ৫৫। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তানদের জন্য চিন্তা বাড়ছে তাঁর। তিনি এখন ভাবছেন, তিনি না থাকলে তাঁর সন্তানরা কোথায় যাবেন? কোথায় থাকবেন ধীমান, লালি, বুলেট, আঁখি, ধিঙ্গি, শ্যামা, তাইওয়া, দোলোরা? তিনি চাইছেন, ওদের একটা আশ্রয়ের ব্যবস্থা হোক, যেখানে তাদের যত্ন করা হবে। বর্তমানে পাড়ার প্রায় সব কুকুর-বিড়ালকেই খাওয়ান তিনি। স্কুলে ব্যস্ত থাকলেও যাতে ওদের কোনও অযত্ন না হয়, সেই খেয়ালও রেখেছেন গার্গী।