Firhad Hakim: ‘পারছি না…আমি ক্ষমাপ্রার্থী’, কেন অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করা যাচ্ছে না? মেয়রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে কথার ভাঁজে বলেই ফেললেন ফিরহাদ
Firhad Hakim: ফিরহাদ হাকিম স্বীকার করে নিয়েছেন, "আমরা এখনও একশো শতাংশ অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে পারছি না, এটা ঠিক। এর আগেও এমন ঘটনা কলকাতায় হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক আমার সময়েও হল।"
কলকাতা: “এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আর আমি এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।” গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বিল্ডিং ভেঙে ৯ জনের মৃত্যুর পর ক্ষমা চাইলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বিল্ডিং ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এখনও ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভার নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিস্তর। ঘটনার পরই পুর আধিকারিকদের কাঠগড়ায় তুলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু TV9 বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে মেয়র স্বীকার করলেন ভুল। তিনি বললেন, “আমাকে ডিপেন্ড করতে হয় মানুষের ওপর। সবাই অ্যাক্টিভলি কাজ করছে বলে মনে হয় না।” সঙ্গে এও বললেন, “কিছু কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁরা পাঁচিল তুলতে গেলে, রঙ করতে গেলে টাকা নেন। আবার বেশিরভাগই কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁরা এসবের মধ্যে থাকেন না।”
গার্ডেন রিচে একাধিক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। টনক নড়েছে প্রশাসনেরও। এলাকার কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীরা। তবে ঘটনার পরই দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মেয়র দায় ঠেলেছিলেন বামেদের দিকে। ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও বেআইনি নির্মাণের জন্য বাম আমলকেই দোষারোপ করেছিলেন মেয়র। সঙ্গে দাবি করেছিলেন, এর দায় পুরকর্তাদের। কাউন্সিলরকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন তিনি। TV9 বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে ফিরহাদ অবশ্য এও দাবি করেছেন, কিছু কাউন্সিলর পাঁচিল তুলতে টাকা নিলেও বাকিরা এরকম নন।
ফিরহাদ হাকিম স্বীকার করে নিয়েছেন, “আমরা এখনও একশো শতাংশ অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে পারছি না, এটা ঠিক। এর আগেও এমন ঘটনা কলকাতায় হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক আমার সময়েও হল।”
মেয়র বলেন, “আমি অবৈধ নির্মাণ অনেকটা আটকেছি। পুকুর বোঝাই আটকাচ্ছি। কোথায় কটা পুকুর রয়েছে ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছি।” বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে বাম আমলকেই দায়ী করলেন। ফিরহাদ বললেন, “বেশিরভাগ বেআইনি নির্মাণ বাম আমলেই হয়েছে। তবে এখনও সমস্যা হচ্ছে, ওই এলাকায় গরিব মানুষ ঢুকে গিয়েছেন। অল্প পয়সার ফ্ল্যাট কিনে রয়েছে। এখন উচ্ছেদটাও সমস্যার হয়ে গিয়েছে। গরিবমানুষগুলো অল্প টাকায় ঘর কিনে রয়েছে। আমি তাই আমার বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টকে বলি, যখন শুরু হচ্ছে, তখনই অ্যাকশন নিন।”
TV 9 বাংলার একান্ত সাক্ষাৎকারে আবারও ফিরহাদ বলেন. “কলকাতা পৌরসভার এক একজন কাউন্সিলরের এরিয়া যত বড় থাকে, তাঁর পক্ষে প্রত্যেক এলাকায় যাওয়া সম্ভব হয় না। কোন বাড়ি বৈধ, কোনটা অবৈধ, সেটা কাউন্সিলর দেখবে না। আর তাঁর রাইটও নেই প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করবে। কারণ কোনটা অবৈধ নির্মাণ সেটা খতিয়ে দেখা প্রশাসনিক কাজ। এক একটা এলাকায় ৫০ হাজার লোকের প্রতিনিধি কাউন্সিলর। কাউন্সিলরের কাজ, কোন এলাকায় জল নেই, কোন এলাকায় লাইট নেই, ড্রেনেজ সিস্টেম খারাপ, সেটা দেখা। অবৈধ নির্মাণ দেখা কাউন্সিলরের কাজ নয়। ”
গার্ডেনরিচের ঘটনার পর ওই এলাকারই কাউন্সিলর শামসও অবশ্য একই দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, “কোথায় কে অবৈধ নির্মাণ করছেন, সেটা দেখা আমার কাজ নয় যে কে কোথায় অবৈধভাবে বাড়ি করছে। কলকাতা পুরনিগমের একটা টিম রয়েছে। তারা দেখবে কোথায় কী অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে।”