Summer in Bengal: নজির ভেঙে ফেব্রুয়ারিতেই ৪০! মোদীর রাজ্যের ‘তাপপ্রবাহে’ কি বাংলারও ভয়?
Weather: শুধু ভুজ নয়, গুজরাত-রাজস্থান-মহারাষ্ট্রের একাধিক জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে। গুজরাতের আহমেদাবাদ, মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজ- দুই জায়গাতেই তাপমাত্রা উঠেছে ৩৭.৫ ডিগ্রিতে।
শীত-শেষে গরম পড়বে, এটাই নিয়ম। তাই বলে ফাল্গুনেই বৈশাখের রক্তচক্ষু! প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে লাগামছাড়া পারদ। মাঝ-ফেব্রুয়ারিতেই তাপমাত্রা উঠে গেল চল্লিশের উপরে। বৃহস্পতিবার গুজরাতের ভুজে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রেকর্ডই বটে। ফেব্রুয়ারিতে চল্লিশ-পার, ভুজে এমন কখনও হয়নি আগে। দেশেও আদৌ হয়েছে কি না, তথ্য ঘাঁটছেন আবহবিদরা। কথায় বলে, মর্নিং শোজ দ্য ডে। প্রবাদ সত্যি হলে গ্রীষ্মে কী হবে, ভাবলেই শিউরে ওঠার জোগাড়। শুধু ভুজ নয়, গুজরাত-রাজস্থান-মহারাষ্ট্রের একাধিক জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে। গুজরাতের আহমেদাবাদ, মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজ- দুই জায়গাতেই তাপমাত্রা উঠেছে ৩৭.৫ ডিগ্রিতে। সবচেয়ে বড় কথা, পারদের লাফ হচ্ছে একেবারে অতর্কিতে। বৃহস্পতিবারও ভুজের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তাপমাত্রাই দুপুরে বেড়ে দাঁড়ায় ৪০.৩ ডিগ্রি। অর্থাত্ কয়েক ঘণ্টার ফারাকে প্রায় ২৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি।
অথচ, এই সময় ভুজের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার কথা ৩০ ডিগ্রির আশপাশে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চল্লিশের উপরে উঠলে, স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি বেশি হলে তাপপ্রবাহের তকমা দেন আবহবিদরা। গ্রীষ্ম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিই জোড়া শর্ত পূরণ হয়ে গেল। নয়াদিল্লি মৌসম ভবনের আবহবিদ রাজেন্দ্র জেনামণি বলছেন, “গত বছর মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে গুজরাতের তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি পেরিয়েছিল। সেই তুলনায় এ বার একমাস আগেই এত গরম পড়ে গেল।”
কেন এমন লাগামছাড়া গরম?
খলনায়ক উচ্চচাপ বলয়। আবহবিদ অক্ষয় দেওরাসের কথায়, “আরব সাগর ও লাগোয়া গুজরাতের উপর একটি উচ্চচাপ বলয় রয়েছে। সেটিই উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ভারতে গরম হাওয়া টেনে আনছে। তাছাড়া, গত কয়েকদিনে দেশের সমতলে শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব পড়েনি। তাই হঠাত্ করেই এত গরম পড়ে গিয়েছে।”
মোদীর রাজ্যের ‘তাপপ্রবাহে’ কি বাংলারও ভয়?
এখনই তেমন আশঙ্কা দেখছে না আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে এ বার ঋতুর চাকা গড়ানো শুরু হয়ে যাবে। মৌসম ভবনের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “শনিবারের পর থেকে তাপমাত্রা বেড়েই চলবে। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে ২০-২১ ডিগ্রিতে পৌঁছে যাবে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির আশপাশে পৌঁছে যেতে পারে। জেলায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেশি থাকার সম্ভাবনা।” পূর্বাভাসের যা নির্যাস, কলকাতা ও লাগোয়া জেলায় শীতে পাকাপাকি ইতি পড়ে গেল। পশ্চিমাঞ্চলে রাতে হালকা ঠান্ডার আমেজ থাকতে পারে, তবে সেটাও সাময়িক।
দেশের উত্তর-পশ্চিমেও শীতে ইতি পড়ে যাবে?
মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলছেন, “আপাতত দিনকয়েক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরেই থাকবে। পরে আবার তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। যদিও সমতলে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা আর দেখা যাচ্ছে না।” অক্ষয়ের আভাস, “আরব সাগরের উচ্চচাপ বলয় ধীরে ধীরে দুর্বল হবে। দিন কয়েক পর একটি দুর্বল ঝঞ্ঝা আসতে পারে। পাহাড়ে তার প্রভাব পড়বে। তখন তাপমাত্রা আবার কিছুটা কমবে বলেই মনে হচ্ছে।” ফাল্গুনী-উষ্ণতার দাপট সাময়িক হলেই মঙ্গল। গ্রীষ্মে কী হবে, সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।